প্রকাশ : ১৫ মে ২০২৩, ০০:০০
মৃগহরণ
বৃদ্ধা দাদির কাছে স্বপ্নের গল্প শুনতে শুনতে সে বেড়েছিলো। আর স্বপ্ন বুনতে বুনতে সে একদিন স্বপ্নের অধিকারে চলে যায়। ওর স্বপ্নে ছিলো গুচ্ছমেঘ, মৃদু নদী, ঝর্ণা ও বুনো-হরিণ। হরিণের পিছে ধেয়ে চলে দিন যেতো, ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়লে- ঘুমের মধ্যেও মৃদুস্বরে ওর কণ্ঠে বাজতো হরিণ হরিণ...
ওর মায়াময় আধো আধো-বোলে হরিণ পালাতে পারতো না।
এক দুর্ভেদ্য বেষ্টনির মাঝে সে আটকা পড়ে এবং বুঝতে শিখেনি যে, এটা বাস্তব জীবন নয়!
স্বপ্নবিকার থেকে মুক্ত করার জন্য ওকে অচেতন করা হতো, নানা শুশ্রƒষা চালানো হতো কিন্তু কিছুতেই ভিন্ন ফল আসেনি, বরং সে ঘুম ঘোরের মধ্যেই গুটি-পা’য় হরিণ হরিণ... বলে ছুটে চলায় মন দিতো! সব সেবা-চিকিৎসা অতিক্রম করে তাকে একদিন স্বপ্নের অধিকারে লীন হতে দেখি; যেখানে হরিণ-বন, পালাই পালাই চোখ আর নীলজলের প্রস্রবণ অনঙ্গ বাসনায় তান তোলে! সেই স্বপ্নিল বাসভূমে, সেই অধিমনলোকে ঠাঁই নেই বস্তু-ব্যসনের!
জলকাদর মঞ্জিল, চাঁদপুর। ০২.০২.২০১৬
***
চোখের অসুখ
চূড়ায় নেই মধু কিংবা মিষ্টান্ন স্বাদ
দৃশ্যে নেই বর্ণিল কোনো পুষ্পসাজ
নেই বাঁক, কম্পন মৃদৃ- পালকের ছোঁয়া
এমনকি নেই সুর, ছন্দণ্ডলহরী-
এপাশে ওপাশে বা নিচে;
তবু তন্বী মেয়েদের বুকে বসা আঁটোসাঁটো জোড়
মাংসগোলকের প্রতি বোকা ছেলেদের প্রাণছুট্ আকুলি-বিকুলি
দেখে অভিভূত আমি এই মতে ফিরি, বুঝি
যা কিছু সম্ভবে নতুন বয়সে কোলের বালিশ চেপে বুকে
আধোঘুমে, ওম জাগরণে- মোহময় স্বপ্নিল স্রোতে
তারপর, কেবলি সময়ের ফেরে- দিন যেতে যেতে
অভ্যস্ত অসুখে পেয়ে সে দেখে অকরুণ-অস্বাস্থ্যে ঝুলে আছে
বাড়ন্ত দেহের দোষ!
সুগোল সন্ধানে যে চোখ মাতাল ছিলো কাল
সেই চোখে পীড়া আজ, সেই চোখে পুঁজ!
স্বামীবাগ, ঢাকা। ১৫/০৫/২০২২