মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫  |   ২৮ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯:৫৭

সংস্কার হয়নি এক যুগেও

ছেংগারচর পৌরসভার পাকা রাস্তার বুক ছিন্নভিন্ন।। যান চলাচলের অনুপযুক্ত

মাহবুব আলম লাভলু
ছেংগারচর পৌরসভার পাকা রাস্তার বুক  ছিন্নভিন্ন।। যান চলাচলের অনুপযুক্ত

মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর পৌরসভার ছেংগারচর বাজার-দশানী বেড়িবাঁধ রাস্তা খানাখন্দে ভরপুর। ভাঙ্গাচুরা এ রাস্তায় যান চলাচল প্রায় বন্ধের উপক্রম হয়েছে। এক যুগেও সড়কটি সংস্কার না হওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে এ রাস্তা দিয়ে চলাচলকারীরা।

মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ ছেংগারচর বাজার-দশানী বেড়িবাঁধ রাস্তা। এ রাস্তাটি ছেংগারচর বাজার হতে বারআনী, জোড়খালি হয়ে দশানী বেড়িবাঁধের সড়ক ও জনপথ বিভাগের রাস্তার সাথে সংযুক্ত হয়েছে। এ রাস্তাটির দৈর্ঘ্য ৩.৫০০ কিলোমিটার। রাস্তাটি এলজিইডি কিংবা পৌরসভার আওতাধীন--এ নিয়ে মতপার্থক্য দেখা দেয়। দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ থেকে উভয় দপ্তরে যোগাযোগ করা হলে জানা যায়, রাস্তাটি পৌরসভার আওতাধীন। এ রাস্তাটি ব্যবহার করে স্থানীয় বাসিন্দারা উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সে, ছেংগারচর পৌরসভা কার্যালয়ে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, মতলব উত্তর থানা কার্যালয়ে, ছেংগারচর বাজারে, ছেংগারচর সরকারি ডিগ্রি কলেজ, ছেংগারচর সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করেন।

সরজমিনে দেখা যায়, ছেংগারচর পৌরসভার ছেংগারচর বাজার-দশানী বেড়িবাঁধ রাস্তা সংস্কারের অভাবে কয়েক বছর ধরেই নাজুক। রাস্তার বুক ছিন্নভিন্ন, খানাখন্দে ভরা। গভীর গর্ত তৈরি হওয়ায় যানবাহন চলাচল কঠিন হয়ে পড়ে, যা দুর্ঘটনার কারণ হয়। রাস্তাটি দিয়ে মানুষ পায়ে হেঁটে আসা যাওয়া করছে। রাস্তাটি কবে নাগাদ সংস্কার হয়েছে, আদৌ সংস্কার হয়েছে কিনা তা বলা মুশকিল।

অটোরিকশা চালক নূর নবী বলেন, এই সড়কে আমি নিয়মিত চলাচল করি। রাস্তার যে অবস্থা এখন আর এ রাস্তা দিয়ে যাত্রী নিয়ে আসা-যাওয়া করতে পারছি না। রোজগার কমে গেছে।

দশানী গ্রামের ইউপি সদস্য বলেন, আমরা পৌরসভার বাহিরের বাসিন্দা হলেও এ রাস্তা ব্যবহার করে উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরগুলোতে যেতে হয়। রাস্তাটির এখন এমন অবস্থা যে, যানবাহন চলাচল করতে পারে না। হেঁটেই রাস্তাটিতে চলাচল করতে হয়।

ব্যবসায়ী জিয়া রহমান বলেন, এটাকে কীভাবে প্রথম শ্রেণির পৌরসভা করা হলো বুঝতে পারছি না। পৌর এলাকার এমন অবস্থা, যা ইউনিয়ন এলাকার চেয়েও খারাপ। এ রাস্তাটি ব্যবসায়ীদের জন্যে গুরুত্বপূর্ণ। এ রাস্তা দিয়ে কোনো মালবাহী যান চলাচল করতে পারে না। জরুরি ভিত্তিতে রাস্তাটি সংস্কার প্রয়োজন।

ছেংগারচর পৌরসভার সাবেক মহিলা কাউন্সিলর মনোয়ার বেগম জানান, কয়েক বছর ধরে রাস্তাটি এ অবস্থায় পড়ে আছে। আমরা এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে রাস্তাটি সংস্কারের জন্যে দাবি জানিয়ে আসছি। বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে রাস্তাটি আজও সংস্কার করা হয়নি। পাকা এ রাস্তাটি দিয়ে হেঁটে যাওয়া মুশকিল।

মুক্তিযোদ্ধা ছানা উল্লা মেম্বার জানান, দীর্ঘ দিন ধরে সড়ক সংস্কার না হওয়ায় রাস্তাগুলোর অবস্থা বেহাল হয়ে যায়, যা বাসিন্দাদের চরম ভোগান্তিতে ফেলে। যানবাহন চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে বা অনেক পথ ঘুরে যেতে হচ্ছে। বয়স্ক বা অসুস্থ ব্যক্তিদের জন্যে রাস্তাগুলো মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে।

পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী মো. মান্নানুল ইসলাম জানান, রাস্তাটির অবস্থা ভালো না। পাকা করার পর কিছু অংশ এলজিইডি থেকে মেরামত করা হয়েছিল। এছাড়া মেরামত হয়নি। আমরা রাস্তাটি মেরামতের জন্যে প্রকল্প তৈরি করেছি। আগাামী টেন্ডারে এ রাস্তাটি মেরামতের জন্যে যাবে।

উপজেলা প্রকৌশলী সোহেল আনোয়ার জানান, এ সড়কটি পৌরসভার। ২০১৩ সালে রাস্তার জিরো থেকে ১২শ' মিটার আমরা মেরামত করেছিলাম। পরবর্তীতে সড়কটি পৌরসভার আওতাধীন হওয়ায় আর মেরামত করা হয়নি।

পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহমুদা কুলসুম মনি বলেন, এটি প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা। কিন্তু অর্থ ও জনবলের অভাব। জনস্বার্থে রাস্তাটি দ্রুত মেরামত করা প্রয়োজন। বরাদ্দ পেলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে রাস্তাটি আগে মেরামত করা হবে।

এ রাস্তাটি জনগুরুত্বপূর্ণ। পাকা হওয়ার পর নেই সংস্কার। মারাত্মক ঝুকিপূর্ণ হয়ে রয়েছে। ব্যবহারকারীরা পড়ছে চরম দুর্ভোগে। দুর্ভোগ লাঘবে এ রাস্তাটি দ্রুত সংস্কারের দাবি করছেন এলাকাবাসী।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়