রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২:৫২

আদালতের নিষেধাজ্ঞা অবমাননা।। সম্পত্তির রিসিভার নিয়োগ

ফরিদগঞ্জ ব্যুরো।।
আদালতের নিষেধাজ্ঞা অবমাননা।। সম্পত্তির রিসিভার নিয়োগ

নিজের খরিদকৃত সম্পত্তি বুঝে নিতে স্থানীয়ভাবে ব্যর্থ হওয়ার পর আদালতের আশ্রয় নেন ভুক্তভোগী। আদালত স্থানীয়ভাবে শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার্থে ফরিদগঞ্জ থানার ওসিকে রিসিভার নিয়োগ দেয়। কিন্তু আদালতে ভুল তথ্য দিয়ে জবর দখলকারীরা রিসিভার উঠিয়ে নিজেরাই তর্কিত সম্পত্তিতে দিনেরাতে কাজ করে পাকা স্থাপনা নির্মাণ শুরু করে। ফলে বাধ্য হয়ে ভুক্তভোগী দ্বিতীয়বার আদালতের দ্বারস্থ হলে আদালত আবারো ওই সম্পত্তির উপর ওসিকে রিসিভার নিয়োগ দেয়। আদালতের নির্দেশনা অনুসারে শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর ২০২৫) বিকেলে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রিসিভারের সাইনবোর্ড ও লাল নিশানা টানিয়ে দিয়ে আসে। যদিও রাতের আঁধারে প্রতিপক্ষরা আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে তর্কিত সম্পত্তির ওপর টানানো লাল নিশানা উঠিয়ে ফেলেছে বলে জানা গেছে। ঘটনাটি ফরিদগঞ্জ উপজেলার চরদুঃখিয়া পশ্চিম ইউনিয়নের লড়াইচর গ্রামের।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার চরদুঃখিয়া পশ্চিম ইউনিয়নের লড়াইরচর মৌজার বিএস চূড়ান্ত খতিয়ান ৫৯৭/৭২৮, যার দাগ নং ৬৯৮/৬৯৯ নালিশি ভূমি। এ ভূমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। ২০২৩ সালে সাবেক ইউপি সদস্য ও বিরামপুর বাজারের ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান স্থানীয় বাসিন্দা মৃত আনা মিয়ার বড় ছেলে লেদু মিয়ার কাছ থেকে ৫৯৭নং খতিয়ানের ৬৯৯ দাগে ৪ শতক, ৭০০ দাগে ৪ শতক, ৭১২ দাগে ২ শতক, ৭১৩ দাগে হিস্যানুযায়ী সাড়ে ৩ শতকসহ মোট ৪টি দাগে ১৩.৫০ শতক ও ৭২৮নং খতিয়ানের ৬৯৮ দাগে ৭ শতক এবং ৫৯৩ নং খতিয়ানের ৭০০ দাগে ৯.৫০ শতক মোট ৩০ শতক জমি ক্রয়- পরবর্তীতে ভোগদখলে আছেন। কিন্তু স্থানীয় একটি কুচক্রি মহলের ইন্ধনে ২০২৪ সালে মৃত আনা মিয়ার আরেক ছেলে শাহাবুদ্দিন ওরফে সফি উল্লাহর কাছ থেকে মো. সাইফুল ইসলাম তালুকদার ৭২৮ খতিয়ানে ৬৯৮ দাগে ৩ শতক ৫৯৭ খতিয়ানে ৬৯৯,৭০০,৭১১,৭১৪সহ মোট ৪ দাগে ৭শতক ভূমি ক্রয় করে ৬৯৯ দাগে জোরপূর্বক ভোগদখল করতে উঠেপড়ে লাগে। এতে উভয়পক্ষের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। সাইফুল ইসলাম গং দ্বারা জোরপূর্বক সম্পত্তি দখলের পাঁয়তারার অংশ হিসেবে ইতিপূর্বে ফলদ ও বনজ গাছ কেটে লুটপাট, সন্ত্রাসীদের উপস্থিতিতে ভবন নির্মাণ কাজ করছে। সর্বশেষ ভীতসন্ত্রস্ত মিজানুর রহমান সর্বশেষ গত ৩০ নভেম্বর বিজ্ঞ আদালতের দ্বারস্থ হলে (দঃ মোঃ নং-১৪৩৩/২৫-এর মামলা নালিশী সম্পত্তিতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৫ ধারা জারি করেন। পরবর্তীতে রিসিভার নিয়োগ করেন।

কিন্তু প্রতিপক্ষরা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নিষেধাজ্ঞাকৃত জমিতে পাকা স্থাপনা নির্মাণ অব্যাহত রাখায় ভুক্তভোগীর আবেদনের প্রেক্ষিতে ফৌঃ কাঃ বিঃ আইনের ১৪৫ (৪) ধারার বিধান মতে নালিশী ভূমিতে স্থিতিবস্থাসহ রিসিভার নিয়োগ করে বিজ্ঞ আদালত। শুক্রবার

(১২ ডিসেম্বর ২০২৫) বিকেলে রিসিভার ফরিদগঞ্জ থানার ওসির পক্ষে থানা পুলিশ তর্কিত ভুমিতে রিসিভার নিয়োগের সাইনবোর্ড ও লাল নিশানা টানিয়ে আসেন।

এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী মিজানুর রহমান বলেন, এক সম্পত্তি নিয়ে তিনি হয়রানির শিকার হচ্ছেন। প্রতিপক্ষ সাইফুল ৭টি দাগে জমি কিনে খারিজ করেছেন দুই দাগে। আবার এখন এক দাগে জোরপূর্বক পাকা ভবন নির্মাণ করছেন। আমি আইনের আশ্রয় নিতে আদালতের দারস্থ হলে আদালত ওই সম্পত্তিতে রিসিভার নিয়োগ করেন। কিন্তু প্রতিপক্ষ আদালতে ভুল তথ্য প্রদান করে রিসিভার উঠিয়ে নিজেরাই আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে পুনরায় ভবন নির্মাণ শুরু করে। ফলে দ্বিতীয় দফায় আমি আদালতে আবেদন করলে আদালত দ্বিতীয়বার ওসি ফরিদগঞ্জকে রিসিভার নিয়োগ দেয়। গত ১০ ডিসেম্বর আদালত রিসিভার নিয়োগ করলেও প্রতিপক্ষরা এই আদেশ অমান্য করে নির্মাণ কাজ অব্যাহত রাখে। ফলে থানা পুলিশ গত ১২ ডিসেম্বর শুক্রবার তর্কিত সম্পত্তিতে রিসিভার নিয়োেেগর সাইনবোর্ড ও লাল নিশানা টানিয়ে আসে। কিন্তু রাতেই তারা লাল নিশানা সরিয়ে ফেলে।

এ ব্যাপারে ফরিদগঞ্জ থানার এসআই হেলাল উদ্দিন জানান, বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশনা অনুসারে আমরা লড়াইচর গ্রামের নালিশী সম্পত্তিতে রিসিভার সাইনবোর্ড ও লাল নিশানা টানিয়ে দিয়ে এসেছি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়