প্রকাশ : ২৮ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০
॥ পর্ব-৬॥
বিতর্ক বীক্ষণ, ডাঃ পীযূষ কান্তি বড়ুয়া এবং মুক্তা পীযূষ
চাঁদপুর বিতর্কের উর্বর ভূমি। সেই উর্বর ভূমিতে চট্টগ্রাম থেকে একটি পরিবার চাঁদপুরের স্থায়ী বাসিন্দাতে পরিণত হয়েছেন। তাঁরা হলেন ডাঃ পীযূষ কান্তি বড়ুয়া আংকেল এবং মুক্তা পীযূষ আন্টির পরিবার। বিতর্কের প্রশ্নে যাঁরা নিবেদিতপ্রাণ। পীযূষ আংকেল পঞ্চাশ বছর পার করলেন। আংকেলকে শুভেচ্ছা জানাই। আংকেলের সাথে আমার পরিচয় বিতর্কের মাধ্যমেই। একদিন চাঁদপুর কণ্ঠ-পাঞ্জেরী বির্তকের ড্রেস পরিহিত একটি ছবি ফেসবুকে শেয়ার করলে মুক্তা পীযূষ আন্টি কমেন্ট করেন ‘তুখোড় বিতার্কিক’। আমি একটু অবাক হলাম। ওনার কাছে জানতে চাইলাম, কে বললো আপনাকে? তিনি বললেন, আমি বললাম। আমি তোমার আন্টি মুক্তা আন্টি। সেই থেকে তিনি আমার আন্টি আর আমি তার বেটা। সব বিতার্কিককে তিনি বেটা বলে সম্বোধন করেন।
২০১৪ সালের বিতর্ক প্রতিযোগিতায় আমাদের হাতে একটি বই তুলে দেয়া হয়। বইটির নাম ‘বিতর্ক বীক্ষণ’। যখন বিতর্ক করতে শিখি, তখন আমাদের মফস্বল এলাকাতে তেমন ভালো বই পেতাম না। আর মোবাইল ফোনের এতো প্রসারও তখন ছিলো না। রকমারিতে বিতর্ক শেখার কিছু বই অর্ডার করেছিলাম। কিন্তু তৃষ্ণা নিবারণ হলো না। কোথায় যেনো একটি অতৃপ্তি রয়েই যায়। আমার সেই অতৃপ্তি ষোলআনা দূর করলো ‘বিতর্ক বীক্ষণ’। যার প্রকাশক চাঁদপুর কণ্ঠ বিতর্ক ফাউন্ডেশন। পৃষ্ঠা সংখ্যা ২২। মূল্য নির্ধারণ করা হয় ২৫ টাকা। বইটির সম্পাদক শ্রদ্ধেয় কাজী শাহাদাত আংকেল। সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন সিকেডিএফের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম স্বপন আংকেল ও রাজন দে দাদা।
ভিক্টোরিয়া কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সম্প্রীতি সমাবেশে প্রফেসর মঈন উদ্দীন স্যারের মুখে শুনেছিলাম, তার ভার্সিটি লাইফের শিক্ষক ক্লাসের প্রথম দিন এসে একটি বাক্য বলেছিলেন, সেটি হলো ঝযড়ৎঃ ধহফ ঝবিবঃ. আমার কাছে বিতর্ক বীক্ষণ মানে ঝযড়ৎঃ ধহফ ঝবিবঃ. বইটি থেকে যে কোনো বিতার্কিক উপকৃত হবেন বলে আমার বিশ্বাস। পীযূষ আংকেল এবং কাজী শাহাদাত আংকেলের কাছ থেকে জানতে পারলাম, পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স বইটিকে বিরাট আঙ্গিকে প্রকাশ করতে যাচ্ছে। যার নাম হবে ‘বিতর্ক সমগ্র’। যার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০০ টাকা। চাঁদপুরে অনেক বিতর্কপ্রেমী স্পন্সর প্রতিষ্ঠান আছে। তারা স্পন্সর করলেই চলমান বিতর্কে যারা শ্রেষ্ঠ বক্তা হবেন, তাদের হাতে বইটি তুলে দেওয়া সম্ভব হবে।
ডাঃ পীযূষ আংকেল চাঁদপুর কণ্ঠের ‘বিতার্কায়নে’ নিয়মিত লিখে যাচ্ছেন। সে লেখাগুলোও বিতার্কিকদের চর্চার জায়গাকে আরো শাণিত করে যাচ্ছে। পীযূষ আংকেল শুধু চিকিৎসকই নন, তিনি একজন শিক্ষকও বটেন। তিনি চাঁদপুর বিতর্ক একাডেমির অধ্যক্ষ হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। এ বছর বিতর্ক শুরুর প্রাক্কালে আয়োজিত প্রশিক্ষণগুলোতে প্রধান প্রশিক্ষকও ছিলেন।
মুক্তা আন্টি বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি পরিষদ, চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি। বিতর্কের অনুষ্ঠানে তিনি সবসময় পাশে থেকেছেন। তিনি চাঁদপুর সেন্ট্রাল ইনার হুইল ক্লাবের দায়িত্বে থাকাকালে বিতার্কিকদের দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা করেছিলেন। তাঁর দুই সন্তান প্রত্ন এবং প্রখর। চাঁদপুরের বিতর্কে এখন পরিচিত দুই মুখ। মুক্তা আন্টির সাথে সর্বশেষ দেখা হয় জেলা সাহিত্য সম্মেলনে। তাঁর অপত্য স্নেহ বরাবরই আমাকে মুগ্ধ করেছে।
আমরা কৃতজ্ঞ এ দুজন নিরলস কর্মবীরের প্রতি। তাঁদের নিয়ে কলম ধরবার দুঃসাহস দেখিয়েছি বলে ক্ষমাপ্রার্থী। (চলবে)
মোঃ মেহেদী হাসান সোহেল : সদস্য, চাঁদপুর কণ্ঠ বিতর্ক ফাউন্ডেশন, কচুয়া।