প্রকাশ : ২৭ আগস্ট ২০২৪, ২০:৫৫
মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পে জলাবদ্ধতায় উৎপাদন বিপর্যয়ের শঙ্কা
কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিপাত ও ঘূর্নিঝড় রেমালের কারনে বৃষ্টিপাতে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পে ভয়াবহ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে ময়লা -আবর্জনায় ও জায়গা দখল হয়ে যাওয়ায় মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পে পানি উন্নয়ন বোর্ডের(পাউবো) ও সরকারি খালগুলো খালটি ভরাট হয়ে যাচ্ছে ও গেছে। খাল গুলো দিয়ে বৃষ্টির পানি নিস্কাশন হতে পারছে না। খাল গুলো দিয়ে জমির বৃষ্টির পানি সড়তে না পারায় প্রতি বছরই কৃষি জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। প্রতি বছর জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এবার এ জলাবদ্ধতার কারনে ফসল উৎপাদনে বিপর্যয়ের শঙ্কা রয়েছে।
সড়জমিনে দেখা যায়, কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিপাতে সেচ প্রকল্পের হানির পাড়, কলাকান্দা, মিলারচর, মাথাভাঙ্গা, পাঁচআনী, একলাশপুর, জোড়খালী, শিকিরচর, ছেংগারচর, কেশাইরকান্দি, জীবগাঁও, পাঠান বাজার, ঝিনাইয়া, মরাদন, ঠাকুরচর, রুহিতার পাড়, আমুয়াকান্দা, সিপাইকান্দি, ঠেটালিয়া, গজরা, রাঢ়িকান্দি, ছোট ও বড় হলদিয়া, লুধুয়া, ঠাকুরচর, নাউরী, নিশ্চিন্তপুর, বেলতলি,ঘনিয়ারপাড়,নন্দলালপুরসহ বিভিন্ন এলাকার উচু-নিচু জমি ও বিলে জলাবদ্ধতা দৃশ্যমান। জলাবদ্ধতার কারণে ধান ও সবজির জমি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশংকার কথা জানায় কৃষকরা। মাঠের আবাদি জমির ফসল সম্পূর্ন নস্ট হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।জলাবদ্ধতার কারণে অনাবাদী থাকবে জমি।
জলাবদ্ধতার কারনে মৎস্য খামার তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে মাছ। বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষের ক্ষতি হয়েছে।
হানির পাড় গ্রামের কৃষক দ্বীন ইসলাম জানান, বৃষ্টিতে জমিতে পানি জমে গেছে। ছেংগারচর দিয়া যাওয়া খালটি গেছে সেটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পানি সড়ে না। প্রতি বছরই আমরা এ সময় বৃষ্টির পানিতে ডুইবা থাকি ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফয়সাল মোহাম্মদ আলী বলেন, ময়লা-আবর্জনায় ও জায়গা দখল হয়ে যাওয়ায় খালগুলো ভরাট হয়ে পানি চলাচল করতে পারছে না। বিলের পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে আছে। জমির বৃষ্টির পানি সড়তে না পারায় রোপা ধান ও বীজতলা, সবজি জমির ব্যাপক ক্ষতি হবে। ক্ষতিগ্রস্থ হবে কৃষকরা। জলাবদ্ধতা নিরসনের ব্যবস্থা না নিলে ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে না।
মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী জয়ন্ত পাল বলেন, ভারী বৃষ্টিতে পানি জমে গিয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বন্যার পানিতে বেড়িবাঁধের ওপর পানির চাপও বেড়েছে। খালগুলোর সংস্কারের কাজ চলছে। বেশ কিছু নিষ্কাশন খাল বেদখলে থাকায় নিচু জমির পানি মূল খালে আনা যাচ্ছে না। জলাবদ্ধতা নিরসনের চেষ্টা চলছে।
বর্ষায় অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত এবং অপরিকল্পিত বনায়ন,রাস্তাঘাট নির্মান ও যত্রতত্র বাড়ি ঘর তৈরির ফলে প্রকল্প এলাকায় অনেক ফসলি জমি নষ্ট করা হচ্ছে। প্রতি বছর পানি নিস্কাশন খাল সংস্কারের অভাবে অনেক এলাকায় নিস্কাশন সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ফলে অতিবৃষ্টিতে জলাবদ্ধতায় কৃষক নিঃস্ব হচ্ছে। এবারের জলাবদ্ধতায় সেচ প্রকল্পে ফসল উৎপাদনে বিপর্যয়ের শঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।