প্রকাশ : ২৮ মে ২০২৩, ২১:৩৬
চাঁদপুরে বঙ্গবন্ধুর ‘জুলিও কুরি শান্তি পদক’ প্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন
বঙ্গবন্ধু ছিলেন বিশ্ব শান্তির বার্তাবাহক : জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জুলিও কুরি শান্তি পদক প্রাপ্তির ৫০ বছরপূর্তি উদ্যাপন করেছে চাঁদপুর জেলা প্রশাসন। জাতীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে জেলা প্রশাসন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এ উপলক্ষে ২৮ মে রোববার সকালে চাঁদপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
|আরো খবর
অনুষ্ঠানের শুরুতে বঙ্গবন্ধুর জুলিও কুরি শান্তি পদকপ্রাপ্তির ওপর বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহন বাঁশি স্মৃতি সংসদ চিত্র প্রদর্শনী প্রদর্শন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান। সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বশির আহমেদ।
আলোচনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার মোঃ মিলন মাহমুদ বিপিএম (বার), জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, চাঁদপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ডের কমান্ডার যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা এমএ ওয়াদুদ, জেলা পরিষদের সিইও মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত নারী মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ সৈয়দা বদরুন নাহার চৌধুরী, পুরাণবাজার ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ রতন কুমার মজুমদার। আলোচনা করেন প্রেসক্লাব সভাপতি এএইচএম আহসান উল্লাহ, বিশিষ্ট লেখক ও ছড়াকার ডাঃ পীযূষ কান্তি বড়ুয়া।
সঞ্চালনায় ছিলেন দৈনিক সুদীপ্ত চাঁদপুর পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক এমআর ইসলাম বাবু। অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জেলা পর্যায়ের বিভিন্ন দপ্তরের অফিসারগণ, শিক্ষক- শিক্ষার্থী, অভিভাবকগণ, বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন বিশ্ব শান্তির বার্তাবাহক। মানবতার মুক্তি ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। খুব অল্প সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রের এমন কোনো অর্গান নেই যেখানে তিনি হাত দেননি এবং পরিকল্পনা করেননি। আমাদের সংবিধান প্রণয়ন করেছেন। জেলা প্রশাসক কবিতার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, নাই নাই ভয় হবে জয়, জয় মুজিবুর রহমান। তিনি বলেন, আমাদের সাম্রাজ্যবাদী শক্তি যারা আছেন মুখে গণতন্ত্রের কথা বললেও তাদের আগ্রাসন কিন্তু থেমে নেই। বঙ্গবন্ধু বিশ্বে শান্তির আহ্বান শান্তির বার্তা দিয়ে গেছেন। তাঁর পররাষ্ট্র নীতি ছিলো-কারো সাথে বৈরিতা নয়, সকলের সাথে বন্ধুত্ব। বিশ্বে আমাদের বাংলাদেশ যতোদিন থাকবে বঙ্গবন্ধুর নাম উচ্চারিত হবে।
জেলা প্রশাসক বলেন, জাতির পিতা আমাদের মাঝে সশরীরে নেই কিন্তু তাঁর আদর্শ আমাদের মাঝে আছে। তাঁর আদর্শ ধারণ করে আমরা আমাদের সকল জায়গায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখব এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হবো।
অন্যান্য বক্তা বলেন, বঙ্গবন্ধু সবসময় শান্তিতে বিশ্বাসী ছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জুলিও কুরি শান্তি পদকপ্রাপ্তি ছিলো বাঙালি জাতির জন্যে অত্যন্ত গৌরব ও সম্মানের। জুলিও কুরি শান্তি পদক তাদেরই দেয়া হয়, যারা বিশ্ব শান্তির জন্য অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। ১৯৭২ সালের ১০ অক্টোবর বিশ্ব শান্তি পরিষদের প্রেসিডেনশিয়াল কমিটির সভায় বাঙালি জাতির মুক্তি আন্দোলন এবং বিশ্ব শান্তির সপক্ষে বঙ্গবন্ধুর অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পদক প্রদানের জন্য শান্তি পরিষদের মহাসচিব রমেশ চন্দ্র প্রস্তাব উপস্থাপন করেন। সে সভায় পৃথিবীর ১৪০ দেশের ২০০ প্রতিনিধির উপস্থিতিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পদক প্রদানের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং ১৯৭৩ সালের ২৩ মে বঙ্গবন্ধুকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই আন্তর্জাতিক সম্মাননা প্রদান করা হয়।
আলোচনা পর্ব শেষে বঙ্গবন্ধুর জুলিও কুরি শান্তি পদক প্রাপ্তি নিয়ে শিক্ষার্থীদের রচনা, কুইজ ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয় এবং জুলিও কুরি প্রাপ্তির উপরে ডাক বিভাগের ডাকটিকেট উন্মোচন করা হয়। সেই ডাকটিকিট দশজন শিক্ষার্থীর মাঝে বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে অতিথিবৃন্দ এসব ডাকটিকিট বিতরণ করেন।
এর আগে শিল্পকলা একাডেমির শিশু শিল্পীদের পরিবেশনায় বঙ্গবন্ধুর উপর লেখা একাধিক গান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে পরিবেশন করা হয়।