প্রকাশ : ১৩ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
বাজারে আগুন, অস্বস্তিতে জনজীবন
চাঁদপুরে কিছু অসাধু ডিলার, আড়তদার ও মোকামী ব্যবসায়ীদের একটি অংশ রমজানকে সামনে রেখে বাড়তি মুনাফা পেতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। ১২ মার্চ মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে পবিত্র মাহে রমাদান। ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের অন্যতম হলো রোজা পালন। অথচ এই মাসে চাঁদপুরের সকল হাট-বাজারে রমজানকেন্দ্রিক পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী।
চাঁদপুরসহ সারাদেশে রমজানকে সামনে রেখে বেড়েছে সব পণ্যের দাম। সরকারের নানা উদ্যোগের পরও কোনো পণ্যের দাম কমার লক্ষণ নেই। উল্টো কিছু পণ্যের দাম বেড়েই চলছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই প্রথম রোজা পার করেছেন সাধারণ মানুষ।
১২ মার্চ মঙ্গলবার প্রথম রোজার দিন শহরের বেশ ক’টি বাজার ঘুরে দেখা যায় বাড়তি দামে বিক্রয় হচ্ছে সব পণ্য।
ইফতারের আগ মুহূর্তে প্রতি কেজি ৫০-৬০ টাকার শসা ৮০-১০০ টাকা, ৩০ টাকার গাজর ৫০ টাকা, ৪০ টাকার টমেটো ৬০ টাকা, ৪০ টাকা হালি লেবু ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
বাজারে গিয়ে দেখা যায়, রোজাদারদের ইফতারের জরুরি খাদ্য ছোলার দাম লাগাম ছাড়া। গত মাসেও ৮০ টাকায় বিক্রি হতো ভালো মানের ছোলা, এখন তা ১১০ টাকা। ডাল নেই এমন কথা বলে ১০৫ টাকার খেসারি ১২০ টাকা কেজিতে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে।
এছাড়া ১৪০ টাকার চিনি এখন বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকায়। আলুর কেজি ৩০-৩৫ টাকা হয়ে গেছে। পেঁয়াজের দাম কমলেও পুরাণবাজার পাইকারি বাজারে বেশি দামে বিক্রি হয়েছে পেঁয়াজ। সোমবার সকালে ৬০-৬২ টাকার পেঁয়াজ বিকালে ৭০-৭৫ টাকায় বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে এখানকার চিহ্নিত দুই পাইকারি পেঁয়াজ ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে।
রোজাদারদের জন্য তাৎক্ষণিক পুষ্টির জোগান দেওয়া সুস্বাদু খেজুরের দাম হয়েছে দ্বিগুণ। গতবারের ২০০ টাকার খেজুর এবার ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
দাম বাড়ার বিষয়ে বাজারের ক্রেতারা জানান, এখন খেজুর নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের জন্য নয়। শুধু উচ্চবিত্তরাই এখন খেজুর খাবেন।
এবার সেহরিতে মাংসের স্বাদ নিতে পারবে না অনেক মধ্য ও নিম্নবিত্ত। গেল কয়েক দিনে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে ৩০ থেকে ৫০ টাকা। ব্রয়লার মুরগির দাম প্রতি কেজির জন্য ২২০-২৪০ টাকা চাইছেন বিক্রেতারা। এছাড়া সোনালি মুরগি ৩২০ টাকা, দেশি মুরগি ৫৮০-৬০০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৬০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ৩৩০ টাকায়। আর জাতভেদে প্রতি কেজি হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৫৫০-৯০০ টাকায়।
চড়া গরুর মাংসের দামও। প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮০০ টাকায়। আর খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৫০ টাকা থেকে এক হাজার ১০০ টাকায়।
পবিত্র রমজান মাসকে ঘিরে নিত্যপণ্যের বাজার ক্রমেই অস্থির হয়ে উঠছে। গত সপ্তাহের তুলনায় ১৩ ধরনের পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। পর্যাপ্ত মজুত থাকার পরও ভোক্তা পর্যায়ে বেড়েছে ছোলা, ডাল, আদা, রসুন, চিনির দাম। বাজারে আগুন তাই জনমনে ভীষণ অস্বস্তি। তাই এ বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ নেয়ার দাবি জানান নাগরিকরা।