প্রকাশ : ০২ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০
কবিতা হলো মানুষের জ্ঞান-দর্শনের দর্পণস্বরূপ। সাহিত্যের প্রথম ও প্রধান মাধ্যমই হলো কবিতা। কবিতার প্রতি ভালোবাসা থেকেই একজন কবি কবিতা লেখেন। কবিতা দিয়ে একজন কবি তার মনের আঙ্গিনার লুকানো কথাগুলো ছন্দের তালে তালে প্রকাশ করেন। আমি কবিতা লেখি ‘নিজের ভালো লাগা থেকে’। যখন আমি গভীর চিন্তা-চেতনায় মগ্ন হয়ে পড়ি কিংবা সপ্তাচার্যের মতো আমার মনের মধ্যে দার্শনিক চেতনার উদ্ভব ঘটে ঠিক তখনই আমি কবিতা লিখতে বাধ্য হয়। একজন পাঠক কবিতা পড়ার মাধ্যমে স্বর্গের উদ্যান ঘুরে আসতে পারে অথবা কবিতা পাঠের মাধ্যমে নিজের ভাবগাম্ভীর্য প্রকাশ করতে পারে। তাই, আমি চাই পাঠকরা আমার কবিতা পড়ুক এবং কবিতার মাধ্যমেই আমি অমর হতে চাই।
জাগিনী, তার ডাকে
যদি তার ডাকে সাড়া দিতাম
যদি রাত্রির ঘুম ভেঙ্গে,
তাকে বলতাম, তোমায় ভালোবাসি।
তাহলে দেহনদীর তরঙ্গজল
হৃদয়কে ক্ষত করতো,
চুরমার হতো হৃদয়ের সাজানো আঙ্গিনা।
তবুও তো ভালোবাসা হতো
কিংবা একটু-আধটু প্রেম হতো।
যদি ঘুমের-ঘোরে জেগে উঠতাম,
তাহলে নিংড়ে যাওয়া প্রেম ফিরে পেতাম।
সমাপ্ত হতো না আমার প্রেমের উপাখ্যান
কিংবা, জারুলফুলের ঘ্রাণ
আমাকে বলতো না-
‘এটাই কী তোমার প্রেম’।
সে
তাকে নিয়ে অনেক লেখার ইচ্ছে ছিল
কিন্তু লেখা হলো না,
তাকে অনেক ভালোবাসার ইচ্ছে ছিল
কিন্তু সে আমার কাছে আসেনি।
সে ছিল আমার স্বপ্নের সমুদ্রবিলাস
যার মায়াবেনী স্রোত দেখার খুব ইচ্ছে ছিলো।
সে ছিলো আমার পূর্ণিমার চাঁদ
যে আমাকে আলো দিতো রাত জেগে।
সে ছিলো আমার শ্রাবণ-ধারার রিমিঝিম বৃষ্টি
যাকে দেখতাম মেঘময় আকাশের বেলকনিতে।
সে ছিলো আমার রৌদ্রভেজা মেঘলা আকাশ
যে আকাশতলে হতো দুজনের আলিঙ্গন।
সে ছিলো আমার লুকানো কান্নার জল
যে জল চোখে লুকিয়ে, তাকে নিয়ে হাসতাম।
সে ছিলো আমার হৃদয় ভূ-খণ্ডের নৈসর্গিক পাহাড়
যে পাহাড়ের সুড়ঙ্গ দিয়ে দুজনে চলতাম প্রেমের স্বর্গে।
সে ছিলো আমার লেখা একটি কবিতা
এক নদী, এক সাগরকে সাক্ষী রেখে
যে কবিতার নাম দিয়েছি ‘সে’।
ভালোবাসা
ভাবছি, ঘৃণার বিপরীতে
একগুচ্ছ ভালোবাসা দিব,
সাক্ষী রবে শতাব্দীর ইতিহাস।
হাতে হাত রেখে
ভালোবাসা দিব
কিংবা,
ভালোবাসা খুঁজবো
মনের লুকানো
নখদর্পণে।
এখন,
ভালোবাসাশূন্য
কিংবা,
কাকতালীয় স্মৃতি।
যাই হোক,
ঘৃণার বিপরীতে
নির্বাক জীবনে,
ভালোবাসা আসুক
বসন্ত আবরণে।
শোক
শোকের মাঝে বেঁচে থাকা নয়,
টুকরো-টুকরো, ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন
মনের দুঃখগুলো এখন-
জীবন-প্রোথিত শোকে পরিণত।
আমার হৃদয় এখন-
নিরেট-অন্ধকারে নিমজ্জিত।
দামোদর নদীর মতো প্রবহমান
কিংবা, পিঠ ঠেকানো দেয়াল।
শোক তো নয়
যেনো সক্রেটিসের বিষ
পই পই করে,
আমাকে নিস্তেজ করছে
শোকের মরণকাব্যে।
উপকার
শতত আপনার উপকার, মনে থাকবে বারবার,
মনের শঠতা মিশিয়ে খুলে যাক অবিনাশী দুয়ার।
সুখি হোক আপনার জীবন এই ধরনীর মাঝে,
বসন্ত আসবে, বসন্ত যাবে রঙিন রঙ্গন সাজে।
আপনার জন্য কাঁদিবে একদিন এই ললাট ভুবন
আমিও কাঁদবো ভিজাবো মোর এই দুটি নয়ন।
আমি একদিন হয়েছি আপনার দুয়ারের ভিখারী,
খালি হাতে ফিরান নাই, ‘আমি কী তা ভুলিতে পারি’।
আমি ক্ষুধার্ত কাঙাল আর আপনি জীবন সারথি
একদিন আপনার জন্য কাঁদিবে এই বিশ্ব জাতি।
শতত আপনার উপকার, মনে থাকবে বারবার
আপনার হাতে মুছে যাক যতো গ্লানি, যতো আঁধার।