প্রকাশ : ১২ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:৪১
ঘন কুয়াশায় মেঘনায় যাত্রীবাহি লঞ্চের সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৫
ঘন কুয়াশার কবলে ঢেকে থাকায় এক রাতেই চাঁদপুর নৌপথে চলাচলকারী পৃথক দুই স্থানে মোট চারটি লঞ্চের মুখোমুখি সংঘর্ষ সংঘটিত হয়েছে। এতে সোহেল নামে একজন যাত্রী মারা গেছেন। আহত হয়েছেন বেশ ক'জন যাত্রী। ১২ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিআইডব্লিউটিএ চাঁদপুর নৌ বন্দর কর্মকর্তা মোঃ শাহাদাত হোসেন।
তিনি বলেন, বরিশালের ইলিশা থেকে ঢাকাগামী সুরভী-৮ এবং ঢাকা থেকে ভোলা চরফ্যাশনগামী টিপু-১৪ লঞ্চটি চাঁদপুরের হাইমচরের চরভৈরবী অতিক্রমকালে ঘনকুয়াশায় মুখোমুখি সংঘর্ষের দিকে ধাবিত হয়। সোমবার রাত ১২ টায় এই দুর্ঘটনার সময় টিপু-১৪ লঞ্চটির ধাক্কায় সুরভী-৮ লঞ্চের কিনারে থাকা সোহেল নামের এক যাত্রীর বুকে লঞ্চটির পাইপ ভেঙ্গে জোড়ে লোহার আঘাত লাগে। এতে ঘন্টা দেড়েকের মধ্যেই ওই যাত্রী লঞ্চেই নিহত হয়।সে সুরভী-৮ লঞ্চের যাত্রী বলে জানা যায়।
তিনি আরও বলেন, লঞ্চগুলোর তেমন কোন ক্ষতি না হওয়ায় তাদের মাষ্টারদের চাহিদানুযায়ী যার যার গন্তব্যে চলে যেতে চাওয়ায় আমরা লঞ্চগুলো চলে যাবার অনুমতি দিয়েছি। যার কারনে চাঁদপুরে কোন লঞ্চ ঘাটে ভিড়াতে হয়নি।এছাড়াও চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলার মোহনপুর এলাকায় মেঘনা নদীতে দুটি যাত্রীবাহী লঞ্চের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ১২ ডিসেম্বর রাত সাড়ে তিনটার দিকে ঢাকা-চাঁদপুর রুটে চলাচলকারী রফরফ-৭–এর সঙ্গে ঢাকা-পটুয়াখালী রুটে চলাচলকারী এআর খান লঞ্চের সঙ্গে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নদীতে ঘন কুয়াশার কারণে এই দুই লঞ্চের সংঘর্ষে দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন লঞ্চের যাত্রীরা। এতে অন্তত পাঁচজন যাত্রী আহত হয়েছেন। রফরফ-৭ লঞ্চের পেছনের অংশে অনেকটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, লঞ্চগুলোর তেমন কোন ক্ষতি না হওয়ায় তাদের মাষ্টারদের চাহিদানুযায়ী যার যার গন্তব্যে চলে যেতে চাওয়ায় আমরা লঞ্চগুলো চলে যেতে অনুমতি দিয়ে দিয়েছি। যার কারনে চাঁদপুরে কোন লঞ্চ ঘাটে ভিরাতে হয়নি।
লঞ্চের এক যাত্রীরা জানান, গতকাল রাত ১২টার দিকে সদরঘাট থেকে রফরফ-৭ লঞ্চ চাঁদপুরের উদ্দেশে ছেড়ে আসে। ঘন কুয়াশার কারণে লঞ্চ কিছুটা ধীর গতিতে চলছিলো। রাত সাড়ে তিনটার দিকে লঞ্চটি মতলব উত্তরে মোহনপুর এলাকায় পৌছলে এ সময় পটুয়াখালীগামী এ আর খান নামের একটি লঞ্চ রফরফকে পেছন থেকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে রফরফ লঞ্চের পেছনে দ্বিতীয় তলার একাংশ দুমড়ে-মুচড়ে যায়। পরে ভোর চারটায় এমভি রফরফ লঞ্চটি চাঁদপুরে পৌঁছায়।
আহত লঞ্চযাত্রী মোঃ মাসুম (৩৫) বলেন, যে দুর্ঘটনা ঘটেছে, এতে অল্পের জন্য রফরফ ডুবে যাওয়া থেকে রক্ষা পেয়েছে। অপর যাত্রী নেছার আহমেদ বলেন, দুটি লঞ্চই তিনতলাবিশিষ্ট এবং প্রায় আড়াইশ ফুট লম্বা এবং আকৃতিতে বড় হওয়ার কারণে রক্ষা পেয়েছে। তবে ছোট লঞ্চ হলে বড় ক্ষয়ক্ষতি হতে পারত।
রফরফ লঞ্চে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঢাকা থেকে ফরিদগঞ্জে বাড়ি ফিরছিলেন ফারুক হোসেন। তিনি বলেন, এআর খান নামের একটি লঞ্চ রফরফ লঞ্চটিকে পেছন থেকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে রফরফের সিটে থাকা পাঁচজন যাত্রী প্রায় দুই থেকে তিন হাত দূরে গিয়ে ছিটকে পড়েন। তারা মাথায় ও হাতে আঘাতপ্রাপ্ত হন।
লঞ্চের স্টাফ মোঃ রুবেল বলেন, ঘন কুয়াশা থাকলেও তাঁরা রাডার ব্যবহার করে গন্তব্যে যাচ্ছিলেন। কিন্তু এআর খান লঞ্চটি রাডার ব্যবহার না করায় এই ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ করেন তিনি।