প্রকাশ : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২০:১৯
হাজীগঞ্জে পানিতে ডুবে মরার হিড়িক
হাজীগঞ্জে পানিতে ডুবে মরার যেন হিড়িক পড়েছে। ডুবে মরার হিড়িক থেকে বাদ যায়নি শিশু, কিশোরী এমনকি বৃদ্ধ পর্যন্ত। গত ৯ দিনে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে পানিতে মারা গেছে ৬ জন। পানিতে ডুবে মারা যাওয়াদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু। বিষয়টি ভাবিয়ে তুলেছে সংশ্লিষ্টদের। এসব মৃত্যুর ঘটনায় থানায় কেউ অভিযোগ দেয়নি।
|আরো খবর
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সর্বশেষ বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার গন্ধ্যর্বপুর উত্তর ইউনিয়নে গন্ধ্যর্বপুর গ্রামের সাহেব বাড়ির পুকুরে ডুবে মারা যায় তাজুল ইসলামের ছেলে রবিন(২)।
গত ৮ সেপ্টেম্বর বুধবার সকালে নিজ বাড়ির পুকুরের পানিতে ডুবে মারা যায় উপজেলার কালচোঁ দক্ষিন ইউনিয়নের ওড়পুর ভূইয়া বাড়ির জয়নাল আবেদিনের মেয়ে আসমা আক্তার (১৫)। আসমা স্থানীয় রামপুর আল বান্না স্কুলের দশম শ্রেনীর শিক্ষার্থী। বাড়ির লোকজনসহ স্থানীয়রা জানিয়েছে আসমা মৃগী রোগী ছিলো।
একইদিন সকালে পৌরসভাধীন ১২নং ওয়ার্ড রান্ধুনীমুড়া গ্রামের ছৈয়াল বাড়ির মনোয়ার হোসেনের ছোট মেয়ে খাদিজা আক্তার (৩) পানিতে ডুবে মারা যায়। খাদিজা বাড়ির উঠানে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। খোঁজাখোঁজির এক পর্যায়ে বাড়ির পুকুরে ভাসতে দেখে বাড়ির লোকজন। সেখান থেকে খাদিজাকে তুলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে।
একই বুধবার দুপুরে উপজেলার দ্বাদশগ্রাম ইউনিয়নের কাপাইকাপ মিজি বাড়িতে মাইশা আক্তার (২) পানিতে ডুবে মারা যায়। মাইশা ঘটনার দুই দিন আগে মায়ের সাথে মতলব বাবার বাড়ি থেকে বেড়াতে নানার বাড়ি আসে। ঘটনার দিন মাইশা খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। খোঁজাখোঁজির এক পর্যায়ে বাড়ির পুকুরে ভাসতে দেখে বাড়ির লোকজন। সেখান থেকে খাদিজাকে তুলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে।
একইদিন বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নের মোল্লা ডহর গ্রামের ছৈয়াল বাড়ীর মৃত আনোয়ার মিয়ার স্ত্রী শিরিন বেগম (৫০) পুকুরে ডুবে মারা যায়। শিরিন বেগম মৃগী রোগী ছিলে বলে নিহতের পরিবার নিশ্চিত করেছে।
গত শুক্রবার উপজেলার বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নের রায়চোঁ বেপারী বাড়িতে জসিম উদ্দিনের ছেলে জাবেদ হোসেন (২) পানিতে ডুবে মারা যায়। শিশুটির পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, শিশুটি বাড়ির উঠানে খেলার সময় পরিবারের অগোচরে বাড়ির পুকুরে পানিতে ডুবে যায়। পরে খোঁজাখুজির এক পর্যায় তাকে পানিতে ভাসতে দেখেন বাড়ির লোকজন। এ সময় দ্রুত শিশুটিকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।
হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ বলেন, কোনো অভিযোগ না থাকায় এবং লিখিত আবেদনের ভিত্তিতে ময়নাতদন্ত ছাড়া আমরা শিশুদেন মরদেহ নিহত শিশুদের পরিবারের নিকট হস্তান্তর করেছি। অপর এক প্রশ্নে এই কর্মকর্তা বলেন, মৃগী রোগী হউক আর শিশু হউক, পানিতে ডুবে মারার জন্য মূলত: দায়ী অভিভাবকরা। শিশুদের দেখভালের বিষয়ে বিশেষ করে শিশুরা ঘরের বাইরে খেলতে গেলে অভিভাবকদের আরো সতর্ক থাকতে হবে।