প্রকাশ : ২৪ মে ২০২২, ০০:০০
পরিবেশবান্ধব বাহন হিসেবে সাইকেল সারা পৃথিবীতেই জনপ্রিয়। একই সঙ্গে এটি স্বাস্থ্যসম্মত ও সাশ্রয়ী। এছাড়া নগরে যানজটের ভোগান্তি থেকে বাঁচতেও সাইকেলের জুড়ি নেই। আর বর্তমান করোনা প্রেক্ষাপটে গণপরিবহন এড়াতে সাইকেল হতে পারে ব্যক্তিগত বন্ধুবাহন। অবশ্য নগরে স্বাস্থ্যসচেতন অনেকেই যাতায়াতে নিয়মিত সাইকেল ব্যবহার করছেন। বিশেষ করে তরুণদের সাইকেল ব্যবহারে আগ্রহ বেশি লক্ষণীয়।
সাইকেলে শারীরিক ব্যায়াম বিষয়ে ডাঃ শাহনেওয়াজ বলেন, নিয়মিত ব্যায়াম সুস্থ থাকার অন্যতম শর্ত। আর সাইকেল চালালে একজন মানুষের শারীরিক ব্যায়াম করা হয়।
আজকাল সাইকেল নিয়ে বিভিন্ন সংগঠন আছে। এসব সংগঠনের উদ্যোগে মানুষকে সাইকেল ব্যবহারে উৎসাহ জোগাতে বিভিন্ন আয়োজনও করা হয়। এছাড়া এসব সংগঠনের সদস্যরা নিয়মিত সাইকেলে যাতায়াতসহ মাঝে মধ্যেই সাইকেল ভ্রমণে বেরিয়ে পড়েন। তেমনই একটি সংগঠন ঢাকা সাইক্লিং ক্লাব। এটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৯৩ সালে।
এ ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রবিউল হাসান খান মনা বলেন, আসলে সাইকেল অতি প্রয়োজনীয় একটি বাহন। এটি ব্যবহারে বহুবিদ উপকার আছে। যেমন সময় ও খরচ বাঁচে, যানজট এড়ানো যায়, অন্যদিকে শরীরের ব্যায়াম ও পরিবেশেরও উপকার হয়। এছাড়া গণপরিবহনের বিপরীতে সাইকেল একটা স্বাধীন বাহন। সব মিলিয়ে সাইকেল ব্যবহারে মানুষের উপকারই বেশি। সেজন্য মানুষকে সাইকেল ব্যবহারে উৎসাহিত করতে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে। আর বিভিন্ন অফিসে বিনামূল্যে সাইকেল রাখার ব্যবস্থাও করা যেতে পারে।
ভ্রমণবিষয়ক সংগঠন ভ্রমণ বাংলাদেশের উদ্যোগেও বিভিন্ন সময় সাইকেলে দেশ ভ্রমণের আয়োজন করা হয়। ১৯৯৯ সালে সংগঠনটি প্রতিষ্ঠিত। সংগঠন বর্তমান সভাপতি আরশাদ হোসেন টুটুল বলেন, সাইকেল ব্যবহারে নানাবিধ উপকারের পাশাপাশি অ্যাডভেঞ্চারও হয়ে থাকে। বিভিন্ন সময় সাইকেলে দেশ ভ্রমণের আয়োজনের মাধ্যমে আমরা এ বিষয়ে মানুষকে উৎসাহ দিয়ে থাকি।
পুরান ঢাকার বংশালের মাস্টার সাইকেল ও ধানমন্ডির এআর প্লাজার মাস্টার হুইলের স্বত্বাধিকারী আরিফ আহমেদ বলেন, সাইকেলের প্রতি মানুষের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। বিশেষ করে তরুণদের আগ্রহ লক্ষণীয়। আর করোনার এ সময়ে আগের তুলনায় বিক্রি বেড়েছে। তবে সরকারিভাবে সাইকেলে ট্যাক্স কমিয়ে দিলে এর দাম কমবে। ফলে সাধারণ মানুষ সাইকেল ব্যবহারে আরও উদ্বুদ্ধ হবেন।
সাধারণত দুই ধরনের সাইকেল বাজারে পাওয়া যায়। রোডবাইক ও মাউন্টেনবাইক। সাধারণ চলাচলের জন্য রোডবাইক। আর যারা সাইকেলে ঘুরতে চান বা অ্যাডভেঞ্চারে আগ্রহী, তাদের পছন্দ মাউন্টেনবাইক।
মাস্টার সাইকেল ও মাস্টার হুইলের আরিফ আহমেদ বলেন, বর্তমানে বাজারে বাংলাদেশি ব্র্যান্ড মেঘনা গ্রুপের ভেলোস, আরএফএলের দুরন্ত, চায়নার মুসতাং, বানচি ও আমেরিকান ট্রেক সাইকেলগুলোর চাহিদা বেশি। এছাড়াও বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সাইকেল বাজারে পাওয়া যায়। ব্র্যান্ড ভেদে সাধারণত রোডবাইকের দাম ৬ হাজার থেকে শুরু। আর মাউন্টেনবাইক শুরু ১০ হাজার থেকে। এরপর লাখ টাকার ওপরেও মিলবে এসব সাইকেলের দাম।
দেশে সাইকেলের সবচেয়ে বেশি দোকান আছে পুরান ঢাকার বংশালে। এছাড়াও বিভিন্ন স্থানে মিলবে সাইকেলের দোকান।
দিনে বা রাতে সাইকেল ব্যবহার করলে নিরাপত্তার স্বার্থে হেলমেট, হ্যান্ডগ্লাভস, বেল, ফ্রন্টলাইট, স্ট্যান্ড থাকাটা জরুরি। আর পানির জন্য, বটলকেস, পথ মাপার জন্য মিটার রাখা যেতে পারে। এছাড়া পথে নিয়ম মেনেই সাইকেল চালানো উচিত। আর ফুটপাত দিয়ে সাইকেল চালানো মোটেই ঠিক নয়।
* সুচিন্তা বিভাগে লেখা পাঠানোর ই-মেইল : [email protected]