সোমবার, ১১ আগস্ট, ২০২৫  |   ২৮ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ১১ আগস্ট ২০২৫, ০০:০৯

হাজীগঞ্জে আড়াই কিলোমিটার মাটির সড়কে জনদুর্ভোগ চরমে

হাজীগঞ্জে আড়াই কিলোমিটার মাটির সড়কে জনদুর্ভোগ চরমে
কামরুজ্জামান টুটুল

মাটির তৈরি রাস্তার দৈর্ঘ্য মাত্র আড়াই কিলোমিটার। অতিবৃষ্টির কারণে এই আড়াই কিলোমিটার সড়ক ব্যবহারকারী কয়েকটি গ্রামের জনসাধারণের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। হাজীগঞ্জের বাকিলা ইউনিয়নের খলাপাড়া-ফুলছোঁয়া-সিদলা গ্রামের ওপর দিয়ে চলে যাওয়া সড়কটি যেনো এলাকাবাসীর মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। শুষ্ক মৌসুমে যাই হোক, বর্ষা মৌসুমে এটির বেহাল দশা হয়ে পড়ে। যে কারণে স্থানীয়রা চলাচল করে আর সংশ্লিষ্টদের গালমন্দ করে।

তবে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিলন বলছেন, গর্তগুলো ইটের খোয়া দিয়ে সংস্কারের ব্যবস্থা করা হয়েছে আরো আগে, কিন্তু অতিবৃষ্টির কারণে ট্রাক ঢোকানো সম্ভব হচ্ছে না।

সরজমিনে দেখা যায়, বাকিলা বাজার সংলগ্ন খলাপাড়া-ফুলছোঁয়া-কালচোঁ দক্ষিণ ইউনিয়নের সিদলা গ্রামের সংযোগ সড়কটি সৃষ্টি থেকে মাটির রাস্তাই রয়ে গেছে। এ সড়ক ধরে প্রতিদিন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, রোগীসহ অন্তত ৫টি গ্রামের সর্বসাধারণ চলাচল করে। কেননা সহজ ও সংক্ষিপ্ত পথ এ সড়কটি। বর্ষা মৌসুমে খানাখন্দ আর কাদায় যান চলাচলের প্রায় অনুপযোগী হয়ে পড়ায় এই দুর্ভোগ আরও প্রকট আকার ধারণ করছে। বৃষ্টি হলেই সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। ফলে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। স্থানীয়রা রাস্তাটি পাকাকরণের জন্যে বারবার তাগাদা দিলেও কেউ এগিয়ে আসেনি।

ফুলছোঁয়া গ্রামের তাজুল ইসলাম জানান, সড়কটির বিভিন্ন জায়গায় খানাখন্দে ভরা। এর মধ্যে বর্ষার শুরু থেকে আজ পর্যন্ত কাদা ও জলাবদ্ধ অবস্থায় পড়ে আছে। অবস্থা এমন যে, বৃষ্টি হলে হেঁটে চলারও সুযোগ থাকে না। বিকল্প কোনো পথ না থাকায় অবর্ণনীয় ভোগান্তি নিয়ে এ সড়ক দিয়েই আমাদের চলাচল করতে হয়।

দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ুয়া সিদলা গ্রামের শিক্ষার্থী নাদিয়া আক্তার জানান, বর্ষায় কাদায় পিচ্ছিল ও খানাখন্দের কারণে সিএনজি অটোরিকশা ও অটোবাইক চলাচল না করার কারণে পায়ে হেঁটে কলেজে যেতে হয়।

খলাপাড়া গ্রামের সত্তরোর্ধ্ব আব্দুল আজিজ জানান, মৃত্যুর আগে রাস্তাটি পাকা দেখে যেতে চাই। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, আমরা যে কষ্ট পাচ্ছি, এমন কষ্ট যেনো আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম না পায়।

এ বিষয়ে বাকিলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিলন বলেন, ব্যক্তিগত ও ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে প্রায় সময় খানাখন্দ ভরাট করে দেই। এ বছর ব্রীক ফিল্ড (ইটভাটা) থেকে ভাঙ্গা ইট ও সুরকি পাওয়াটা একটু কঠিন হয়ে গেছে। অর্থাৎ সময়মতো পাচ্ছি না। তাই খানাখন্দ ভরাট করতে একটু দেরি হচ্ছে।

সম্প্রতি এক অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, এ অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। একটি পক্ষ আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা কথা রটিয়েছে। যার প্রমাণ তারা দিতে পারবে না। এই রাস্তাটিসহ ইউনিয়নের একাধিক কাঁচা রাস্তা রয়েছে, যা পাকাকরণের জন্যে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ইঞ্জিনিয়ার অফিসে তালিকা দেয়া আছে। আমি ইঞ্জিনিয়ারের সাথে কথা বলেছি। তিনি জানিয়েছেন, বরাদ্দ এলেই কাজ হবে।

উপজেলা প্রকৌশলী মো. আজিজুল হক বলেন, বর্তমানে যেসব রাস্তা বিবিজির তালিকায় রয়েছে, সেসব রাস্তা টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কাজ করা হচ্ছে। আর এই রাস্তাটির আইডি নম্বর আছে, তবে বিবিজির তালিকায় নেই। ভবিষ্যতে বিবিজির তালিকায় অন্তর্ভুক্তকরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ এবং বরাদ্দ পেলে কাজ করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইবনে আল জায়েদ হোসেন চাঁদপুর কণ্ঠকে বলেন, বিষয়টি নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে কথা হয়েছে। রাস্তাটি চলাচলের উপযোগী এবং পাকাকরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়