প্রকাশ : ৩০ মার্চ ২০২২, ০০:০০
চাঁদপুর থিয়েটার ফোরামের আয়োজনে ও জেলা শিল্পকলা একাডেমির সহযোগিতায় বিশ্ব নাট্য দিবস বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে উদ্যাপন করা হয়। কর্মসূচির মধ্যে ছিলো বর্ণাঢ্য র্যালি, আলোচনা সভা (থিয়েটার আড্ডা) ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন ও বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদের দেশব্যাপী আয়োজনের অংশ হিসেবে গত ২৭ মার্চ রোববার বিকেল সাড়ে ৪টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে প্রথম পর্বে আলোচনা সভা (থিয়েটার আড্ডা) অনুষ্ঠিত হয়। থিয়েটার ফোরামের সভাপতি শহীদ পাটোয়ারীর সভাপ্রধানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব অজয় কুমার ভৌমিক।
তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, সত্যিকার কথা নাটকের মাধ্যমে নাট্য কর্মীরাই বলতে পারে। নবাব সিরাজউদ্দৌলা নাটক করতে আমাদের এক সময় অনুমতি দেয়া হয়নি। আমাদের অনেক নাট্য কর্মীকে জেল-হাজত খাটতে হয়েছে। নাটকের কালাকানুনের ফলে আমরা অনেক নাটক মঞ্চায়ন করতে পারিনি। কিন্তু সে সময় আমরা বসে থাকিনি। আমরা নাটকের মহড়া যথারীতি করে সরকারের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও মঞ্চায়ন করেছি। দেশ স্বাধীনের পরও আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে আমাদের নাট্যাঙ্গনের কার্যক্রম অনেকটা থমকে গিয়েছিলো। কিন্তু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সে কালাকানুন স্থগিত করে স্বাধীনভাবে নাটক মঞ্চায়নের সুযোগ করে দিয়েছিলেন। এরপর ১৯৭৫ সালের পটপরিবর্তনের ফলে আমাদের নাট্যকর্মীদেরকেও আন্দোলনে যেতে হয়েছে। তিনি বলেন, একটি রাজনৈতিক দলের চেয়ে নাটক সমাজ সচেতন করার উল্লেখযোগ্য বড় মাধ্যম। তিনি জানান, প্রখ্যাত নাট্যাভিনেতা হুমায়ূন ফরিদীও চাঁদপুরে মঞ্চ নাটক করেছেন।
অন্যান্য বক্তা বলেন, বিশ্ব নাট্য দিবস ১৯৬২ সালে প্রথম পালন করা হয় অস্টিয়ার ভিয়েনায়। বাংলাদেশে ১৯৯২ সালে প্রথম পালন করা শুরু হয়। বাংলাদেশে সব দিবসই আছে, আমরা বিশ্ব নাট্য দিবস সবাই মিলে পালন করবো। আমরা যদি মনে-প্রাণে সংগঠনকে ভালোবাসি, তাহলেই সব ভালো কাজ করা যাবে। মঞ্চ কর্মীরা নাটক আর সমাজ পরিবর্তনের মাধ্যমে যুগের পর যুগ বেঁচে থাকবে।
সভায় আরো বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর ড্রামার সভাপতি তপন সরকার, চতুরঙ্গ সাংস্কৃতিক সংগঠনের মহাসচিব হারুন আল রশীদ, স্বরলিপি নাট্যগোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এমআর ইসলাম বাবু, মেঘনা থিয়েটারের সভাপতি তবিবুর রহমান রিংকু, অনুপম নাট্যগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক গোবিন্দ ম-ল, চাঁদপুর ড্রামার সাধারণ সম্পাদক মানিক পোদ্দার ও অনন্যা নাট্যগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক মৃণাল সরকার। আলোচনা শেষে বিশ্ব নাট্য দিবসের বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি জেলা শিল্পকলা একাডেমির সম্মুখ থেকে শুরু হয়ে নতুন বাজার এবং মাতৃপীঠ স্কুলের মোড় হয়ে পুনরায় শিল্পকলা একাডেমি সম্মুখে এসে শেষ হয়।
সবশেষে নাট্যশিল্পী মৃণাল সরকারের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন সানজিদা আলম সাঞ্জু, কাজী কাবিশা, খাদিজা ফেরদৌস লিমা, অন্তরা বিনতে জাকির ও বীথি নন্দী। যন্ত্র সঙ্গীতে ছিলেন অনিক নন্দী।
৩টি পর্বে থিয়েটার ফোরাম ভুক্ত সদস্য সংগঠন অনন্যা নাট্যগোষ্ঠী, চাঁদপুর ড্রামা, অনুপম নাট্যগোষ্ঠী, বর্ণমালা থিয়েটার, স্বরলিপি নাট্যগোষ্ঠী ও মেঘনা থিয়েটারের অসংখ্য সিনিয়র ও জুনিয়র নাট্যশিল্পীরা অংশগ্রহণ করেন।