প্রকাশ : ২৬ জুন ২০২৪, ১৬:৫৩
অতিরিক্ত বিলের কাগজ নিয়ে বিদ্যুৎ অফিসে গেলে মুহূর্তেই কমে যায় বিদ্যুৎ বিল
হ-য-ব-র-ল অবস্থায় চলছে ফরিদগঞ্জে বিদ্যুৎ অফিস
পল্লী বিদ্যৎ অফিসের কর্মকর্তাদের নিয়মিত ভাবে অতিরিক্ত রিডিং তোলার বিষয়ে ডি.জি.এম বললেন জনবল সংকটের কারনেই এমন ভোগান্তি
যাচ্ছে তাই অবস্থায় চলছে চাঁদপুর পল্লীবিদ্যৎ সমমিতি -২ ফরিদগঞ্জ অফিসের ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমে। প্রতিমাসেই মিটারে ওঠা নির্ধারিত রিডিং এর চাইতে অতিরিক্ত রিডিং তোলার কারণে অধিকাংশ গ্রাহকই প্রতিমাসে গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল। সচেতন যে ক'জন গ্রাহক বিদ্যুৎ বিল হাতে পাওয়ার পর মিটারের রিডিংয়ের সাথে মিলিয়ে অতিরিক্ত বিল দেখতে পেয়ে বিদ্যুৎ অফিসে এসে বিল প্রস্তুতকারক কাউকে বললেই কোন প্রকার যাচাই-বাছাই ছাড়াই মহুর্তেই পাল্টে দিচ্ছেন বিদ্যুৎ বিল। এর মধ্যে কোন কোন বিলের কাগজে ২০ ইউনিট থেকে একশত ইউনিট পর্যন্ত কমে গিয়ে বিল কমে যাচ্ছে শত টাকা থেকে হাজারের অধিক টাকা পর্যন্ত।
নিজের মিটারে উল্লেখিত ইউনিটের সাথে বিলের কাগজের অতিরিক্ত একশ ইউনিটেরও বেশি পার্থক্য দেখতে পেয়ে বুধবার (২৬ জুন) সকালে বিলের কাগজ নিয়ে বিদ্যুৎ অফিসে ছুটে যান ফরিদগঞ্জ পৌরসভার বাসস্ট্যান্ড এলাকার কনফেকশনারি দোকানদার আব্দুল আলী পাওয়ারী । বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে বলতেই ১২৪৫ ইউনিটের উল্লেখিত ৫৫৩৮ টাকার বিলের কাগজ হয়ে যায় ১১০০ ইউনিটে ৩৩৬৭ টাকা।
মহুর্তেই একই অভিযোগ নিয়ে আসতে দেখা যায় উপজেলার বিভিন্ন একালার বেশ কয়েকজনকে। চাঁদপুর কন্ঠের এই প্রতিবেদকে ভুক্তভোগী মোহাম্মদ শরিফ হোসেন জানান, আমার মিটারে এখনকার ইউনিট ৫২০০। অথচ বিদ্যুৎ অফিসের লোক আরো কয়েকদিন আগেই রিডিং তুলেছে ৫২৩০। তবে কি রিডিং তোলার পর এতোদিন কি আমি বিদ্যুৎ ব্যবহার করিনি.? বরং বিলের কাগজে উল্লেখিত তখনকার বিলের চাইতেও এখন কম হয় কিভাবে....? এরপর এখানে আসার পর ওনারা বিল পরিবর্তন করে কমিয়ে দিয়েছে। এমন ঘটনা গত কয়েকমাসই ঘটে আসছে৷ যে মাসে সময় করে বিদ্যুৎ এসে বিল কমাতে পারি সেমাসে কম দিতে পারি নয়তো অতিরিক্ত পুরো বিলই দিতে হয়। আর বিদ্যুৎ অফিসে আসলে আসা যাওয়ায় ৬০ টাকা করে ১২০ টাকা খরচ করতে হয়। এরকম ভোগান্তি আমাদের আর কত পোহাতে হবে...?।
