রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৪ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ০৭ নভেম্বর ২০২১, ০০:০০

জীবন যখন যেমন, তখন তেমন

সঞ্জয় কুমার অধিকারী

জীবন যখন যেমন, তখন তেমন
অনলাইন ডেস্ক

আমরা প্রত্যেকটি মানুষ আজ অবগত রয়েছি করোনা নামক মুকুটকে নিয়ে। যে কিনা নিজেই মুকুট, তার কোনো দৃশ্যমান রাজা নেই, যার মাথাায় সে শোভা পাবে। তবে সেই অদৃশ্য রাজার রাজ্য আছে, আর সেই রাজ্য হলো আমাদের এই সম্পূর্ণ পৃথিবী। পৃথিবীতে সৃষ্টিকর্তার পরে কোনো মানব শাসক হয়নি যে কিনা একা সম্পূর্ণ পৃথিবীটাকে শাসন করেছেন। এই অদৃশ্য রাজাই পেরেছে আজ পর্যন্ত পৃথিবীটাকে শাসন করতে। সে এখন পর্যন্ত মানবজাতির ওপর কঠিন শাসন করে যাচ্ছে। এই অদৃশ্য রাজার শাসন আবার উল্টা। মানবজাতির মধ্যে যিনি রাজা হয়েছেন তিনি তখন যা বলতেন তা প্রজারা শুনতে বাধ্য থাকতেন। আর যদি কোনো প্রজা না শুনতেন তাহলে তাকে কঠিন সাজা পেতে হতো। কিন্তু এই অদৃশ্য রাজা যা বলে সেটা যদি কেউ শুনে তাহলে তাকে খুব কষ্ট পেয়ে মরতে হয়। আবার মরেও নিস্তার নেই, মৃত্যুর পর তার পরিবারের মানুষরা যে তাকে নিয়ে কবর দেবে কিংবা সৎকার করবে তার সম্ভাবনা থাকবে ক্ষীণ। তাহলে আমরা ধরেই নিলাম এই রাজার কথা শুনবো না। কিন্তু না শুনলে কী হবে? অদৃশ্য রাজা খুব রাগ করলেন এবং তিনি চিন্তা করতে লাগলেন কিভাবে মানবজাতিকে শায়েস্তা করা যায়। এক সময় এই অদৃশ্য রাজা অদৃশ্য কারসাজির মাধ্যমে মানুষের মাধ্যমে বের করলেন লকডাউন নামক শব্দ। যার কাজ হবে সমস্ত পৃথিবীকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়া। ভাই-ভাই থেকে দূরে যাবে, বন্ধু-বন্ধু থেকে দূরে যাবে। পরিবারের মানুষদের থেকে আলাদা করে ফেলবে। আর সেই আলাদা থাকাটাকে বলবে কোয়ায়েন্টাইন।

মানব জাতি অদৃশ্য রাজার পাতা ফাঁদে পা দিলো, সকল মানুষ সকল মানুষকে অবিশ্বাস করতে লাগলো। এক সময় মানুষ ভাবলো, আমরা কেন এমন করছি? এটাতো আমাদের বৈশিষ্ট্য নয়। মানুষ তখন বাইরে বের হলো। একে অপরের সাথে মেলামেশা করতে শুরু করলো। আর আরেকটা নতুন কাজ করলো, সেটা হলো অদৃশ্য রাজার কোনো প্রভাব যেন মানুষের মধ্যে না পড়ে তার জন্য টিকা আবিষ্কার করলো। এবার অদৃশ্য রাজাতো খুব চিন্তায় পড়ে গেলো। তাহলে কি মানবজাতি এবার আমাকে পরাজিত করবে? না, সেটা হতে দেয়া যায় না। সে তার রূপ পরিবর্তন করলো এবং মানব জাতিকে আবার নাস্তানাবুদ করতে শুরু করলো।

মানবজাতি মানলো না তার বাধা, তারা আবার যুদ্ধে নামলো এবং অদৃশ্য রাজাকে প্রায় পরাজয় করে করে যখন অবস্থা, তখন অদৃশ্য রাজা নতুন একটা চাল চললো। সেটা হলো মূল্যবৃদ্ধি। পৃথিবীর পট এমনভাবে পরিবর্তন করলো যে, ধনী দেশগুলোও হাল ধরে রাখতে পারলো না। পৃথিবীতে দেখা গেলো অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেলো, অনেক মানুষ আয়ের উৎস হারিয়ে ফেললো এবং দেখা গেলো বেকারত্ব, যা কিনা সকল দেশের জন্যই মারাত্মক কষ্টদায়ক হয়ে গেলো। পৃথিবীতে অনেক উন্নত রাষ্ট্র যেখানে বেকারদের ভাতা দিতো, সেখানে এখন বেকার ভাতা দেয়া বন্ধ করে দেয়ার অবস্থায় আছে।

মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে আবার আসি। সম্পূর্ণ পৃথিবীতে আজ এমন কোনো উল্লেখযোগ্য পণ্য নেই যেটার মূল্য বৃদ্ধি পায়নি। একদিকে মানুষের উপার্জন কমে যাওয়া অন্য দিকে মূল্যবৃদ্ধি। মানবজাতি এবার কী করবে জানি না। এবার অদৃশ্য রাজার চালটা মনে হয় ঠিক জায়গায় লেগেছে। এবার আর তার কাজ করতে হবে না। সে মুচকি মুচকি হাসবে আর মানবজাতির তামাশা দেখবে। একজন একজনের মুখ থেকে খাবার কেড়ে নিবে, একে অপরকে মেরে ফেলবে, তখন কিছুই করার থাকবে না। শুধু একটা স্থানে কাজ করা যাবে, সেটা হলো একে অপরের কাঁধে হাত রেখে সৃষ্টিকর্তার নিকট দয়া প্রার্থনা করা।

সেখানেও অদৃশ্য রাজা হাত দিয়েছে। অদৃশ্য রাজা মানব জাতির মধ্যে একটা বিভেদ তৈরি করে দিলো। যেখানে কারণে অকারণে একে অপরের ওপর আঘাত করতে লাগলো। একে অপরের ওপর অবিশ্বাস তৈরি করে দিলো। তার ফলে দেখা যাচ্ছে, ভাই মারছে ভাইকে, প্রতিবেশী মারছে প্রতিবেশীকে, একদেশ আরেক দেশের মানুষকে মারছে।

সবশেষে বলবো, স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা যেহেতু এই পৃথিবীকে তৈরি করেছেন, সকল প্রাণীকে তৈরি করেছেন, নিশ্চয়ই তিনি একদিন মানবজাতির বাঁচার পথ তৈরি করে দিবেন। সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি, তিনি যেন আমাদের সেই সুন্দর পৃথিবীটাকে আবার ফিরিয়ে দেন। যেখানে আমরা সকল মানুষ এক অপরকে অবিশ্বাস করবো না। মানুষ মানুষের ক্ষতি করার চেষ্টা করবো না।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়