বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪  |   ৩০ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জে সংবাদকর্মীর কন্যাকে অপহরণ চেষ্টায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের
  •   লক্ষ্মীপুরে মাদকসহ বাবা ও দুই ছেলে আটক
  •   চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন মামলার ৮ আসামী আটক
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার

প্রকাশ : ২৭ এপ্রিল ২০২২, ১১:৫৭

পুলিশ সুপারের কথার সত্যিকারের প্রতিফলন চাই

অনলাইন ডেস্ক
পুলিশ সুপারের কথার সত্যিকারের প্রতিফলন চাই
গত ২৩ এপ্রিল শনিবার পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে চাঁদপুর জেলা পুলিশের সকল ইউনিট-ইনচার্জের সাথে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সভায় সভাপ্রধানের বক্তব্যে পুলিশ সুপার মোঃ মিলন মাহমুদ, বিপিএম (বার) তাঁর অধীনস্থ মাঠ পর্যায়ের সকল পুলিশ কর্মকর্তাকে সাধারণ জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সদা তৎপর থাকতে বলেছেন। তিনি বিট পুলিশিং ও কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রম আরো জোরদার করার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছেন। এ সংক্রান্ত সংবাদ গত সোমবার চাঁদপুর কণ্ঠের প্রথম পৃষ্ঠায় ছাপা হয়।
গতকাল মঙ্গলবার চাঁদপুর কণ্ঠে পুলিশ সুপারের বক্তব্য সম্বলিত আরেকটি সংবাদ ছাপা হয়। তিনি জেলা পুলিশের সাথে পরিবহণ মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের মতবিনিময় সভায় বলেছেন, কোনো যানবাহনে অতিরিক্ত যাত্রী ও ভাড়া নেয়া যাবে না। তিনি চাঁদপুর শহরের যানজট নিরসনের জন্যে কিছু নির্দেশনা দিতে গিয়ে বলেছেন, কালীবাড়ি মোড় থেকে শুরু করে কোনো মার্কেট এলাকায় কোথাও সিএনজি অটোরিকশা দাঁড়াতে পারবে না। তারা দ্রুত যাত্রী নামিয়ে স্থান ত্যাগ করে পার্কিংয়ে চলে যেতে হবে। ঈদকালীন হাসান আলী হাই স্কুল মাঠ, পুলিশ বক্সের পেছনে, পালবাজারের সামনে কোনো অবস্থাতেই যানবাহন পার্কিং করা যাবে না। ........রাত ৮টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত চাঁদপুর শহরে পণ্যবাহী ট্রাক প্রবেশ করতে পারবে। অন্য জেলার সিএনজি অটোরিকশা চাঁদপুর শহরে প্রবেশ করতে পারবে না।
কথা হলো, পুলিশ সুপারের প্রাগুক্ত সব বক্তব্যের সত্যিকারের প্রতিফলন হচ্ছে কিনা সেটা পর্যবেক্ষণ করবে কে। কারণ, সর্ষের ভেতর কিছু সক্রিয় ভূত আছে, যারা ঊর্ধ্বতনদের নির্দেশের কথা মুখে বললেও অন্তরে পুরোপুরি ধারণ করে না এবং সেমতে কাজ করে না। প্রকৃত সত্য হলো, চাঁদপুরে বিট পুলিশিং কার্যক্রম বেশি জোরদার, না কম জোরদার সে ব্যাপারে সুস্পষ্ট মন্তব্য না করলেও এটা বলা যায়, এটি সাধারণ্যে দৃশ্যমান নয়। তবে কমিউনিটি পুলিশিং সাধারণ্যে খণ্ডিতভাবে দৃশ্যমান। ১৯৯৯ সালে চাঁদপুর