প্রকাশ : ১৪ মার্চ ২০২৫, ২০:৫৫
গল্লাক বাজারে পাবলিক টয়লেট নির্মাণে যুবলীগ নেতার বাধা

প্রায় তিনশ' ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। বাজারে আগন্তুক হাজারো ক্রেতা-বিক্রেতাসহ এলাকার হাজার হাজার মানুষের প্রাণের দাবি উপজেলার বৃহৎ এই বাজারে একটি পাবলিক টয়লেট নির্মাণ। আর সেই দাবির কথা চিন্তা করেই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, বাজারের সভাপতি, সম্পাদক, সাবেক সভাপতি, বাজারের সকল ব্যবসায়ী, ইউপি সদস্য, এলাকার সুধী মহলসহ সিদ্ধান্ত হয় বাজারে উন্নত পরিসরে এবং সম্পূর্ণ আধুনিক মডেলের একটি পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করা হবে। এই সিদ্ধান্ত ইউপি চেয়ারম্যান কর্তৃক অবগত করা হয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে। তিনিও সকলের সিদ্ধান্তে মতামত পোষণ করেন এবং সরকারি অর্থায়নে পাবলিক টয়লেটের কাজ করার সিদ্ধান্ত হয়। যেখানে পাবলিক টয়লেট করা হবে সে জায়গাটি বাজারের একটি পরিত্যক্ত জায়গা এবং সরকারি সম্পত্তি। কিন্তু সবকিছু ঠিকঠাক মতো চললেও বাধা হয়ে দাঁড়ায় স্থানীয় যুবলীগের এক নেতা। যার কারণে এ নিয়ে এলাকায় যে কোনো সময় বড়ো ধরনের সংঘাত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। উপজেলাজুড়ে আলোচিত এ বিষয়টি হচ্ছে ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৫নং গুপটি ইউনিয়নের প্রসিদ্ধ গল্লাক বাজারে।
জানা যায়, বাজারটির বয়স আনুমানিক দুশ' বছর হলেও বাজারে নেই কোনো পাবলিক টয়লেট। ক্রেতা-বিক্রেতা, ব্যবসায়ী এবং বাজারে আগন্তুক মানুষের প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে কোনো পাবলিক টয়লেট না থাকায় বিপদে পড়তে হয়। এ কারণেই সকলের সিদ্ধান্তে বাজারের উত্তর-পূর্ব পাশে সরকারি একটি পরিত্যক্ত জায়গায় পাবলিক টয়লেট নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। উপজেলা প্রশাসন, চেয়ারম্যান ও বাজারের ব্যবসায়ীদের সিদ্ধান্তে সরকারি খরচে সেখানে পাবলিক টয়লেটের কাজ শুরু হয়। কিন্তু সাবেক আওয়ামী সরকারের আমলের দুর্নীতিবাজ যুবলীগ নেতা এবং এলাকায় আওয়ামী লীগের বিভিন্ন প্রোগ্রামের ডোনার শাহাবুদ্দিন জেলা এবং উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরে এই পাবলিক টয়লেট না করার জন্যে তদবির করে যাচ্ছেন।
এ বিষয়ে বাজারের সাবেক সভাপতি প্রবীণ ব্যবসায়ী আলহাজ্ব আব্দুল মান্নান বলেন, গল্লাক বাজার একটি প্রসিদ্ধ বাজার। বাজারে একটি পাবলিক টয়লেটের বিশেষ প্রয়োজন। যার কারণে চেয়ারম্যান এবং সকলের চেষ্টায় বর্তমানে সরকারিভাবে টয়লেট নির্মাণ হচ্ছে। কিন্তু বাজারের ব্যবসায়ী নয় এমন কয়েকজন এই টয়লেটের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। মূলত তারা বাজারের কেউ না।
মনু মিয়া, ইউসুফ, আমির হোসেন, আমিন, খোরশেদসহ অনেকে বলেন, বাজারে পাবলিক টয়লেট হওয়া খুবই জরুরি। বর্তমানে যেখানে টয়লেট নির্মাণ করা হচ্ছে, সেটাই উপযুক্ত জায়গা। কিন্তু যুবলীগের এক ফ্যাসিস্ট সেই জায়গা দখলে নিতে চায়। যার কারণে তিনি সেখানে টয়লেট না হওয়ার জন্যে বিভিন্নভাবে বাধা-বিঘ্ন করছেন। বিভিন্ন দপ্তরকে ভুল তথ্য দিয়ে এলাকার মানুষকে হয়রানি করছেন।
বাজারের সভাপতি আলহাজ্ব ইমাম হোসেন বলেন, গল্লাক বাজারে একটি পাবলিক টয়লেট হওয়া ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি। যার কারণে সকলের সিদ্ধান্তে এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সুপারিশে, সরকারি অর্থায়নে একটি পরিত্যক্ত সরকারি জায়গায় টয়লেটের কাজ চলছে। কিন্তু এলাকার এক ব্যক্তি এই সম্পত্তি নিজে দখলে নেয়ার জন্যে এই টয়লেটের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন এবং বিভিন্ন দপ্তরে ভুল তথ্য দিয়ে আমাদের হয়রানি করছেন।
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শাহজাহান পাটোয়ারী বলেন, যেখানে টয়লেট নির্মাণ হচ্ছে, সেটা একটি পরিত্যক্ত সরকারি জায়গা। সরকারি খরচে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সকলের সিদ্ধান্তে টয়লেটের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। কারো ব্যক্তিগত স্বার্থে এখানে টয়লেট নির্মাণ করা হয় না। এটা বাজার ব্যবসায়ী এবং সকলের প্রাণের দাবি বলে তিনি জানান।