প্রকাশ : ২৩ মার্চ ২০২২, ১৯:৩০
চাঁদপুর কন্ঠে সংবাদ প্রকাশের কয়েক ঘন্টার মধ্যে
প্রশাসনের কারনে মায়ের কোলে ফিরলো দত্তক দেয়া শিশু
হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমেনা আক্তার ও অফিসার ইনচার্জ জোবাইর সৈয়দের সরাসরি নির্দেশনা রাজধানীতে বসবাসকারী দত্তক নেওয়া পরিবারের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ১৩ মাসের শিশু সুমাইয়া আক্তারকে। উদ্ধারের পর পর শিশুটিকে হাজীগঞ্জে নিয়ে আসে থানা পুৃলিশ। এর পরে শিশুটির বাবা- মায়ের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে বুঝিয়ে দেয়া হয় শিশুটিকে। এর আগে গত মঙ্গলবার লাখ টাকায় দত্তক দেয় শিশুটির বাবা- মা আর এ সংক্রান্ত একটি নিউজ ভিডিওসহ চাঁদপুর কন্ঠের অনলাইন ভার্সনে ও বুধবার প্রিন্ট সংস্করনে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। প্রতিবেদন প্রকাশের পরই শিশুটিকে উদ্ধারে তৎপর হয়ে উঠে উপজেলা প্রশাসনসহ থানা পুলিশ। সর্বশেষ বুধবার দুপুরে শিশুটির বাড়িতে সরজমিনে আসেন ইউএনও মোমেনা আক্তার ও অফিসার ইনচার্জ জোবাইর সৈয়দ।
বুধবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে ১০ হাজার ও পুলিশ সুপারের পক্ষ থেকে ১০ হাজার টাকা শিশুটির বাবা-মায়ের হাতে তুলে দেন উপরোক্ত এই দুই কর্মকর্তা। এছাড়াও শিশুটির বাবার চিকিৎসার ব্যবস্থাসহ শিশুটির পরিবারের পাশে থাকার কথা বলেন প্রশাসন ও পুলিশ। এর আগে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে রাজধানীর সাভার এলাকা থেকে শিশুটিকে হাজীগঞ্জে নিয়ে আসেন, উপ-পরিদর্শক মো. নাজিম উদ্দীনসহ সঙ্গীয় ফোর্স।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমেনা আক্তার এ বিষয়ে জানান, ডিসি স্যারের অনুদানের টাকা শিশুটির বাবা মায়ের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। আপনাদের (সাংবাদিক) কাছ থেকে ম্যাসেজ পেয়েই ওসি সাহেবকে দিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে তার বাবা-মায়ের কোলে তুলে দিতে পেরে আনন্দ লাগে।
উল্লেখ্য জোবায়েরা আক্তার নামের ১৩ মাসের বয়সি শিশুটি হাজীগঞ্জ পৌর ৩ নং ওয়ার্ডের ধেররা-বিলওয়াই গ্রামের ইউনুস মজুমদার বাড়ির বশির-আসমা দম্পত্তির ছোট সন্তান। গত সোমবার দুপুরে এফিডেভিটের মাধ্যেমে সাভারে বসবাসকারী একটি পরিবারের কাছে সন্তান দত্তক দেন এই দম্পত্তি। দত্তক নেয়া পরিবারটি তাদেরকে খুশি হয়ে ১ লাখ টাকা দিয়েছেন বলে জানান শিশুটির বাবা মো: বশির।
এর আগে গত মঙ্গলবার দুপুরে সরজমিনে শিশুটি বাড়িতে গেলে বাবা মো. বশির জানান, ২০১৬ সালে সিএনজি চালিত স্কুটারের চাপায় গুরুতর আহত হন তিনি। এরপর চিকিৎসাজনিত কারণে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন। টাকার অভাবে চিকিৎসা এবং ঋণ পরিশোধ করতে পারছেনা। এছাড়াও তিনি অসুস্থতার কারনে আয়-রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে।
মো: বশির আরো জানান, আমার সাড়ে তিন বছর ও তের মাস বয়সি দুইটি কন্যা শিশু রয়েছে। টাকার অভাবে আমার চিকিৎসা, ঋণ পরিশোধ ও বাচ্চাদের খাবার কিনতে (ক্রয়) পারছিনা। এদিকে অসুস্থতার কারনে কাজও করতে পারছিনা। বাড়িতে বাবার পৈত্রিক সম্পত্তিও নানান জটিলটায় বিক্রি করতে পারছিনা। তাই ছোট মেয়েকে দত্তক দিয়ে দিয়েছি। মেয়েকে আদালতের মাধ্যমে দত্তক দিয়েছি তবে যারা দত্তক নিয়েছে তারা আমাকে ১লাখ টাকা দিয়েছে।
শিশুটির মা আছমা আক্তার জানান, নাড়ি ছেড়া ধন মেয়ের জন্য বুকটা ফেটে যায় । কি করবো, স্বামীর চিকিৎসা দরকার, দেনা পরিশোধ দরকার আবার স্বামী সুস্থ হলে কাজ কর্মে যেতে পারবে, এমন বিষয়গুলো ভেবে মেয়েকে দিয়েছি।
ক্যাপশন: ঊদ্ধারকৃত শিশুটির বাড়িতে গিয়ে শিশুটির বাবা মায়ের হাতে অনুদান তুলে দিচ্ছেন ইউএনও মোমেনা আক্তার ও ওসি জোবাইর সৈয়দ।