প্রকাশ : ২০ অক্টোবর ২০২৫, ২১:১৪
মুন্সেফপাড়ায় প্রথমবারের মতো শ্রী পূজারী সংঘের শ্যামা পূজা

উৎসবমুখর পরিবেশে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের শ্রী শ্যামা বা কালী পূজার আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়েছে চাঁদপুরে। শাস্ত্র মতে, কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে দেবী কালীর আবির্ভাব ঘটে, যিনি অসুর বিনাশ করে শুভ শক্তির জয় নিশ্চিত করেন।
সোমবার (২০ অক্টোবর ২০২৫) চাঁদপুর শহরের মুন্সেফপাড়া এলাকায় শ্রী পূজারী সংঘ প্রথমবারের মতো এ পূজার আয়োজন করে। আয়োজকরা জানান, এবারের আয়োজন স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মাঝে নতুন উৎসাহ ও ভক্তির সঞ্চার করেছে।
হিন্দু শাস্ত্র মতে, দেবী কালী হলেন শক্তি, সময় ও রূপান্তরের প্রতীক। তিনি অজ্ঞান ও অন্ধকারকে দূর করে জ্ঞান, আলো ও ন্যায়ের প্রতিফলন ঘটান। কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে তাঁর আবির্ভাব ঘটে। যখন সমগ্র সৃষ্টিজগৎ অন্ধকারে নিমজ্জিত থাকে, তখনই দেবী কালী মহাশক্তিরূপে প্রকাশিত হয়ে অসুর বিনাশ ও মানবকল্যাণে আবির্ভূত হন। এই পূজার মাধ্যমে ভক্তরা জীবনের অশুভ শক্তি দূর করে শুভের জয় কামনা করেন।
কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে অনুষ্ঠিত হয় শ্রী শ্যামা বা কালী পূজা। এই রাতে পূজা মণ্ডপের এলাকাজুড়ে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, আরতি, মন্ত্রপাঠ ও ভক্তিগীতিতে মুখরিত হয় পরিবেশ।
আয়োজকদের মধ্যে অভিজিৎ সাহা জয় জানান, প্যান্ডেলটি সাজানো হয়েছে ঐতিহ্যবাহী শৈলীতে, সাথে যুক্ত হচ্ছে আধুনিক আলোকসজ্জা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। ভক্তদের জন্যে থাকবে প্রসাদ বিতরণসহ বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন। দেবী কালী সকলের জীবনে শান্তি, কল্যাণ ও শুভ শক্তির জয় বয়ে আনবেন এই প্রত্যাশা।
আয়োজকদের মধ্যে সুমন মজুমদার জানান, এই নতুন পূজাকে ঘিরে এলাকায় তৈরি হয়েছে উৎসবের আমেজ। নারী-পুরুষ, শিশু ও প্রবীণ সবাই উৎসবের আমেজের জন্যে প্রস্তুত। পূজার দিন রাতভর থাকবে পূজার্চনা, ভক্তি সঙ্গীত ও প্রদীপ প্রজ্জ্বলন।
সার্বিক তত্ত্বাবধানে থাকা আরেক আয়োজক সঞ্জয় চক্রবর্তী জানান, শত্রু বিনষ্ট, ডাকিনী, যুগিনী শান্তির কল্পে শ্যামা মায়ের আবির্ভাব হয়। জগতের সকলের শান্তির জন্যে এবং অশুভ শক্তিকে বিনাশ করতে মা নিশিতে জাগ্রত হন। মূলত জগতের শান্তির বার্তা বয়ে আনার জন্যেই মায়ের আবির্ভাব। কর্নেশ, অঙ্গনেশ, অঞ্জলি, চক্ষুদান, প্রাণ প্রতিষ্ঠা এবং জঙ্গ বিত্তা দিতে সমাপ্তি হবে মায়ের আরাধনা।
তিনি আরো জানান, এটা শুধু ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, বরং আমাদের ঐক্য, ভক্তি ও সৌহার্দ্যের প্রতীক। গত তিন বছর আমরা দুর্গাপূজা সুন্দরভাবে উদযাপন করেছি। তখন থেকেই আমাদের প্রত্যাশা ছিলো মা কালীকে আরাধনা করার। অবশেষে সেই আশা পূরণ হচ্ছে। মা যেনো অন্ধকারকে আলোয় রূপান্তরিত করে, সকল শত্রুর বিনাশ ঘটিয়ে দেশের মঙ্গল বয়ে আনে এটাই আমাদের প্রার্থনা। এদিকে উৎসবটি শান্তিপূর্ণ ও আনন্দঘনভাবে সম্পন্ন করতে চাঁদপুর জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও সেনাবাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রয়োজনীয় সহযোগিতা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাগ্রহণ করেছে। পূজামণ্ডপ এলাকায় রয়েছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা টহল, মনিটরিং ও জননিরাপত্তার ব্যবস্থা।