প্রকাশ : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯:০৯
কণ্ঠশিল্পী ইতু চক্রবর্তীর পরলোকগমন

চাঁদপুরের সংস্কৃতি অঙ্গনে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া। চাঁদপুরের পরিচিত মুখ, 'গানের পাখি' গুণী কণ্ঠশিল্পী ও সংগীত শিক্ষিকা, ২০১৫ সালে জেলা শিল্পকলা একাডেমির গুণীজন সম্মাননাপ্রাপ্ত ইতু চক্রবর্তী আর বেঁচে নেই। রোববার (২৮ ডিসেম্বর ২০২৫) দিবাগত রাত ১২টা ১৮ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিলো প্রায় ৬৫ বছর। তাঁর প্রয়াণে চাঁদপুরের সংগীত ও সংস্কৃতি জগৎ হারালো এক নিবেদিতপ্রাণ শিল্পী ও শিক্ষককে।
ইতু চক্রবর্তী প্রয়াত সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নগেশ চক্রবর্তীর কন্যা এবং ঊষা চক্রবর্তীর সন্তান। তাঁর পৈত্রিক নিবাস চাঁদপুর শহরের গুয়াখোলা রোডে পঞ্চবর্তী পাড়া এলাকায়। তিনি বাস্তব জীবনে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হননি।
শৈশব থেকেই সংগীতের প্রতি ইতু চক্রবর্তীর গভীর অনুরাগ ছিলো। ছোটবেলায় কলকাতায় শিক্ষাগুরু বড়োবোন বাচ্চু চক্রবর্তীর কাছে সংগীতের হাতেখড়ি নেন তিনি।
পরবর্তীতে কলকাতায় নজরুল সংগীতের একটি জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে নিজের প্রতিভার স্বাক্ষর রাখেন।
চাঁদপুরের সংগীত অঙ্গনে তাঁর গানের গুরু ছিলেন প্রখ্যাত সংগীত শিক্ষক প্রয়াত শীতল ঘোষাল।
শিক্ষকতা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে আজীবন সক্রিয় থাকা ইতু চক্রবর্তী একসময় চাঁদপুর ললিতকলা সংগীত প্রতিষ্ঠান এবং চাঁদপুর শিল্পকলা একাডেমিতে গানের শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পাশাপাশি তিনি নবারুণ শিশু শিক্ষা নিকেতনের অধ্যক্ষ, নৃত্যধারা সংগঠনের সভাপতি এবং চতুরঙ্গ সাংস্কৃতিক সংগঠনের নিয়মিত কণ্ঠশিল্পী হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে গেছেন।পরিবার সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে তিনি কিডনি ও ফুসফুসজনিত জটিলতায় ভুগছিলেন। গত শনিবার (২৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ইং) সন্ধ্যায় শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে দ্রুত ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে রোববার দিবাগত রাত ১২ টা ১৮ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। সোমবার দুপুরে চাঁদপুর মহাশ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়।
সোমবার দুপুরে চাঁদপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে ইতু চক্রবর্তীর মৃতদেহ নিয়ে গেলে চাঁদপুরের বিভিন্ন নাট্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যরা তাঁকে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করে শেষ বিদায় জানান।
ইতু চক্রবর্তীর মৃত্যুতে চাঁদপুরের সংস্কৃতি অঙ্গনে সৃষ্টি হয়েছে বিরাট শূন্যতা। তাঁর কণ্ঠ, তাঁর শিক্ষা আর সংগীতের প্রতি নিঃস্বার্থ ভালোবাসা চাঁদপুরের সংস্কৃতির ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।








