প্রকাশ : ১৫ আগস্ট ২০২২, ০০:০০
ইতিহাসের গর্ভ হতে জনক তোমার জন্ম হলো
শোষিতের মুখ মুক্তি সুখে ‘জয় বাংলা’ জোরসে বলো
তোমার জন্মে মধুমতী-বাইগার জলনূপুরে নাচে
তোমার বজ্রে বীর বাঙালি লাল-সবুজে ঘুরে বাঁচে।
তোমার কন্যা আর্তের ত্রাতা সাহসিনী বহ্নিশিখা
উঁচু শিরে তাঁর বিজয়ের গাথা মহাকাশে হলো লেখা
‘তলাহীন ঝুড়ি’ তুচ্ছ করে সে জিতেছে প্রতিটি রণ
বাংলাদেশ ও শেখ হাসিনা-জনক তোমার নবজীবন।
ঊনিশ শতক বাঙালিদের আলো এনে দিল ঢেলে
বৃটিশ সিংহ তেজ হারালো সময়ের ফুল পাপড়ি মেলে
অজ্ঞানতার আঁধার চিরে জ্ঞানের তরী হলো বাওয়া
হাজার বছর দ্রোহের শেষে ত্রাতার দেখা তবে পাওয়া।
ঊনিশশো বিশ সতের মার্চ দিন ছিলো না, মুক্তি ছিলো
বাংলামায়ের আকাশজুড়ে মেঘ ছিলো না বিন্দু-তিলও
গর্ভ হতে ধূলায় এলো খোকার রূপে মুক্তিদাতা
ছেষট্টিতে ছয় দফাতে স্বাধীনতার আঁচল পাতা।
সত্তরে হয় ভোটের আসর মুজিব বাজায় মুক্তিবীণা
মহাকাব্যে সমর শুরু বিপ্লব হাসে অস্ত্র বিনা
একাত্তরে জ্বলল আগুন মার্চে দেশে বজ্র হেনে
একভাষণে সারাবিশ্ব মুজিব কী তা উঠলো জেনে।
যার যা আছে তাই দিয়ে ভাই গড়তে হবে দুর্গ তোমার
মুক্তিপাগল বীর বাঙালি ভয় করেনি বুলেট-বোমার
বললো মুজিব উদ্যানে আর বাজলো বাঁশি রণাঙ্গনে
বুকের ভেতর বঙ্গবন্ধু জোগায় সাহস সঙ্গোপনে।
বাংলাদেশ তাঁর কন্যাসমান বঙ্গবন্ধু মহান পিতা
রক্তগাঙের পুণ্যধারায় লাল-সবুজ সাজ পরিহিতা
নয়টি মাসের গর্ভ হতে জন্ম হলো নতুন দেশের
হাসল হাসি বীর বাঙালি ফললো মেওয়া যুদ্ধ শেষের।
জনক এলো স্বাধীন দেশে মরণ ছিলো নিত্য সাথী
কেমন করে তাঁর কেটেছে বন্দি জীবন, দিবারাতি
কেউ জানেনি কোথায় তাঁকে হানাদারে রাখলো বেঁধে
মুজিব এলে বাংলাদেশে মাটি নিজেই উঠলো কেঁদে।
পাপে সে রাত উঠলো কেঁপে শ্রাবণ ছিলো দিনের শেষে
আগস্ট মাসের দুর্ভাগা দিন নিজেই নিজে গেলো ফেঁসে
দীন দুখিনি বাংলাদেশের দুচোখ ভাসে লবণ-জলে
জাতির পিতার হৃদয়খানি নিজের রক্তে গেলো গলে।
বেগম মুজিব কামাল জামাল নতুন ভাবীর সহযাত্রী
বসলো চেপে শেষ শ্রাবণের জগত-ঘৃণ্য অমারাত্রি
শেখ রাসেলের কোমল বুকে ঘাতক গুলির দানব ত্রাসে
ধানমন্ডির ঐ রক্তধারা আল্পনা দেয় গাঁয়ের ঘাসে।
একাশিতে ফিরলো মেয়ে বাপ-মা হারা খুনির দেশে
কন্যা তবু না দমে সে নিজের ঘরে ঢুকলো শেষে
খুনির দোসর আটকে দিলো বাপের ঘরের কপাট বেঁধে
সিঁড়ির বুকে বাবার রক্তে উঠলো মেয়ের আত্মা কেঁদে।
মেয়ের বুকে পণের পাথর অদ্রি অটল উন্নত শির
মহাশূন্যে যায় স্যাটেলাইট বিরোধীরা হলো বধির
পিতৃখুনের বিচার সেরে জাতির ললাট ফরসা করে
শেখ হাসিনা আর্তমাতা ভাসায় তরী জয়-সাগরে।
শেখ মুজিবের স্বপ্ন-সাহস শেখ হাসিনার শক্তি চলার
পশ্চিমাদের হয় না সাহস তলাবিহীন ঝুড়ি বলার
পিতার দর্শন মেয়ের প্রজ্ঞা উন্নয়নের যান-হাতিয়ার
নিজের অর্থে বানাই সেতু ভিক্ষার হাত না পাতি আর।
বিশ্বব্যাংক ও বিশ্বমোড়ল পদ্মাসেতুর ছিল বাধা
রইলো না তো কিছুই ঠেকে বরং হলো তারাই গাধা
দেশবিরোধী ভূতের দালাল ছড়িয়ে দেয় কল্লা-গুজব
শেখ হাসিনার প্রজ্ঞাবলে হারলো যতই হোক ঘাগু সব।
আটচল্লিশের যুবক মুজিব তিয়াত্তরে বিশ্বনেতা
জাতিসংঘে বাংলা ভাষায় এক নিমেষে বিশ্ব জেতা
একাত্তরের বজ্রবাণী ইউনেস্কোর বিশ্ব-দলিল
শোষিতের স্বর বঙ্গবন্ধু জেনেছে তা আকাশ-সলিল।
শতবর্ষের দরজা খুলে পিতা মুজিব জ্যোতির্ময় আজ
পদ্মাজয়ী বাংলাদেশের জগতজুড়ে জয়ের আওয়াজ
তাঁর কন্যা শেখ হাসিনা বিশ্বনেতার মুকুট শিরে
অবাক হয়ে রয় তাকিয়ে সব মহাদেশ তাদের ঘিরে।