প্রকাশ : ১০ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:০৩
বিমল কান্তি দাশের দুটি কবিতা

ভবিষ্ণু
অবাঙ্মানসগোচর যত যত সৌন্দর্য
যুগে যুগে এসেছে সভ্যতায়,
ছুটেছে দূষণে চারিত্রিক কদর্য
সর্বস্তরে মানবতা বিপন্নতায়॥
যত রেশারেশি অতৃপ্ত মানসে লোটায় মনুষ্যত্ব নিদারুণ বিপাকে,
বিচারহীনতা হয় বিচারক সকাশে
ঔদার্য-মহত্ত্বকে নিবিড়ে ডাকে॥
শ্বেত-শুভ্র মানুষগুলো আজ বাকরুদ্ধ
বহুরুপীরা বিরাজে তাদের হিংস্র থাবায়,
অনতিক্রান্ত বৃত্তে সবাই হয়েছে সংবিধিবদ্ধ
মুক্তমতির মানুষ শুধুই মুক্তি চায়॥
রংধনুর রঙের ভিন্নতায় সপ্ত বাহার মিলিয়ে দেয় এক পশলা বর্ষণ,
হুঁশে আনে পরিকল্পনায় অনাচার পাশব যোশে ঘটায় অমানবিক ধর্ষণ॥
হায় মানবতা! তুমি পালালে কোথায়?
তোমাকে ছাড়া আমরা হতাশ,
সমাজের সর্বাঙ্গে দুঃসহ ব্যথা
উদভ্রান্ত চিত্তে তোমাতেই আলোর প্রয়াস॥
আপেক্ষিক ভাল-মন্দ জীবনের গতি
ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি অতিশয় উক্তি,
শূন্য কলসী আঘাতে বাজে অতি
পূর্ণ কলসীটা আষাঢ়ে গল্পের যতি॥কারক
পরম্পরায় কার্যগুলি কারণেই ঘটে
অকারণে স্থিতি জড়তা থাকে চিরকাল,
নিরালায় ভাবশুদ্ধি তটিনীর তটে
অকারণে আইসোটপিক বিস্ফোরণটা ভয়াল॥
স্যাঁতস্যাঁতে মৃত্তিকার প্রকৃতি যেমনি
শিশুর ও ক্ষুধা-তৃষ্ণা-অনুভূতির ইঙ্গিতবাহী,
সাথে যুক্ত যদি হয় নৈতিকতার বাণী
আজকের মানব শিশু ভবিষ্যতের সহী॥
শান্ত মানবিক পরিবেশ হঠাৎ উত্তপ্ত
কারণে কয়েদখানায় বাজে পাগলা ঘন্টী,
মানুষের বিবেকে স্বতঃসিদ্ধটাই থাকে সুপ্ত
শুধুই স্বহস্তে আইন, খাটে না পাল্টাপাল্টি॥
অক্ষয়-অব্যয় চির সত্য যাহা সর্বচরাচরে
এতে কি মলিনত্ব আসে কখনো অর্বাচিনত্বে,
সত্য চিরসত্যই থাকে অবাঙ্মানসগোচরে
সর্বোপরি মানবতাই মুখ্য বিবেচিত হয় সর্বসত্ত্বে॥
মানুষ মানুষকে যবে করবে না মূল্যায়ন
সমাজের স্থিতিশীলতায় জন্মাবে দাঙ্গা,
অসুস্থ সামাজিকতার বীজ তাতে হবেই বপন
মানুষ যেন না ভুলে মানবতার সংজ্ঞা॥
দুর্নীতির জন্যেই এদেশের নব্য রাজনীতি
অভিজ্ঞ জনের লালনে তারাই পুষ্ট,
বাকপটুতায় শুধুই আশ্বাসউক্তি
দ্বি-চারিতায় নিশ্চিত হবে পথভ্রষ্ট॥





