ঘুষের লেনদেনের বিস্তারিত

অভিযোগ অনুযায়ী, চুক্তি অনুযায়ী, ১০০ কোটি টাকা নগদ পরিশোধ করা হয়েছে এবং বাকি ১০০ কোটি টাকা চেয়ারম্যান পদে যোগদানের পর দুর্নীতির মাধ্যমে আয় করে পরিশোধের কথা ছিল। একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেনের বিতর্কিত অতীত

ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকাকালীন সময়ে বড় ধরনের দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে:

• কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানী (CPGCBL)-এর চেয়ারম্যান থাকাকালীন দুর্নীতি:

  মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ প্রকল্পে ঠিকাদার নিয়োগে দুর্নীতি ও ব্যয় বাড়িয়ে অর্থ আত্মসাৎ। সরকারি সম্পত্তি, যেমন তামার তার ও স্ক্র্যাপ, নিলাম ছাড়াই বিক্রি করে অর্থ আত্মসাৎ।

• বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের এমডি থাকাকালীন দুর্নীতি ও অনিয়ম:

  বিশ্বব্যাংক থেকে ৩০৪ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হলেও তার একটি বড় অংশ আত্মসাৎ। সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের তদন্ত প্রতিবেদনেও তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট প্রমাণ মিলেছিল।

• স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব থাকাকালীন দুর্নীতি:

  পুলিশ প্রশাসনে বদলি ও পোস্টিং বাণিজ্য করে শত শত কোটি টাকার বাণিজ্য। অর্থের বিনিময়ে পছন্দের কর্মকর্তাদের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়ে সিন্ডিকেট গঠন।

বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগ

দুর্নীতির মূলোৎপাটনের দায়িত্বে থাকা একটি প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পদে এমন সুনির্দিষ্ট অভিযোগযুক্ত ব্যক্তিকে নিয়োগ দেওয়া হলে তা জাতির জন্য একটি অশনি সংকেত বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, দুদকের মতো একটি সংস্থাকে সব প্রশ্নের ঊর্ধ্বে রাখা জরুরি। যদি নিয়োগ প্রক্রিয়াতেই দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে, তাহলে সেই প্রতিষ্ঠান জনগণের আস্থা ধরে রাখতে ব্যর্থ হবে।

নিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন

এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় অন্তর্বর্তী সরকারের স্বচ্ছতা এবং দুর্নীতিবিরোধী অভিযান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেনের অতীত কর্মকাণ্ডের অভিযোগগুলোর একটি স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে আসল সত্য উন্মোচনের দাবি জানিয়েছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। অন্তর্বর্তী সরকার এই বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেবে, সেদিকেই এখন তাকিয়ে আছে পুরো দেশ।