প্রকাশ : ২২ জুন ২০২২, ১১:০২
শাহরাস্তি উপজেলা কমপ্লেক্স পুকুর উন্নয়ন প্রকল্প এখন মরণ ফাঁদ
হুমকির মুখে প্রশাসনিক ও আবাসিক ভবন
শাহরাস্তি উপজেলা পরিষদের পুকুর উন্নয়ন প্রকল্প এখন সকলের মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে গিয়ে এখন হুমকির মুখে পড়েছে পুকুরের চারপাশে থাকা ভবনগুলো। ইতিমধ্যেই প্রকল্পটি পুকুরে তলিয়ে গিয়েছে। ভাঙ্গনের মুখে আতংক নিয়ে বসবাস করছেন উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ। কেউ কেউ বাসা ছেড়ে চলে গেলেও অনেকেই অনত্র বাসা ভাড়া নিতে ছুটাছুটি করছেন।
|আরো খবর
জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক সারাদেশে পুকুর ও খাল উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে শাহরাস্তি উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স পুকুর ও চিতোষী আর. এম. উচ্চ বিদ্যালয়ের পুকুরের উন্নয়ন বরাদ্দ দেয়া হয়। এতে ৮৪ লক্ষ্য ৩১ হাজার টাকার চুক্তি মূল্যে চাঁদপুরের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স আলিফ এন্টারপ্রাইজ কাজ শুরু করেন।
রমজানের প্রথম সপ্তাহে তারা পুকুর দুটির উন্নয়ন কাজ শুরু করে। পুকুরের মাঝখান থেকে বেকু দিয়ে চারপাশে ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হয়। তড়িঘড়ি করে পুকুর খননের কাজ ঈদের আগেই সমাপ্ত করা হয়। ওয়াকওয়ে নির্মাণের সপ্তাহ পার না হতেই চারপাশে ওয়াকওয়ে ধ্বসে পড়া শুরু হয়। পুকুরটি বার বার সেচেও প্রকল্পের বাকি কাজ করতে ব্যার্থ হয় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে পুকুরটি ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে।
প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। চারপাশে থাকা ভবনগুলো হুমকির মুখে পড়েছে। আশপাশের লোকজন পুকুরটি দেখতে ছুটে আসছেন । ভাঙ্গণ ঠেকিয়ে ভবনগুলো রক্ষাকরা কঠিন হয়ে পড়েছে।
উপজেলা প্রকৌশলী সৈয়দ মেহেদী হাসান জানান, বেলে মাটির কারণে চারপাশের মাটিগুলো ধ্বসে পড়ছে। এখানে এ প্রকল্পটি দেয়া ঠিক হয়নি। মাটির ধ্বস ঠেকাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আহসান উল্যাহ চৌধুরী জানান, রাতে তার ঘুম হয়নি। কখন ভবনটি ধ্বসে পড়ে সেই চিন্তায় ছিলাম। পরিষদের বাহিরে বাসা খুঁজছি। এখানে আতংকের মধ্যে বসবাস করা যাবে না।
সহকারী যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম স্বপরিবারে পুকুরের পাড়ের ভবনে বসবাস করছেন তিনিও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নিরাপদে চলে যাবেন বলে জানান।
ইতিমধ্যে পল্লী দারিদ্র বিমোচন অফিসার শাহ জাহান ভবন ছেড়ে দিয়েছেন। উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা হাফেজ আহমেদ বলেন, পুকুরটি আগেই ভালো ছিল। মুসল্লিগণ এখানে অজু ও গোসল করতো। মাছ চাষ হতো, এখন সুন্দর্য বাড়াতে গিয়ে উল্টো বিপদ ডেকে আনা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ হুমায়ুন রশিদ জানান, এ প্রকল্পটি আমাদের উপকার করতে গিয়ে ক্ষতি করে ফেলেছে। এটি আমাদের ভালো পাড়ও ভেঙে ফেলছে। এখন আমাদের ভাঙ্গণ ঠেকাতে হবে।
আমি উপজেলা প্রকৌশলীকে বলেছি, এমপি স্যারের বিশেষ বরাদ্দ থাকে প্যালাসাইটিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে, আজই কাজ শুরু করা হবে। বর্তমানে ভাঙ্গণ ঠেকানো গেলে পরবর্তীতে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে, এ প্রকল্পের অপরটি চিতোষী আর. এম. উচ্চ বিদ্যালয় পুকুর উন্নয়ন কাজও এগিয়ে চলেছে, তবে সেটি উপজেলা কমপ্লেক্স পুকুর থেকে কিছুটা ভালো অবস্থানে রয়েছে বলে জানান স্থানীয় লোকজন।