প্রকাশ : ৩০ জুন ২০২২, ০০:০০
নির্মম
খাঁচার পাখি ডেকে বলে মুক্ত পাখিরে,
তুমি বড় সুখে আছো চরাচরে মুক্ত বিচরণ করে ॥
খাঁচায় থেকে আমরা হারিয়েছি বিহঙ্গপনা,
তাতেই নাকি পালকের পূর্ণ হয় মনোরঞ্জন বাসনা ॥
খাঁচায় থেকে মোরা হারিয়েছি প্রভাতী রবের অভ্যাস,
মুক্ত তোমরা দিতে পার মানুষকে সূর্যোদয়ের আভাস ॥
খাঁচায় হারিয়েছি মোরা ছয় রাগ ছত্রিশ রাগিণীর বাহার,
উদয়াস্ত মুক্ত থেকে তোমরাই করিতেছ রেওয়াজ আচার ॥
খাঁচার প্রাত্যহিক পানাহারে নেই কোনো রুচির বিচার,
প্রাকৃতিক ব্যবস্থা মুক্ত বিহঙ্গের হয়ে যায় পানাহার ॥
খাঁচায় বন্দি মোরা হারিয়েছি সামগ্রিক স্বকীয়তা,
প্রকৃতিপ্রেমীরা মুক্ত পাখির কূজন শুনে হয়ে যায় আনমনা ॥
মানবকুল সভ্য অতি বুঝা উচিত খাঁচার বেদন,
খাঁচার পাখিদের বেলায় এ যেন সত্যি অরণ্যে রোদন ॥
অপরাধী মানবকুল শাস্তি ভোগে জেলখানায়,
নিরাপরাধ পক্ষীকুল বন্দী কেন লোহার খাঁচায় ॥
মুক্ত পাখিরা শঙ্কিত আর ভাবে মনে মন,
মানুষ যেন না করে আর এ নির্মম মনোরঞ্জন ॥
-০-
বাংলার পাখি
দোয়েলের লেজ পুচ্ছ অনুপম সুন্দর, মনকে মাতায়
তাই তার স্থান হয়েছে জাতীয় পাখির খাতায় ॥
উঁচুতে গাছের ডালায়, বাবুই বাঁধে বাসা নিপুণ শৈলীতে,
চড়ুই বাঁধে বাসা চৌচালা টিনের ঘরের কোণাতে ॥
টিয়া-ময়না-লেজ ঝোলা পাখি বাসা থাকে গাছের খোড়লে,
কোকিল বসন্তের দূত আর পরভূত, কাকের বাসায় জন্মে ॥
কাক না থাকলে দেশ হতো ভাগাড়, মাছ শিকারী বক,
চিল-বাজ-মাছরাঙ্গা-পানকৌ খায় মাছ, শকুন মৃত পশুর ভক্ষক ॥
ঘুঘু ডাহুকিয়া আর শুম্চা গ্রীষ্মের দুপুরে গভীর জঙ্গলে ডাকে,
কর্মজনিত অবসাদেও বিষণ্নতা তখনই যায় কেটে ॥
চাতক ঘুরে সুদূর আকাশে মেঘ বৃষ্টির আশে,
শালিক বুলবলি আর ফিঙ্গে খাবার তালাশে ঘুরে আমাদের পাশে ॥
বৌ কথা কও পাখির সুমিষ্ট ডাকে আমরা দারুণ মোহিত,
হলুদ পাখির ডাকে খোঁজে মেহমান আসবে কত?
ময়ুর-বাদুড়-করকর-কোয়েল ছাড়াও আছে অসংখ্য নামের পাখি,
এদের সংখ্যা আজও নির্ণীত হয়নি এইটুকু শুধু জানি ॥
অগণিত নাম না জানা অতিথি পাখির বিচিত্র সমাবেশ হয় এই দেশে,
কিছু কিছু নরপশু কুৎসিৎ নৃত্য করে অতিথি পাখি নির্মম শিকারে ॥
পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে অপরিহার্য অতিথি পাখির উপস্থিতি,
এই শিকারী দমন আইনের বিধানে নিশ্চিত হবে হবে শাস্তি ॥
-০-