অপর ভুক্তভোগী আব্দুুল জব্বার বলেন, `আর মিটারে রিডিং কম উঠছে কিন্তু, বিলের কাগজে বেশি, এহন এখানে আইসা বলাতে বিল কমাই দিছে'। এরকম আগেও বহুতবার হইছে, বিলের কাগজ লই আইলে বিল কমাই দেয়। তাইলে বিদ্যুৎ অফিসের লেকরা দিনের পর দিন ভুল করি আমাগোরে কিল্লাই ভোগান্তিতে হালায়।
ভিন্ন অভিযোগ নিয়ে আসা আরো কয়েকজন জানান, বিদ্যুৎ অফিসের লোক রিডিং তুলতেই যাননি। বিদ্যুৎ অফিসের মনগড় রিডিং তোলার কারনে আমাদের অতিরিক্ত বিল দিতে হচ্ছে। বিদ্যুৎ অফিসের এমন হযবরল ব্যবস্থাপনার কারনে জনমনে প্রশ্ন উঠছে তবে কি যারা মিটারের সাথে বিদ্যুৎ বিলের কাগজ মেলান না, তাদের কাছ থেকে কি মাসের পর মাস অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল আদায় করছে পল্লীবিদ্যুৎ অফিস....?
বিলের কাগজে অতিরিক্ত ইউনিট তুলে গ্রাহকদের এমন হয়রানির বিষয়ে কথা হয় বিদ্যুৎ অফিসের বিল প্রস্তুতকারক এক কর্মকর্তার সাথে। বয়োজ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রিডিং তোলার কারনে এমন সমস্যা হতে পারে। গ্রাহকরা সমস্যা নিয়ে আসলে আমরা পরিবর্তন করে দেই। কোন প্রকার ডকুমেন্টস ছাড়াই কেন পরিবর্তন করা হলো একাধিক বিলের কাগজ? এমন প্রশ্ন করতেই তিনি বলেন, এবিষয়ে আমি কিছু জানি না,বাকিসব ডিজিএম স্যার বলতে পারবেন।
চাঁদপুর পল্লীবিদ্যৎ সমমিতি - ২ ফরিদগঞ্জ অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডি.জি.এম) মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, পল্লীবিদ্যৎ সমিতির যথেষ্ট জনবল সংকট রয়েছে। জনবল সংকটের কারনে বয়োজ্যেষ্ঠ কয়েকজনকে দিয়ে কাজ করানোর কারনে এমন মিসিংগুলো হচ্ছে। চাঁদপুর পল্লিবিদ্যুৎ অফিস আমাদের জনবল নিয়োগ দিলেও এখন পর্যন্ত মাঠ পর্যায়ে কাজে লাগানোর জন্য আমরা তাদের পাইনি।
সংশ্লিষ্ট কর্মী ভুল রিডিং তোলার পর অতিরিক্ত বিলের কাগজ নিয়ে বিদ্যুৎ অফিসে আসার সাথে সাথে বিল প্রস্তুতকারকে বললেই কোন প্রকার যাচাই-বাছাই না করে বিল কমিয়ে সংশোধিত বিল দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,জুন আমাদের ক্লোজিং মাস, অফিসের সকল কর্মকর্তাদের প্রচুর কাজের পেশার যাচ্ছে, অন্য সময় হলে আরা যাচাই বাচাই করেই বিলের কাগজ সংশোধন করা হতো। যেহুতু অনেক আগে থেকে গ্রাহকদের এমন অভিযোগ। পল্লীবিদ্যুৎ গ্রাহকদের চলমান ভোগান্তুি লাঘবে তিনি কোন ব্যবস্থা পর্বে গ্রহণ করেছেন কিনা কিংবা করবেন কিনা এবিষয়ে জিজ্ঞেস করতেই তিনি বলেন, `আমারা যথাযথ জনবল পেলে এধরনের সমস্যাগুলো আর হবে না'।