প্রকাশ : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১১:৫০
রক্তে কোলেস্টেরল ও ক্ষতিকর প্রভাব
রক্ত হচ্ছে মানবদেহের অতি আবশ্যকীয় জীবন-তরল। যা দেহের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে অক্সিজেন, হরমোন, খাদ্যসার ও রাসায়নিক উপাদান বহন করে নিয়ে যায় এবং বিভিন্ন কোষে উৎপন্ন বর্জ্য কার্বন ডাই-অক্সাইড ও রেচন ক্রিয়ার ফলে জাত নাইট্রোজেনজনিত ক্ষতিকর পদার্থকে দেহ হতে বহিষ্কারে অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে। রক্তের মধ্যে মিশ্রিত অবস্থায় এক ধরনের চর্বিজাতীয় পদার্থ থাকে, যা লাইপোপ্রোটিনের সহযোগে বাহিত হয়। এদেরকে কোলেস্টেরল নামে অভিহিত করা হয়।
|আরো খবর
কোলেস্টেরলের প্রকারভেদ ও স্বাভাবিক মাত্রা
রক্তে টোটাল কোলেস্টেরল, ট্রাই গ্লিসারাইড, কম ঘনত্বের লাইপোপ্রোটিন, অতি কম ঘনত্বের লাইপোপ্রোটিন এবং উচ্চ ঘনত্বের লাইপোপ্রোটিন নামে বিভিন্ন কোলেস্টেরল ও কোলেস্টেরাইল এস্টার বিদ্যমান।
* কোলেস্টেরল : স্বাভাবিক মাত্রা ১৫০-২০০ মিগ্রা/ডেসিলিটার রক্ত
* ট্রাই গ্লিসারাইড : ২০০ মিগ্রা/ডেসিলিটার রক্ত
* এলডিএল : ১০০ মিগ্রা/ডেসিলিটার রক্ত
* ভিএলডিএল : ৪-৩০ মিগ্রা/ডেসিলিটার রক্ত
* এইচডিএল : ৫০-৬০ মিগ্রা/ডেসিলিটার রক্ত
রক্তে কোলেস্টেরল বৃদ্ধির কারণ :
* অতিরিক্ত মেদবাহুল্য ও অতি ওজনের দেহাবয়ব
* শারীরিক পরিশ্রমহীনতা ও আলস্য
* অতি আহারের প্রবৃত্তি এবং পুষ্টিমানহীন অস্বাস্থ্যকর ডায়েট
* রেড মিট ও প্রাণিজ চর্বিসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ
* অতি উচ্চমাত্রার ননীযুক্ত দুগ্ধজাতীয় খাদ্যগ্রহণ
* আঁশযুক্ত খাদ্যগ্রহণে অনীহা ইত্যাদি।
রক্তে কোলেস্টেরলের মান বৃদ্ধির কুফল
* রক্তনালীর অভ্যন্তর গাত্রে প্ল্যাক জমা
* চর্বির দলা বা অ্যামবোলাই তৈরি হওয়া
* হৃদপিণ্ডের রক্তনালীতে কোলেস্টেরল জমে রক্তনালী বস্নক হয়ে যাওয়া
* প্ল্যাক ছুটে গিয়ে ছোট ছোট রক্তনালী আটকে দেয়া
* অল্প দৈহিক পরিশ্রমে ক্লান্তি তৈরি হওয়া
* প্রত্যন্ত অঞ্চলে রক্তের পরিসঞ্চালন হ্রাস পাওয়া
রক্তে কোলেস্টরলের মান বৃদ্ধির পরিণতি :
* হার্ট অ্যাটাক
* ইশকেমিক হার্ট ডিজিজ। যেমন : অ্যানজাইনা পেকটোরিস, আনস্টেবল অ্যানজাইনা ও মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশান
* কার্ডিয়াক টিস্যু নেক্রোসিস
* ব্রেইন স্ট্রোক
* উচ্চরক্তচাপ ও রক্তনালী ছিঁড়ে গিয়ে রক্তক্ষরণ
* কিডনী ফেইলিওর
* মৃত্যুরক্তে কোলেস্টেরল বৃদ্ধিতে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা
* হাইপো থাইরয়েডিজম
* ডায়াবেটিস
* করোনারী আর্টারি ডিজিজ
* রেনাল আর্টারি ডিজিজ
* অবেসিটিঝুঁকিপূর্ণ অভ্যাস
* অ্যালকোহল সেবন
* তামাক ও ধূমপান সেবন
* শারীরিক পরিশ্রমহীনতাযে সকল খাদ্য কোলেস্টেরল বাড়ায়
* রেড মিট
* বড় বড় চিংড়ি মাছ
* নারিকেল
* উচ্চমাত্রার ননীযুক্ত দুগ্ধজাতীয় খাদ্য
* সরিষার তৈল
* ডিমের কুসুম
যে সকল খাদ্য কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস করে
* সীম জাতীয় খাদ্য
* বাদাম
* সামুদ্রিক মাছ
* কড লিভার অয়েল
* ইলিশ মাছের তেল
* জলপাই তেল, সয়াবিন তেল, সূর্যমুখী তেলকোলেস্টেরলের উচ্চমাত্রা হতে বাঁচার উপায়
* শারীরিক পরিশ্রম
* দিনে তিরিশ মিনিট হাঁটা
* সপ্তাহে কমপক্ষে সাতদিন না পারলেও তিনদিনের বেশি হাঁটা।
* ফাইবারসমৃদ্ধ খাদ্যগ্রহণ যেমন : সীম, ওট ইত্যাদি
* দৈনিক নিয়মিত পঞ্চাশ গ্রাম বাদাম খাওয়া
* সামুদ্রিক মাছ ও মাছের তেল গ্রহণে প্রবণতা বৃদ্ধি।