শহরে চালুকৃত এবং পরবর্তী এক দশকে সারা জেলায় সম্প্রসারিত কমিউনিটি পুলিশিং সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পুরো অবয়বে টিকে নেই। প্রধানত নৈশকালীন টহল কার্যক্রম, কমিটি সর্বস্বতা ও কিছু সালিসে সীমাবদ্ধ হয়ে আছে এই কমিউনিটি পুলিশিং। একে জোরদার করার জন্যে অতীতে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে যেসব প্রক্রিয়া ও প্রণোদনা বিদ্যমান ছিলো, বর্তমানে সেগুলো পুরোপুরি নেই। বর্তমান পুলিশ সুপারের পূর্ববর্তী পুলিশ সুপার তো চাঁদপুর শহরের কালীবাড়ি মোড়ের ক’টি দোকানে অভিনব চুরির প্রেক্ষিতে অসন্তুষ্ট হয়ে বলেছিলেন, চাঁদপুরে এমন কমিউনিটি পুলিশিংয়ের কী প্রয়োজন? পরবর্তীতে তিনি সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া যাচাই করেই হয়তো কমিউনিটি পুলিশিং সম্পর্কে নেতিবাচক সিদ্ধান্ত থেকে সরে গিয়েছিলেন।
পুলিশ সুপার চাঁদপুর শহরের কোনো মার্কেটের সামনে কোনো গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। তাঁর এ নিষেধাজ্ঞা জারির দিনে অর্থাৎ সোমবার সেটি পালিত হতে দেখা যায় নি। চাঁদপুর শহরের পাঁচ রাস্তার মোড় শপথ চত্বরের পূর্বদিকে চাঁদপুর টাওয়ার মার্কেটসহ লাগোয়া অন্যান্য মার্কেটের সামনে সিএনজি অটোরিকশা ট্রাফিক পুলিশের উপস্থিতিতেই পার্কিং করে যাত্রী ওঠানামা করাতে দেখা গেছে। অথচ এমন পার্কিংই শপথ চত্বরে অসহনীয় যানজটের অন্যতম কারণ।
আর অন্য জেলার সিএনজি অটোরিকশার কথা বলবো? পুলিশ সুপারের নির্দেশনা মেনে এগুলো চাঁদপুর শহরে যাতায়াত করছে কিনা সেটা লঞ্চঘাটে গিয়ে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করলে টের পাওয়া যাবে। যানবাহনে অতিরিক্ত ভাড়া ও অতিরিক্ত যাত্রীর বিষয়টি তো নিতান্তই দ্বিপক্ষীয় আপসমূলক কাজ। এ নির্দেশনা মানাতে হলে থানার পুলিশ, রেল পুলিশ, নৌ পুলিশ, কোস্ট গার্ড ও র‌্যাবের সাধারণ জনবল দিয়ে হবে না, প্রয়োজন পড়বে অতিরিক্ত জনবল। অন্যথায় পুলিশ সুপারের নির্দেশ-নির্দেশনা নিতান্ত বাতাসেই ঘুরপাক খাবে।
পুলিশ সুপারের কথাগুলোর সত্যিকারের প্রতিফলন ঘটানোর জন্যে চলতি এপ্রিল মাসের শুরু থেকেই কাজ করার দরকার ছিলো বলে আমরা মনে করি। অবশ্য এতোটা আগে আইজিপি মহোদয়ের নির্দেশনা তিনি পাননি। যদি পেতেন, তাহলে তিনি আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত জরুরি সভাসহ অন্য সভাগুলো সম্পন্ন করতে পারতেন এবং প্রদত্ত নির্দেশনা বাস্তবায়নে ব্যাপক প্রস্তুতি নিতে পারতেন, মনিটরিংয়ের কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারতেন। তারপরও পুলিশ বলে কথা, এমন কোনো কাজ নেই যে পুলিশ পারে না। সে আলোকে যতো কষ্টই হোক, পুলিশ সুপারের বক্তব্যের সত্যিকারের প্রতিফলন ঘটাতে পুলিশের সকল ইউনিট তৎপর হবে বলে বিশ^াস রাখি।
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়