প্রকাশ : ০৮ জুন ২০২২, ০০:০০
দক্ষিণ-পশ্চিম বিষকাটালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
ঠিকাদারের গাফিলতিতে অসমাপ্ত ভবনে চলছে পাঠদান
অসমাপ্ত ভবনে চলছে ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১৮৪ দক্ষিণ-পশ্চিম বিষকাটালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম। ঠিকাদারের গাফিলতিতে স্কুলের ভবন নির্মাণ কাজ অসমাপ্ত থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি। এদিকে ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদান চলছে অসমাপ্ত জরাজীর্ণ ভবনে। এমন পরিবেশে পাঠদান কার্যক্রম চলায় অসুস্থ হয়ে পড়েছে অনেক শিশু শিক্ষার্থী। অনেকে আবার স্কুলে আসার আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে।
|আরো খবর
জানা যায়, দরপত্রের মাধ্যমে ৬২ লাখ টাকার বিনিময়ে একতলা ভবনের এ কাজটি হাইমচর উপজেলার আলগী বাজার এলাকার ভাই ভাই ব্রিকফিল্ডের মালিক নুরুল ইসলাম নান্টু নামের এক ঠিকাদার পান। এক বছর সময়সীমা বেঁধে দিয়ে ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে নির্মাণের কার্যাদেশ পেয়ে কাজ শুরু হয়। ঠিকাদার এক বছরে কাজ সম্পন্ন করে দেয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত কাজের কোনো শেষ নেই। এদিকে শ্রেণিকক্ষের অভাবে অসমাপ্ত ভবনেই চলছে শিশু শিক্ষার্থীদের পাঠদান। স্কুলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৪২ জন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অসমাপ্ত ভবনের রুমগুলোতে কোনো রকমে বসে শিশু শিক্ষার্থীরা ক্লাস করছে। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ক্লাস নিচ্ছেন শিক্ষকরা। স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশে চলছে পাঠদান কার্যক্রম। শিক্ষার্থীরা বলেছে, ক্লাসে শিক্ষা উপকরণ ব্যবহার করা যায় না। মাঝে মাঝে তারা অসুস্থ হয়ে পড়ে। পড়াশোনায়ও মনোযোগ নষ্ট হচ্ছে তাদের।
শিক্ষার্থীদের অভিভাবক মিজানুর রহমান ও শফিক মিয়া বলেন, লেখাপড়ার পরিবেশ না থাকায় শিক্ষার্থীরা ঠিকমতো বিদ্যালয়ে যাচ্ছে না। এছাড়া কয়েক শিক্ষার্থী রোদণ্ডবৃষ্টির কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ায় অভিভাবকরা শিশুদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। আশা করি কর্তৃপক্ষ দ্রুত ভবন নির্মাণ ও কাজ শেষ করে বিদ্যালয়ে লেখাপড়ার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনবেন।
প্রধান শিক্ষক আব্দুল কাদির জানান, আমরা যে ভবনে আছি, এই ভবনে একসঙ্গে দুটি শ্রেণির ক্লাস নেয়া সম্ভব হলেও অন্য শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিতে সমস্যা হচ্ছে। যার কারণে ম্যানেজিং কমিটির সহায়তায় অসমাপ্ত ভবনের রুমে শ্রেণি কার্যক্রম চালু রাখা হয়েছে। এ অস্বস্তিকর পরিবেশের কারণে শিক্ষার্থীদেরকে মানসম্মত শিক্ষা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।
তিনি আরো বলেন, নান্টু মিয়া নামের এই কনট্রাক্টর গত প্রায় দুই বছর আগে কাজ অসমাপ্ত রেখে চলে যায়। তাকে মুঠোফোনে কল করলে কাজ করে দিবেন বলে আশ্বস্ত করেন। এই বলে গত দু বছর কাটিয়ে দিচ্ছেন। প্রধান শিক্ষক আরো বলেন, নান্টু মিয়া আরো অনেক স্কুলের কাজ অসমাপ্ত রেখে অদ্যাবধি করে দেয়নি।
দক্ষিণ-পশ্চিম বিষকাটালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি এসএম মিজানুর রহমান বলেন, নির্মাণ কাজে ঠিকাদারের গাফিলতি বিব্রতবোধ করার মতো। প্রথম অবস্থায় সে দ্রুত গতিতে কিছু কাজ করলেও গত দু’বছর আর কাজের কাছে আসছে না। সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও কাজ শেষ করছে না। সে কী করতে চায় সেটাও আমাদেরকে জানায়নি।
ফরিদগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ মতিউর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ঠিকাদার নূরুল ইসলাম সেন্টু আজ আমার অফিসে এসেছিলেন এবং তিনি কথা দিয়েছেন আগামী দেড় মাসের মধ্যে ওই বিদ্যালয়ের কাজ সমাপ্ত করে দিবেন।