বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২২ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জে সংবাদকর্মীর কন্যাকে অপহরণ চেষ্টায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের
  •   লক্ষ্মীপুরে মাদকসহ বাবা ও দুই ছেলে আটক
  •   চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন মামলার ৮ আসামী আটক
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার

প্রকাশ : ০৬ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০

সাহিত্য মেলা ও প্রাসঙ্গিক ভাবনা
মোখলেছুর রহমান ভূঁইয়া

স্বাধীন বাংলাদেশ তথা বিশ্বসাহিত্য ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় দিন উদযাপন করলো সাহিত্য-প্রেমীরা। পৃথিবীর কোথাও এরূপ মেলা হয়েছে কিনা তা আমার অগোচরে। সাবাশ বাংলাদেশ। একযোগে চৌষট্টি উপজেলার সাথে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলায় উদযাপন হলো সাহিত্য মেলা ২০২৩। বাংলাদেশের সোনালি অধ্যায়ে একযোগে মসজিদ ঘরবাড়ি সেতু নির্মাণ ও অন্যান্য জনহিতকর কর্ম সম্পাদন করে জনগণ ও বিশ্ববাসীর কাছে বর্তমান সরকারের অবস্থান জানান দিচ্ছে সগৌরবে। সাহিত্য মেলা একযোগে চৌষট্টি উপজেলায় উদযান স্বপ্নিল স্বপ্নের হাতছানি সাহিত্যপ্রিয়াসী বঙ্গবন্ধুর তনয়া শেখ হাসিনার আরেকটি গৌরবান্বিত অধ্যায়। এই সম্মেলন বিশ্ব সাহিত্যাঙ্গনে বাংলাদেশের সাহিত্য ইতিহাস ঐতিহ্য জানানোর ভূমিকা জোরালোভাবে অবতীর্ণ হলো। অন্য সাধারণ দিবসকে যেভাবে প্রচার করে গণমাধ্যম, সেই হিসেব কষে জাতীয় সাহিত্য মেলা নিয়ে প্রচার মাধ্যম যেন এখনো ঘুমের ঘোরে আছে। সোজাসাপ্টা ভাষায় বলা যায়, এটা সাহিত্যের দৈন্যতা। এই দৈন্যতা কাটিয়ে উঠার জন্যই সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় ও জাতীয় গ্রন্থ কেন্দ্রের সহযোগিতায় এবং বাংলা একাডেমির সমন্বয়ে উপজেলা পর্যায়ের প্রান্তিক সাহিত্য কলমপিয়াসীদের তুলে ধরার লক্ষ্যে এ এক অনবদ্য প্রয়াস।সাহিত্য মেলার ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে ‘জাতীয় বই মেলা’র ন্যায় সাহিত্য মেলার আসর সাজানো হবে আগামী কোন এক রৌদ্রছায়া দিবসে।

সাহিত্য হচ্ছে গোটা পৃথিবীর কর্মযজ্ঞ এক ছাতায় সম্মিলন করা। সাহিত্য কর্মযজ্ঞে পাতায় পাতায় অতীত বর্তমান ভবিষ্যৎ আয়নায় দেখা যায় জলস্থল আকাশের মহিমা। সাহিত্যের অক্ষরে অক্ষরে চলমান বিশ্ব মানব সভ্যতা। এই বিষয়ে হাজীগঞ্জ উপজেলা সাহিত্য মেলার প্রধান অতিথি সেক্টর কমান্ডার মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উওম বলেন, পৃথিবীতে লেখকদের অনবদ্য ভূমিকা সমাজ ব্যবস্থাকে পাল্টে দিয়েছে, তা আমরা শুনেছি, দেখেছি। আজকের প্রজন্ম বিখ্যাত লেখকদের বই পড়তে চায় না। সাহিত্যের কারণে পৃথিবীর দাসত্ববাদের পরিবর্তন হয়েছে। একজন লেখক কীভাবে লেখনীর মাধ্যমে দেশ ও জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে, এমন ঘটনা পৃথিবীতে অনেক আছে। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বিদ্রোহী কবি নজরুল ইসলামেরর লেখা আমাদের অনন্য শিখরে পৌঁছে দিয়েছে। জানতে হলে পড়তে হবে। জীবন সাজাতে, জীবন গড়তে, জীবনকে আনন্দময় রাখার জন্য বইয়ের বিকল্প বই। বইয়ের শব্দসম্ভার থেকে আরোহিত জ্ঞান দিয়ে যাপিত জীবনকে টেকসই করতে হবে। যে কোন সংকট সংশয় পরিত্রাণের উপায় খোঁজে পাওয়া যাবে বইয়ে পাতায় পাতায়। করণীয় শুধু বই পড়া। বই পড়ার চর্চা করা। নতুন প্রজন্মদের বইয়ের সংস্পর্শে আনার জন্য সাহিত্য মেলা উৎসাহমূলক বইপ্রেমী গড়ে তোলার এক দৃষ্টি আকর্ষিত প্রয়াস। নিয়মিত দৈনিক পত্রিকা পড়ার অভ্যাস করে চলমান বিশ্বকে জানার সাথে সাথে সাহিত্যের স্বাদ উপভোগ করা যায়।

