শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।
  •   রাষ্ট্রীয় পদে আসীন হচ্ছেন খবরে আসামিপক্ষে শুনানি করলেন না সমাজী।

প্রকাশ : ২১ জুন ২০২১, ১১:৫১

চাঁদপুরে পর্যটনশিল্পের অপার সম্ভাবনা বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে টোয়াবের মতবিনিময়

আগামী দুই বছরের মধ্যে চাঁদপুরে পর্যটন শিল্পের অগ্রগতির কাজ দৃশ্যমান হবে : মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল

মিজানুর রহমান
‘আমরা চাঁদপুরে পর্যটনের সেবা দিতে কাজ করতে চাই’

ইলিশের বাড়ি চাঁদপুরে পর্যটন শিল্পের অপার সম্ভাবনা বিষয়ে স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে দেশের শীর্ষ ট্যুর অপারেটরদের সংগঠন ‘ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’ (টোয়াব) নেতৃবৃন্দের মতবিনিময় সভা হয়েছে। ১৯ জুন সন্ধ্যা ৭টায় চাঁদপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে বক্তারা চাঁদপুরের ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং পর্যটন শিল্পের বিকাশের সম্ভাবনা তুলে ধরেন। বক্তারা বলেন, পদ্মা-মেঘনা-ডাকাতিয়া এ তিন নদীর মিলনস্থল ঘেরা চাঁদপুর শহর রক্ষাবাঁধ ‘মোলহেড’। মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্যের এমন সৌন্দর্যের জায়গা পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে খুব একটা নেই। এখানে পর্যটনের অনেক উপাদান রয়েছে। এখানকার নদী ও সূর্যাস্তের দৃশ্য পর্যটকদের খুব আকৃষ্ট করবে। শুধু তাই নয়, এখানে সুস্বাদু রূপালি ইলিশ তার প্রধান বিচরণ ক্ষেত্র। চাঁদপুরের ইলিশ গোটা বিশ্বে পরিচিত। ফলে স্বাদ-গন্ধে অন্য সব এলাকার চেয়ে চাঁদপুরের ইলিশের বৈশিষ্ট্য প্রাকৃতিক কারণেই আলাদা। এছাড়া মোহনার ভেতর বিচ্ছিন্ন একটি চর রয়েছে। যেখানে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে নানা উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে। সেই চরটিকে মিনি কক্সবাজার নয়, হিলশা বিচ নামকরণেরও প্রস্তাব করা হয়।

বক্তারা বলেন, এখানে পর্যটনের অনেক উপাদান রয়েছে। এখানকার ইলিশ গোটা বিশ্বে পরিচিত। চাঁদপুর শহরের এই সৌন্দর্য্যরে লীলাভূমিকে কেন্দ্র করে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তুলতে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরকারকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান টোয়াব নেতৃবৃন্দ। একই সঙ্গে টোয়াব নেতৃবৃন্দ চাঁদপুরে পর্যটনশিল্পের বিকাশে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

চাঁদপুরের ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং পর্যটনশিল্পের বিকাশ তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র অ্যাডঃ মোঃ জিল্লুর রহমান জুয়েল, ট্যুর অপারেটরস্ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব) সভাপতি রাফেউজ্জামান রাফি, সহ-সভাপতি শিবলুল আজিম কোরেশী, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি কাজী শাহাদাত ও জেলা পুলিশের ডিআইও-১ তোতা মিয়া।

চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটওয়ারীর সভাপ্রধানে ও সাবেক সভাপতি বিএম হান্নানের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সিনিয়র সাংবাদিক মুনির চৌধুরী, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গিয়াসউদ্দিন মিলন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সোহেল রুশদী, আইরুমন্স বিডির ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোঃ ইউনুছ উল্লাহ, প্রথম আলোর চাঁদপুর প্রতিনিধি আলম পলাশ, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির চাঁদপুর প্রতিনিধি আব্দুল আউয়াল রুবেল, চাঁদপুর টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি আল-ইমরান শোভন, সাধারণ সম্পাদক রিয়াদ ফেরদৌস, ঢাকাস্থ চাঁদপুর সাংবাদিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় দৈনিক বাণিজ্য প্রতিদিনের সম্পাদক রাশেদ শাহরিয়ার পলাশ ও চাঁদপুর ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কেএম মাসুদ।

চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র অ্যাডঃ মোঃ জিল্লুর রহমান জুয়েল বলেন, আমরা মানুষ হিসেবে অনেকেই মনে মনে ভ্রমণ করি। অনেক লেখক ঘরে বসেই মনের চোখ দিয়ে স্বপ্নের জায়গা ভ্রমণ করে বই লিখেছেন। কিন্তু আপনারা যারা ট্যুরিজম নিয়ে কাজ করেন, তাদের অনেক জায়গা ঘুরে দেখার সৌভাগ্য হয়। আপনাদের দেখে দেখে আমরা ভ্রমণপিপাসু হয়ে উঠি। আপনারাও সমাজ বিবর্তনের পথপ্রদর্শক।

