প্রকাশ : ১৮ মে ২০২৫, ১৭:৪৬
র্যাবের অভিযানে প্রধান আসামী গ্রেফতার
দেবিদ্বারে ভ্যান চালককে নৃশংসভাবে চোখ উপড়িয়ে হত্যার ঘটনা

গত ০৬ মে ২০২৫ তারিখ দুপুরে কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার থানাধীন ত্রিবিদ্যা গ্রামে মো. ছফিউল্লাহ (৪৩) নামে এক ভ্যান চালক নৃশংসভাবে খুন হন। এই ঘটনা বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত হলে স্থানীয়ভাবে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
প্রাথমিকভাবে জানা যায়, ভিকটিম ছফিউল্লাহর সাথে গ্রেফতারকৃত ১ নং আসামী মো. রাছেল হোসেন (৩৫)-এর সুসম্পর্ক চলমান ছিলো।
এরই ধারাবাহিকতায় গ্রেফতারকৃত আসামী রাছেল ভিকটিমের নিকট হতে ৪৫ হাজার টাকা ধার নেয়। পরবর্তীতে রাছেল পাওনা টাকা ফেরত না দিয়ে ভিকটিমকে বিভিন্নভাবে ঘোরাতে থাকে। যার ফলে তাদের মধ্যে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। বিষয়টি স্থানীয় সালিসে সমাধানের জন্যে প্রস্তাব করা হলে রাছেল ধার করা টাকা ফেরত দেবে মর্মে মৌখিকভাবে জানায়। এক পর্যায়ে গত ০৫ মে ২০২৫ তারিখ বিকেলে রাছেল পাওনা টাকা ফেরত দেবে মর্মে পরের দিন ভিকটিমকে তার ভাড়াকৃত গ্যারেজে যেতে বলে। রাছেলের কথামতো ভিকটিম পরের দিন দুপুর সাড়ে ১২টায় সেই গ্যারেজে গেলে গ্রেফতারকৃত আসামী রাছেল পূর্ব পরিকল্পিতভাবে গ্যারেজে থাকা শাবল দিয়ে ভিকটিমের মাথা ও বুকে গুরুতর আঘাত করলে ভিকটিম অচেতন হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। অতঃপর রাছেল ড্রিল মেশিন দিয়ে নির্মমভাবে ভিকটিমের চোখ উপড়ে ফেলে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় এবং আত্মগোপন করে। পরবর্তীতে ভিকটিমের পরিবার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে লাশ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে। এই ঘটনায় ভিকটিমের স্ত্রী বাদী হয়ে কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন, যার মামলা নং-০৬, তারিখ-০৭/০৫/২৫। ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে র্যাব গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি ও ছায়াতদন্ত শুরু করে। গোয়েন্দা নজরদারি ও ছায়াতদন্তে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এই ঘটনার সাথে জড়িত প্রধান আসামী মো. রাছেল হোসেন (৩৫)-এর অবস্থান পটুয়াখালী জেলার বাউফল থানা এলাকায় শনাক্ত করা হয়। পরবর্তীতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ও তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় ১৭ মে ২০২৫ তারিখ রাতে র্যাবের অভিযানে পটুয়াখালী জেলার বাউফল থানাধীন নগরের হাট এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত প্রধান আসামী মো. রাছেল হোসেন (৩৫) (পিতা-মো. কিরণ, সাং-আন্দিরপাড়, থানা-দেবিদ্বার, জেলা-কুমিল্লা)কে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামী এই হত্যাকাণ্ডের সাথে তার সম্পৃক্ততার বিষয়ে তথ্য প্রদান করে। গ্রেফতারকৃতের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থাগ্রহণের জন্যে কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।