প্রকাশ : ১২ জুন ২০২২, ১২:২৩
বিষাক্ত জেলিযুক্ত চিংড়ির বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অভিযান চাই
১৩৫০ কেজি বিষাক্ত জেলিযুক্ত চিংড়ি জব্দ করেছে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড (বিসিজি) চাঁদপুর স্টেশন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে স্টেশন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট মাশহাদ উদ্দিন নাহিয়ানের নেতৃত্বে গত ১০ জুন ভোর সাড়ে ৫টায় চাঁদপুর-শরিয়তপুর ফেরির হরিণা ঘাট সংলগ্ন এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এতে ২টি ট্রাক (যশোর ট-১১-৩৫-২২ ও যশোর ট-১১-২৯-৯২)-এ তল্লাশি চালিয়ে ১৩৫০ কেজি বিষাক্ত জেলিযুক্ত চিংড়ি জব্দ করা হয়। তারপর সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ তানজিমুল ইসলামের উপস্থিতিতে মাটিতে পুঁতে বিনষ্ট করা হয়। কোস্টগার্ডের এমন অভিযান চাঁদপুর ছাড়া অন্যান্য স্থানেও দেখা যায়।
|আরো খবর
আমাদের দেশের মানুষের নিকট ছোট-বড় সব ধরনের চিংড়িই লোভনীয় মাছ। গরিব-ধনী সকলেই ছোট চিংড়ির ভর্তা পছন্দ করে। এছাড়া লাউসহ বিভিন্ন তরকারি ছোট চিংড়ি দিয়ে রান্না করলে বিশেষ স্বাদের হয়। মাঝারি আকারের চিংড়ি সহ বড় চিংড়ি মানেই অনেক দামী মাছ। বিশেষ করে বড় চিংড়ি উচ্চ মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে ধনাঢ্য ব্যক্তিরা অভিজাত খাবার হিসেবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পরিবেশন করে নিজেদের আভিজাত্য প্রকাশ করে। সেজন্যে অসাধু বিক্রেতারা চিংড়ির ওজন বাড়িয়ে কীভাবে লাভবান হওয়া যায় সে চেষ্টা করছে দীর্ঘদিন ধরে। চিংড়িতে পেরেক ঢুকিয়ে কিংবা অন্য কোনো ধাতব কিছু ঢুকিয়ে বিদেশে রপ্তানি করে তো কিছু অসাধু মৎস্য রপ্তানিকারক দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে বার বার। তারপর শুরু করেছে বিষাক্ত জেলি পুশ করার কাজ। অন্তত ১০-১২ বছর ধরে এ অপকর্মটি চললেও এর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক সাঁড়াশি অভিযান কিন্তু সবসময় দৃশ্যমান হয় না। বিষাক্ত জেলিযুক্ত চিংড়ি বিদেশে রপ্তানিতে ব্যর্থ হয়ে দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে বিপণনে লিপ্ত রয়েছে একটি চক্র। বিশেষ করে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে উৎপাদিত চিংড়িগুলোতে এ জেলি পুশ করে উক্ত চক্রটি সারাদেশে সরবরাহ করে। এজন্যে তারা অনেককেই ম্যানেজ করে। তবে কোস্টগার্ডকে ম্যানেজ করতে পারে না বলে মনে হচ্ছে। তাই কোস্ট গার্ডের অভিযানেই জেলিযুক্ত চিংড়ি বেশি ধরা পড়ছে। কিন্তু এ অভিযান যে প্রয়োজনের তুলনায় পর্যাপ্ত সেটা জোর দিয়ে বলা যায় না।
আমরা মনে করি, বিষাক্ত জেলিযুক্ত চিংড়ির সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ তথা চক্রটি এতোটা শক্তিশালী নয় যে, দেশের সকল গোয়েন্দা সংস্থার চোখ এড়িয়ে চলতে পারে। যে দেশের গোয়েন্দারা বিশে^র অনেক দেশের চেয়ে তীক্ষè দক্ষতায় তাদের জাল বিস্তার করে সাফল্যের সাথে জঙ্গিসহ অনেক নাশকতাকারীকে দমনে অনেক বড় ভূমিকা রেখেছে, সে দেশে স্বাস্থ্যের জন্যে মারাত্মক ক্ষতিকর জেলি সুস্বাদু বড় চিংড়িতে পুশ করার অপকর্মে লিপ্ত চক্রকে দমনে ভূমিকা রাখতে পারে না-এমনটি আমরা কোনোভাবেই বিশ^াস করি না। আমাদের ধারণা, এজন্যে যথাস্থান থেকে জোরালো নির্দেশ জারি হচ্ছে না। আমরা তেমন নির্দেশ জারিকে জরুরি বলেই মনে করছি।