প্রকাশ : ১৪ জুন ২০২২, ০০:০০
ফরিদগঞ্জে মতবিনিময় সভায় জেলা ও দায়রা জজ এস. এম. জিয়াউর রহমান
মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে সকলে মিলে লিগ্যাল এইডের কার্যক্রমকে সফলতার পথে এগিয়ে নেবো

‘বিনা খরচে নিন আইনি সহায়তা শেখ হাসিনার সরকার দিচ্ছে এই নিশ্চয়তা’ এমন স্লোগানে উপজেলা লিগ্যাল এইড কমিটির আয়োজনে আইনগত সহায়তা কার্যক্রম বিস্তারে এবং উদ্বুদ্ধকরণ ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকেলে ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত এই সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা ও দায়রা জজ এবং জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান এস.এম. জিয়াউর রহমান।
|আরো খবর
তিনি তার বক্তব্যে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সোনার বাংলার যেই স্বপ্ন দেখেছেন, তার মধ্যে একটি হলো মানুষের মৌলিক অধিকার সমূহ নিশ্চিত করা। এর অন্যতম হলো আইনগত সহায়তা নিশ্চিত করা। বর্তমান সরকার তথা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা নিপীড়িত নির্যাতিত এবং আর্থিকভাবে অক্ষম এমন লোকজনকে তাদের আইনী অধিকার নিশ্চিত করার জন্যে লিগ্যাল এইড সার্ভিস চালু করেন। প্রথমে জেলা লিগ্যাল এইড কমিটি গঠন করেন। পরে এই কার্যক্রমকে আরো গতিশীল এবং কার্যকর করতে আইন সংশোধন করে উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। আমরা আজ জেলার বাইরে প্রথমে ফরিদগঞ্জ উপজেলা পর্যায়ে এসেছি উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে লিগ্যাল এইড কার্যক্রমকে ছড়িয়ে দেয়ার মাধ্যমে কার্যক্রমে গতিশীলতা বৃদ্ধি করতে।
তিনি বলেন, আমরা একটি মানবিক রাষ্ট্র চাই। যেখানে সকল মানুষের অধিকার নিশ্চিত হবে। সরকার জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্যে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনির মাধ্যমে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতাসহ নানা ভাতা প্রদান করে সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে এগিয়ে নিয়ে আসছে। একইভাবে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী যারা আর্থিকভাবে অসমর্থ্য তাদের আইনী অধিকার নিশ্চিত করতেই এই লিগ্যাল এইড সার্ভিস। জেলা পর্যায়ে লিগ্যাল এইড কমিটি জেলা জজের নেতৃত্বে মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে কাজ করছে। কিন্তু আমরা উপজেলা ও ইাউনিয়ন পর্যায় থেকে তেমনভাবে সাড়া পাচ্ছি না। তৃণমূল পর্যায়ে লিগ্যাল এইডের কার্যক্রম ও এর পরিধি ছড়িয়ে দিতে আমরা এই মতবিনিময় সভা করছি।
তিনি আরো বলেন, অনেকেরই ধারণা লিগ্যাল এইডের মাধ্যমে শুধু মামলা করার প্রক্রিয়া হয়, তা ভুল। এই সার্ভিসের মধ্যেই মামলার পূর্বে নিস্পত্তিযোগ্য অভিযোগগুলো আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের জন্য জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার প্রতিনিয়ত কাজ করে চলছেন। আমাদের জেলাতেই তা অব্যাহত রয়েছে। আশা করছি মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে আমরা সকলে মিলে লিগ্যাল এইডের কার্যক্রমকে সফলতার পথে এগিয়ে নেবো।
তিনি বলেন, আমরা যদি কল্যাণকর বাস্তব পরিকল্পনা করতে পারি তাহলে লিগ্যাল এইডের কোনো বিকল্প নেই। প্রথমে আমাদের লিগ্যাল এইডের কী তার কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে হবে। আমরা ফরিদগঞ্জ উপজেলা দিয়ে লিগ্যাল এইডের কার্যক্রম শুরু করেছি। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের কাছে যে সকল মামলা আসে সেটা দেওয়ানী মামলা হোক বা ফৌজদারি মামলা হোক আপনারা তাদের সুন্দর পরামর্শ দিবেন। আপনি যে ব্যক্তিই হোন না কেনো যখন বিচারকের আসনে বসবেন, তা নিরপেক্ষতার সাথে বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। এক কথায় বিচারকগণের কাছে মানুষের আস্থা তৈরি হবে, আপনাদের সকলের প্রচেষ্টায় আমরা সোনার বাংলা গড়ে তুলতে পারবো।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডঃ জাহিদুল ইসলাম রোমানের সভাপতিত্বে ও সিনিয়র সহকারী দায়রা জজ এবং জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার সাকিব হোসেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জেলা চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শামছুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নাছির উদ্দিন সরওয়ার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাজীগঞ্জ সার্কেল) সোহেল মাহমুদ, ফরিদগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাসলিমুন নেছা, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডঃ কামাল উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন, পিপি অ্যাডঃ রনজিত রায় চৌধুরী, নারী ও শিশু নির্যাতন টাইব্যুনালের স্পেশাল পিপি অ্যাডঃ সাইয়েদুল ইসলাম বাবু, সরকারি কৌঁসূলি অ্যাডঃ আব্দুর রহমান, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জিএস তছলিম, ৮নং পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত বিএসসি, ৬নং গুপ্টি পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বুলবুল আহমেদ, শিক্ষক রাজিয়া সুলতানা এবং ৮নং পাইকপাড়া ১নং ওয়ার্ডের ইউপি জসিম উদ্দিন পাঠান।
মতবিনিময় সভায় জেলা বিচার বিভাগের বিভিন্ন কর্মকর্তা, জেলা আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দ, উপজেলা বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, সচিব ও সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।