সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪  |   ১৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ১৬ জুলাই ২০২১, ০০:০০

করোনাভাইরাস ও অনলাইন ক্লাস
অনলাইন ডেস্ক

Asteroid, pandemic, ppe, ventilator, Potential, Isolation, Nepotism, quarantine, সোশ্যাল ডিস্টেন্সিং, কোয়ারেন্টাইন, লকডাউন, শাটডাউন, অতিমারি, মহামারি ইত্যাদি শব্দগুলোর মতোই অনলাইন ক্লাস! প্রথম শুনে সবাই চোখ বড় করে বানানটা আবার পড়ে একটু থমকে চিন্তা করতে লাগলো এটা আবার কি রকম ক্লাস? অনলাইন ক্লাস এখন এক সুপরিচিত বহুশ্রুত, বহু উচ্চারিত শব্দদ্বয়। এই শব্দদ্বয়ের উপরে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা অর্থনৈতিক রাজনৈতিক সমগ্র জাতির পথচলা এককথায় সব ভরসা। কারণ অসুস্থ পৃথিবীটা কবে পর্যন্ত সুস্থ হয়ে নিজের ছন্দে ফিরে আসবে সেই বিষয়ে হলফ করে কিছু বলা যাচ্ছে না। তাই যতোদিন পর্যন্ত না পৃথিবী স্বাভাবিক হয়ে উঠছে ততোদিন আমাদের ভবিষ্যতের (পড়ালেখার) কথা মাথায় রেখে অনলাইন ক্লাসের ভিতটা শক্ত করে ধরতে হবে। অনস্বীকার্য, অনলাইন ক্লাসের দৌলতে ঘরে বসেই পড়াশোনা চলছে। অত্যাধিক দূরত্বের কারণে যে ক্লাস করা সম্ভব হচ্ছিলো না সেগুলোও আজ স্বপ্নপূরণের জন্যে হাতছানি দিচ্ছে। পরিস্থিতি অনুযায়ী একমাত্র বিকল্প হয়ে উঠছে অনলাইন ক্লাস।

ই-এডুকেশন

ইন্টারনেট বা অনলাইনের মাধ্যমে শিক্ষাদান পদ্ধতিকে ই-এডুকেশন বলে। এইতো বেশি দিন হয়নি আমরা (শিক্ষার্থীরা) অনলাইন ক্লাস কি বুঝতে পারিনি। শ্রেণিকক্ষে শিক্ষক অনলাইন ক্লাসের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়তেন। শিক্ষার্থীরা কত গাইড-নোটবুক থেকে খুঁজে অনলাইন ক্লাসের গুরুত্ব পড়তে হতো। কিন্তু করোনা মহামারি কারণেই অনলাইন ক্লাসে যুক্ত হতে পারছি। যা আগে স্বপ্ন কাল্পনিক মনে হতো। করোনা মহামারি কল্যাণে শিক্ষাব্যবস্থায় প্রযুক্তির ব্যবহার করে শিক্ষা অর্জন করা যে সম্ভব তা আমাদেরকে দেখিয়ে দিয়েছে। যেখানে এক রুমে ৫০/৬০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে ক্লাস করতে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী ক্লান্তি বোধ করতো এবং নির্ধারিত শিক্ষার্থী মাঝেও অতিরিক্ত শিক্ষার্থী। এর বিপরীতে ই-এডুকেশন অনলাইন ক্লাসের মাঝে ১শ’ জন শিক্ষার্থী নিয়ে ক্লাস করা সম্ভব।

কোনো বিষয়ে না বুঝলে সাথে সাথে প্রশ্ন করা যায়। গুগল ফর্মে এমসিকিউ পরীক্ষা এবং কাগজে লিখে গুগল ড্রাইভে পিডিএফ ফাইল জমা দেয়াও সম্ভব। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বা হাজিরা দিতে পারে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের ক্লাস টেস্ট, এমসিকিউ পরীক্ষা ইত্যাদি অনলাইনে নিয়ে থাকে। শিক্ষার্থীরা প্রযুক্তিগত দক্ষতা অর্জন করে তেমনি পাঠ্যবিষয় জ্ঞান অর্জন করতে পারছে।

