প্রকাশ : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:৫৫
জিবের রং শরীরের যেসব লক্ষণ প্রকাশ করে

সুস্থ জিব হয় হালকা গোলাপি। দুই পাশে সমান থাকে। অনেক সময় হালকা সাদা আবরণ থাকতে পারে। এটি কেরাটিন নামক প্রোটিন, যা খাবার খাওয়ার সময় ঘর্ষণ থেকে জিবকে রক্ষা করে। জিবের ওপর ছোট ছোট দানা বা ফোঁটা থাকে, যাকে বলা হয় প্যাপিলা। এগুলো স্পর্শ ও তাপমাত্রা অনুভব ও খাবার গিলতে সাহায্য করে।
যেসব পরিবর্তন চিন্তার কারণ
বাদামি বা কালো জিব
* হঠাৎ যদি দেখেন জিবের রং বাদামি বা কালো, সে ক্ষেত্রে কারণ খতিয়ে দেখা দরকার। জিবে প্যাপিলা অস্বাভাবিকভাবে বড় হয়ে ব্যাকটেরিয়া জমে এমন হয়।
* অ্যান্টিবায়োটিক বা অ্যান্টিহিস্টামিন সেবন বা ধূমপান থেকেও এমন হতে পারে।
* এছাড়া মুখ শুকিয়ে যাওয়া, অতিরিক্ত চা-কফি পান, খারাপ ওরাল হাইজিনের কারণে অনেক সময় এ রকম হতে পারে।
ঘন সাদা আবরণ বা দাগ
* অনেক সময় জিবে ঘন সাদা আবরণ বা দাগ পড়ে। এটি ছত্রাক সংক্রমণের কারণে হয়। শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা দুর্বল হলে ছত্রাক হয়।
* যেমন ডায়াবেটিস, এইচআইভি, অ্যান্টিবায়োটিক বা স্টেরয়েড-জাতীয় ওষুধ সেবন, ক্যানসার বা ক্যানসারের চিকিৎসা। স্টেরয়েড ইনহেলার ব্যবহার করলেও হতে পারে।
* এ ধরনের সাদা দাগ মুখগহ্বর ক্যানসারের লক্ষণও হতে পারে।
লাল বা হলুদ ব্যথাযুক্ত ঘা
* জিবে লাল বা হলুদ ব্যথাযুক্ত ঘা সাধারণত ক্যাঙ্কার সোর, ওরাল থ্রাস বা সংক্রমণের কারণে হয়।
* তবে দীর্ঘস্থায়ী হলে মুখের ক্যানসারের লক্ষণও হতে পারে।
উজ্জ্বল লাল জিব
* অনেক সময় জিব উজ্জ্বল লাল দেখায়। ভিটামিন বি১২-এর ঘাটতির কারণে বা স্কারলেট ফিভারে এ রকম হতে পারে।
* যদি জিবের লাল দাগগুলো ব্যথাহীন হয় এবং এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় সরে যায়, তাহলে এটিকে জিওগ্রাফিক টাঙ বলা হয়। এটি ক্ষতিকর নয়।
* অনেক সময় আয়রন খনিজের ঘাটতির কারণে এ রকম হতে পারে।
জিব পরিষ্কার রাখার নিয়ম
* জিব পরিষ্কার রাখা জরুরি। দাঁত ব্রাশের সময় জিবও ব্রাশ করতে হবে।
* জিব বের করে পেছন থেকে সামনে মাঝখান, বাঁ ও ডান দিকে তিনবার টেনে ব্রাশ করতে হবে।
* মিষ্টি, চিনি ইত্যাদি খাওয়ার পর কুলি করতে হবে।
* ইনহেলার ব্যবহার করার পরও কুলি করা উচিত।
* ধূমপান, পান, জর্দা, সাদাপাতা, গুল ইত্যাদি জিবের জন্য খুব ক্ষতিকর।
কখন চিকিৎসক দেখাবেন
* জিবে অস্বাভাবিক পরিবর্তন হলে চিকিৎসক দেখানো প্রয়োজন। যেমন জিবে অস্বাভাবিক রং, ঘা বা দাগ, জ্বর, গলাব্যথা বা দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা।
* চিকিৎসক পরীক্ষা করে সঠিক কারণ শনাক্তের চেষ্টা করবেন।
* সমস্যা পেলে প্রয়োজনীয় ওষুধ দেবেন।
* প্রয়োজনে জিবের বায়োপসি করারও প্রয়োজন হতে পারে।