প্রকাশ : ০৭ আগস্ট ২০২২, ২০:৪৫
বাগাদী ভূমি কর্মকর্তা আলমগীরের কাণ্ড
জমি খারিজের নামে হাতিয়ে নিলেন বিপুল পরিমাণ টাকা
অফিস সহকারী টাকার কথা স্বীকার করলেও ভূমি কর্মকর্তার অস্বীকার
জমি খারিজের নাম করে ২/৩ জন ব্যক্তির কাছ থেকে প্রায় ৩২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিলেন চাঁদপুর সদরের বাগাদী ইউনিয়নের ভূমি কর্মকর্তা আলমগীর আলম। যেখানে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী জমি খারিজ করতে ১১৭০ টাকা করে ফি লাগে। সেখানে এই কর্মকর্তা ২/৩ জনের কাছে প্রায় ৩২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এরমধ্যে বাগাদী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আব্দুর রব গাজী,র কাছ থেকে নিয়েছেন নগদ ১০ হাজার এবং ইসমাইল মজুমদারের কাছ থেকে ২০ টাকা নেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও নজরুল নামের অপর ব্যক্তির কাছ থেকেও একইভাবে নগদ কয়েক হাজার টাকা নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। সরকারি এই ভূমি অফিসের মুল ফটকে "আমার অফিস দুর্নীতি মুক্ত" এমন কথা বড় অক্ষরে লেখা থাকলেও বাস্তবতার সাথে তার কোন মিল নেই।
|আরো খবর
জানা যায়,কয়েকমাস পূর্বে বাগাদী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আব্দুর রব গাজী বাগাদী ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যান জমি খারিজের জন্য। তখন অফিস সহকারী সেলিম তার কাছে ২০ হাজার টাকা দাবি করে। বিষয়টি তিনি ভূমি কর্মকর্তা আলমগীর আলমকে জানালে তিনি বলেন, আপনার এলাকারইতো লোক। তখন এক পর্যায়ে রব গাজীর সাথে সেলিমের ১২ হাজার টাকায় রাফাদফা হয়। একইভাবে ওই ইউনিয়নের বাসিন্দা ইসমাইল মজুমদারের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন ভূমি কর্মকর্তা আলমগীর জমি খারিজরের বাবদ। এছাড়াও আরো একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে ভূমি কর্মকর্তা আলমগীরের বিরুদ্ধে । এলাকাবাসীর অভিযোগ ভূমি কর্মকর্তা আলমগীর অত্যন্ত চতুর মানুষ। তিনি সরাসরি টাকার লেনদেন না করে তার অফিসের কর্মচারীদের মাধ্যমে টাকা চেয়ে নেন এবং লেনদেন করে থাকেন। ইউনিয়নবাসীর একাধিক অভিযোগ সে টাকা ছাড়া কোন ফাইলে তিনি সই করেন না। অথচ ভূমি অফিসে ঢুকতেই অফিসের প্রবেশ মুখে চোখে পড়ে বড় অক্ষরে লেখা এই অফিস দুর্নীতি মুক্ত। পাশাপাশি জমি খারিজসহ অন্যান্য কাজে সরকারি যে ফিস রয়েছে তার তালিকাও সাঁটানো রয়েছে। এ বিষয়ে আব্দুর রব গাজী বলেন, আমি প্রায় ৫ মাস আগে জমি খারিজের জন্য ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যাই। সেখানে অফিস সহকারী সেলিম আমার কাছে ২০ হাজার টাকা দাবী করেন। তখন আমি বিষয়টি ভূমি কর্মকর্তা আলমগীর সাহেবকে জানালে, তিনি বলেন দেন আপনার এলাকারইতো লোক।পরে আমার সাথে ১২ হাজার টাকার কথা হয়।
এ বিষয়ে অফিস সহকারী সেলিম বলেন, আমি রব গাজীর কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা নিয়েছি এটি সত্য। এখন উনি যদি চায় প্রয়োজন হলে আমার কাছ থেকে টাকা দিয়ে দিবো। ভাই টাকা আমি একা নেই নাই। সাথে সাথে আমি ভূমি কর্মকর্তা আলমগীর সাহেবকে টাকা বুঝিয়ে দিয়েছি। আমাদের অফিসের মেয়েটার সামনে উনাকে টাকা দিয়েছি। ইসমাইল মজুমদারের কাছ থেকে যে টাকা নিয়েছি, সেটাও আমি ওনাকে বুঝিয়ে দিয়েছি। সব অফিসের খাতায় লেখা আছে।
অফিস সহকারী সেলিম এমন অনিয়মের কথা স্বীকার করলেও ভূমি কর্মকর্তা আলমগীর আলম নিজের দুর্ণিতী ঢাকতে টাকার কথা অস্বীকার করে বলেন,আমি এই বিষয়ে কিছুই জানিনা। এই বিষয়টি আমার স্টাফ সেলিম ডিল করছ। সে মানুষের কাছে টাকা চেয়ে নেয়। এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন চৌধুরী বলেন,যার কাছ থেকে টাকা নিয়েছে, তাকে অভিযোগ করতে বলেন। ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগ পেলে আমরা ব্যবস্থা নিবো। এছাড়া আমি এখন কিছুই বলতে পারবো না।