জ্ঞানের প্রসারতায় প্রাপ্ত সঞ্চিত জ্ঞানকে জীবনমুখী চৌকস জ্ঞান দিয়ে তাৎক্ষণিক সমস্যা সমাধানের জন্য অনুসন্ধিৎসু ও উৎসাহমূলক জ্ঞাননির্ভর বক্তব্যে ড. আমিনুর রহমান সুলতান এক খামচি ও এক চিমটি এবং দু হাতের মাঝে লুকিয়ে রাখা পাখির জীবন নিয়ে রাখাল বালক ও রানীর কথ্য রচিত গল্পে উপস্থিত বুদ্ধিদীপ্ত কৌশলী ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে। সাহিত্যকর্মীদের ন্যায় শিক্ষার্থীরাও অনুপ্রাণিত-উৎসাহিত-উজ্জীবিত ড. আমিনুর রহমান সুলতানের শ্রুতিমধুর বক্তব্যে। তাঁর উপস্থিতি ও একান্ত সান্নিধ্যে আমি আনন্দিত উল্লসিত।

সাহিত্য মেলায় কবিতা মঞ্চে পাঠকৃত আমার ‘মহাকালের প্রণয়’ কবিতাটি দেখে এবং শোকাবহ আগস্ট নিয়ে একটি কবিতার শিরোনাম ‘নিশ্বাসে জাগ্রত’ নামকরণ করে ড. আমিনুর রহমান সুলতান আমার লেখনীর জগৎকে আরো উতরে দিলেন। যেমনটি সাহিত্যের উদ্গিরণ দিয়েছেন বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক প্রয়াত ড. শামসুজ্জামানখান।

সাহিত্য মেলার শুভেচ্ছা বক্তব্যে চাঁদপুর কণ্ঠের প্রধান সম্পাদক কাজী শাহাদাত বলেন, ব্যক্তিগতভাবে আমার কারো প্রতি মান-অভিমান-রাগ-অনুরাগ থাকতে পারে। কিন্তু কারোরই প্রতিভা বিকাশে অন্তরায়/প্রতিবন্ধকতা/বাধা সৃষ্টি করিনি। এখানেই সাহিত্যাদগ্ধ মনস্তাত্ত্বিক রূপ বিকশিত হয়েছে। এই দীক্ষা ধর্ম লালনের ফসল সাহিত্য মেলার উপস্থিতি ও উৎসবমুখর পরিবেশ। এ-ই বক্তব্যে প্রতিভাকে পরিস্ফুটিত করার দায়বদ্ধতা নিজ মনস্তাত্ত্বিক কাঁধে নিয়েছেন। যার ধারাবাহিকতা দৃশ্যমান চাঁদপুর শিল্প-সাহিত্য সমাজে। লিখতে থাকুন মনের মাধুরি মিশিয়ে। একদিন ধরা দিবে কবিতা, গল্প, সাহিত্যের ফুলদানি।

শিশু সাহিত্যিক আহমেদ রিয়াজ জীবনমুখী ছড়া পাঠে-চার পায়ের লেজ আছে, তেজ আছে। দু পায়ের লেজ নেই। তাই বলে কি দু পাওয়ালাদের তেজ নেই? হ্যাঁ, চাঁদপুরের সাহিত্যাঙ্গনের কলমণ্ডশৈলীদের তেজ আছে। সেই তেজস্ক্রিয়তায় জাতীয় সাহিত্য মহল অবরুদ্ধ।

সাহিত্য জননেষু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনবদ্য কর্মশালা ‘সাহিত্য মেলা’ রোদণ্ডবৃষ্টির আনন্দণ্ডহিল্লোল ধারাবাহিকতায় পেতে হলে কলমণ্ডসৈনিকদের ভাবনার জগতকে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে করণীয়তায় এগোতে হবে। এক যুগে, এক সুরে, একই রঙের আলপনায় আঁকতে হবে আগামী স্বপ্ন। তাহলেই রূপসি বাংলার মুখ, কলম ও কালির ছোঁয়ায় শিল্পীদের নিপুণতায় আগামী মধুর সন্ধিক্ষণে আড়ম্বরপূর্ণভাবে মুক্ত বিহংগে পালতোলা হাওয়ায় ঠেউয়ের ছন্দে ভরপুর রূপ-রস কবিতাণ্ডগল্প-প্রবন্ধের কারুকার্যে আনন্দে বিনোদনে উদযাপন হবে জাতীয় সাহিত্য মেলা। সেই প্রত্যাশায়।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়