প্রকাশ : ৩০ জুন ২০২২, ০০:০০
প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে সৃষ্ট বন্যা বাংলাদেশে ‘ভয়াবহ পরিস্থিতি’ তৈরি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাজ্যের বার্মিংহামের একজন দাতব্য কর্মী। বাংলাদেশে চলমান এই বন্যাকে তিনি রেকর্ড ভাঙা বন্যা বলেও আখ্যায়িত করেছেন।
সোমবার (২৭ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
বার্মিংহামের ওই দাতব্য কর্মীর নাম আতিকুর রহমান। তিনি বার্মিংহামের অ্যাস্টন-ভিত্তিক দাতব্য সংস্থা গ্লোবাল রিলিফ ট্রাস্টের একজন কর্মী। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশে রয়েছেন এবং বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষকে উদ্ধারে সাহায্য করছেন।
তিনি বলেছেন, অপ্রত্যাশিত ভারী বৃষ্টিপাত ও একইসঙ্গে ভারতীয় বাঁধ থেকে পানি ছেড়ে দেওয়ায় ব্যাপক এই বন্যার সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি করেছেন বাসিন্দারা। এমনকি এই ধরনের বন্যা ‘জীবনে একবার’ (ওয়ান্স ইন আ লাইফটাইম) দেখা যায় বলেও জানিয়েছেন তারা।
দাতব্য কর্মী আতিকুর রহমান যুক্তরাজ্যের ওয়েস্ট মিডল্যান্ড কমিউনিটিকে বাংলাদেশের বন্যার বিষয়ে আরও মনোযোগ দিতে এবং দান করতে আহ্বান জানিয়েছেন।
বিবিসি বলছে, ভারত ও বাংলাদেশে প্রবল বৃষ্টিপাত ও মৌসুমী ঝড়ের ফলে সৃষ্ট বজ্রপাত ও ভূমিধসে কয়েক ডজন মানুষ মারা গেছেন বলে জানা গেছে। একইসঙ্গে ভয়াবহ এই বন্যায় লাখ লাখ মানুষ আটকা পড়েছেন।
সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আতিকুর রহমান চলতি সপ্তাহের শুরুতে বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলীয় এলাকা সিলেটে যান। প্রতিবেশী দেশ ভারতের আসাম রাজ্যও একই ধরনের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আতিকুর বলেছেন, বন্যায় মানুষের জীবন-জীবিকা ধ্বংস হয়ে গেছে, ঘরবাড়ি ভেসে গেছে।
বিবিসিকে তিনি আরও বলেন, ‘আমি যে এলাকাগুলো পরিদর্শন করেছি তার মধ্যে এমন এলাকাও ছিল যেখানে আসলে আমার জন্ম হয়েছিল। তবে আমি এমন ধ্বংসযজ্ঞের কথা কখনও শুনেছি বলে মনে করতে পারি না।’
আতিকুর রহমান বলছেন, তিনি ৮০ বছরেরও বেশি বয়সী একজন ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেছেন। ওই ব্যক্তি তাকে বলেছেন, ‘এর আগে কোনো সময় বন্যার এতো খারাপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল বলে তিনি মনে করতে পারেন না’।
বার্মিংহামের এই দাতব্য কর্মীর ভাষায়, ‘আপনি যখন এখানকার প্রশাসনের কিছু সদস্য এবং স্থানীয় কিছু লোকের সঙ্গে কথা বলেন, তারা বলছেন, গত ৮০ থেকে ১০০ বছরের মধ্যে বন্যা পরিস্থিতি এতোটা খারাপ হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, যুক্তরাজ্যের ওয়েস্ট মিডল্যান্ডস এলাকায় বাসবাসরত বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের প্রায় ৮৫ শতাংশ মানুষ মূলত সিলেটের এই ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলের।
আতিকুর রহমানের ভাষায়, ‘সেখানকার (ওয়েস্ট মিডল্যান্ডস) শত শত মানুষ তাদের পরিবারের খোঁজ নিতে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। তবে ইন্টারনেট বা বিদ্যুৎ ছাড়া বন্যায় যোগাযোগ ব্যবস্থা চ্যালেঞ্জিং হয়ে পড়েছে। এখানে ভয়াবহ পরিস্থিতি বিদ্যমান।’। সূত্র : ঢাকা পোস্ট।