বর্তমান শিক্ষার অবস্থা

যেখানে আমাদের চলমান শিক্ষাব্যবস্থায় বন্ধ, সেখানে অনলাইন ক্লাস এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় নানা রকম গেমসে আসক্ত হয়ে পড়ছে অনেকেই, তার থেকে রেহাই পেতে এবং পড়ালেখা মনোযোগ রাখতে হলে শিক্ষার্থীদের জন্যে অনলাইন ক্লাস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় নির্ধারিত নিয়মেই চলছে শিক্ষার্থীদেরকে অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে পরবর্তী ক্লাসে উত্তীর্ণ হওয়ার সুযোগ দিচ্ছে। কিন্তু অ্যাসাইনমেন্ট তো সম্পূর্ণ বছরের মৌলিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণ করে না। চিন্তার বিষয় শিক্ষার্থীরা কি নিয়ে উপরোক্ত ক্লাসে উঠছে? সুতরাং এসব বিষয়ে ক্ষতিসাধন করতে চাইলে আমাদেরকে অনলাইন ক্লাসের দ্বারস্থ হতে হবে। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা আপন প্রচেষ্টার মাধ্যমে এবং করোনাভাইরাসকে আপন করেই আমাদেরকে এগিয়ে চলতে হবে।

বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থায় যে পরিবর্তন আসছে, তা অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই। আর এসবই হচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তির প্রসারের ফলে। আরও বেশি দক্ষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক হলে আমাদের (শিক্ষার্থীদের) কাছে অনলাইন ক্লাস আরও নান্দনিক হয়ে উঠতো এবং সুফল লাভ করা যেতো। বাস্তব প্রথাগত শিক্ষার যে স্বাদ অর্জন করে (শিক্ষার্থীরা) অনলাইন ক্লাস করে তারচেয়েও বেশি অর্জন করে। আমরা (শিক্ষার্থীরা) পাঠ্যপুস্তক থেকে জ্ঞান অর্জনে সীমাবদ্ধ না হয়ে তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক জ্ঞান অর্জন করতে পারছে অনলাইন ক্লাস করে।

অনলাইন ক্লাস মাধ্যম

বর্তমানে আমাদের দেশে দুই প্রক্রিয়া অনলাইন ক্লাস হয়ে থাকে। ১. একমাত্রিক : একমাত্রিক অনলাইন ক্লাসের মধ্যে ফেসবুক-ইউটিউব ইত্যাদি যেখানে শিক্ষকপাঠ্য বিষয়ের উপর ভিডিও তৈরি করে ফেসবুক-ইউটিউবে আপলোড করলে শিক্ষার্থীরা দেখে। ফেসবুক লাইভে এসে ক্লাস করানো। এই মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা কোনো বিষয়ে না বুঝলে কমেন্ট বক্সে প্রশ্ন করতে পারে।

২) দ্বিমুখী বা দ্বিমাত্রিক : দ্বিমুখী অনলাইন ক্লাস জুম অ্যাপস্, গুগল মিট ইত্যাদি অ্যাপস্ ব্যবহার করে শিক্ষক ক্লাস নিয়ে থাকে। শিক্ষার্থীরা কোনো বিষয়ে না বুঝলে সাথে সাথে প্রশ্ন করতে পারে শিক্ষক উত্তর দিয়ে থাকেন। একে-অপরের কথা বলতে এবং শুনতে পান। ক্লাসে ক’জন শিক্ষার্থী উপস্থিত এবং তাদের হাজিরা রোলিং করা যায় এবং ক্লাস রেকর্ডিং করে পরবর্তীতে দেখা যায়।

করোনা মহামারীর জাঁতাকল থেকে মুক্তির নিমিত্তে পড়াশোনা পুষিয়ে নিতে নিঃসন্দেহে অনলাইন ক্লাস এটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। অনলাইন ক্লাস ব্যয়বহুল হলেও আগামীদিনের প্রজন্মকে মেধাশূন্যের হাত থেকে রক্ষা করতে হলে আমাদের অনলাইন ক্লাসে যুক্ত থাকা দরকার।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়