তিনি বলেন, নদীবন্দর জেলা হিসেবে চাঁদপুরের গুরুত্ব অনেক। কালের বির্বতনে তার কিছুটা জৌলুস হারিয়েছে। কিন্তু গত কয়েক বছরে চাঁদপুরের সেই হারানো গৌরব ফিরে আসতে শুরু করেছে। চাঁদপুরে পর্যটনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। আমাদের প্রাণের নেত্রী চাঁদপুরের উন্নয়নের রূপকার শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি চাঁদপুরকে আরও দৃষ্টিনন্দন করার জন্যে কাজ করছেন। ইনশাআল্লাহ চাঁদপুরে পর্যটন এলাকা গড়ে উঠবে। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসতে হবে।

মেয়র বলেন, পদ্মাসেতুর পর বাংলাদেশের মেগাপ্রকল্প হবে চাঁদপুর-শরীয়তপুর মেঘনা সেতু। সরকার এখানে একটি ট্যানেল করার পরিকল্পনা করছে। তিনি বলেন, আমরা একটি পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। এক্ষেত্রে আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন। আমরা এখন পর্যটনের সম্ভাবনার কথা বলছি। আগামী দুই বছরের মধ্যে এখানে পর্যটন শিল্পের অগ্রগতির কাজ দৃশ্যমান হবে।

টোয়াব সভাপতি রাফেউজ্জামান রাফি বলেন, আমরা পর্যটনকর্মী, দেশ আমাদের মা। আমরা মায়ের সেবা করি। চাঁদপুরে পর্যটনশিল্পের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু এখানে যেভাবে এগোনোর কথা ছিলো, সেভাবে এগোয়নি। আমরা চাঁদপুরে পর্যটনের সেবা দিতে কাজ করতে চাই। এ ব্যাপারে তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেন।

অন্যান্য বক্তা বলেন, চাঁদপুরের মোলহেডকে পর্যটনের আদলে গড়ে তোলার জন্যে সাবেক জেলা প্রশাসক আব্দুস সবুর মন্ডল অনেক কাজ করেছেন। বর্তমান জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ ও পৌরসভার মেয়র অ্যাডঃ মোঃ জিল্লুর রহমান জুয়েল কাজ করে যাচ্ছেন। এছাড়াও সাংবাদিক-লেখকরা এখানকার ইতিহাস-ঐতিহ্য তুলে ধরে অনেক কাজ করেছেন। দেশের উল্লেখযোগ্য পর্যটন এলাকার চেয়ে চাঁদপুরের সম্ভাবনা অনেক। এখানে অনেক প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে। ঢাকাসহ সকল জেলা থেকে চাঁদপুরে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো। সড়ক পথ, নৌ-পথ, রেলপথে সহজ যোগাযোগ একদিনের সফরে কম খরচে চাঁদপুর ভ্রমণ করা সম্ভব। চাঁদপুর অন্যান্য জেলার চেয়ে নিরাপদ। পর্যটনশিল্পের বাড়ি চাঁদপুর হবে, পর্যটন নগরী হবে-সেই প্রত্যাশা করছি।

চাঁদপুরে পর্যটনশিল্পের অপার সম্ভাবনা প্রত্যক্ষ করতে শনিবার সকালে একদিনের সফরে চাঁদপুরে আসেন দেশের শীর্ষ ট্যুর অপারেটরদের সংগঠন-টোয়াব নেতৃবৃন্দ। ট্যুর অপারেটরস্ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব) সভাপতি রাফিউজ্জামান রাফি ও সহ-সভাপতি শিবলুল আজিম কোরেশীর নেতৃত্বে ৬০ সদস্যের প্রতিনিধি দল দিনব্যাপী চাঁদপুর সফর করবেন।

আইরুমন্স বিডির ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোঃ ইউনুস উল্লাহর ব্যবস্থাপনায় এবং চাঁদপুর প্রেসক্লাবের আয়োজনে টোয়াব নেতৃবৃন্দ ঐতিহ্যবাহী চাঁদপুর বড়স্টেশন মাছঘাট, পদ্মা-মেঘনা-ডাকাতিয়া নদীর মিলনস্থল বড়স্টেশন মোলহেড, মেঘনার চরে জেগে ওঠা ‘মিনি কক্সবাজার’ এবং ডাকাতিয়া নদী পরিভ্রমণ করেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়