প্রকাশ : ২৬ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০
স্বাধীনতার ৫০ বছর পর হলেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সারাদেশের পেশাদার সাংবাদিকদের ডাটাবেজ (তালিকা প্রণয়ন) তৈরির কাজ সরকার হাতে নিয়েছে। যা নিঃসন্দেহে সরকারের একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ ও সাংবাদিকদের জন্য গর্বের। এটি গত বছর দশেক ধরে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে আন্দোলনের একটি মাইলফলক।
জানামতে, সমাজের বিভিন্ন পেশার মানুষের তালিকা সরকারের কাছে থাকলেও একমাত্র সাংবাদিকদের কোনো তালিকা নেই, যা দুঃখজনক। বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের তৎকালীন চেয়ারম্যান বিচারপতি মমতাজ উদ্দিন আহমেদ বলেছিলেন, ‘দেশে গরু-ছাগলের তালিকা সরকারের কাছে থাকলেও সাংবাদিকদের তালিকা নেই’। কথাটি শোনতে কেমন শোনালেও গভীরতা কিন্তু অনেক। ডিজিটাল প্রযুক্তির দেশে গাড়ির কাগজপত্র থেকে সবকিছুই আপডেট ভার্সনে রয়েছে। কিন্তু সাংবাদিকরা সেকেলে রয়ে গেছে। তবে কোন অসাংবাদিক যেন এই তালিকায় স্থান না পায় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
স্পষ্ট যে পেশাদার সাংবাদিকদের তালিকা প্রণয়নের ব্যাপারে দেশের একটিমাত্র সংগঠন বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম ২০১৩ সালে এই দাবি তুলেছিল। পরে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে দাবিটি জোরালো করে তোলা হয়। সাংবাদিকদের তালিকা প্রণয়নের কাজ বাস্তবায়নের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাসহ তথ্যমন্ত্রী ও সম্প্রচার মন্ত্রীর নিকট স্মারকলিপিসহ নানাভাবে দাবিটি তুলে ধরা হয়। ফলে বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের প্রচেষ্টায় ডাটাবেজ/তালিকা প্রণয়নের জন্য ইতিমধ্যে জেলা তথ্য অফিসারদের নিকট চিঠিসহ ছক পাঠানো হয়। চিঠিতে পুরো কর্মযজ্ঞ সম্পন্ন করতে জেলা পর্যায়ে একমাস সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে।
তথ্য অধিদপ্তরের প্রধান তথ্য অফিসার শাহেনুর মিয়া গত ৯ জানুয়ারি স্বাক্ষরিত একটি চিঠি ৬৪ জেলার তথ্য অফিসারদের নিকট এ চিঠি পাঠিয়েছেন। রাজবাড়িসহ কয়েকটি জেলায় এ চিঠি এখনও পৌঁছেনি বলে জানা গেছে।
প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনায় প্রণীত গণমাধ্যমকর্মীদের সংযুক্ত ছক অনুযায়ী তথ্যাদি পূরণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট জেলা তথ্য অফিসের সাথে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এটি সাংবাদিকদের গত ১০ বছরের আন্দোলনের ফসল। তালিকাটি প্রণয়নের মধ্য দিয়ে পেশাটির মাঝে ভুয়া, হলুদ ও অপ-সাংবাদিক নামের কালিমা চিরতরে মুক্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তালিকাটি প্রণয়নের জন্য সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা করা উচিত। নয়তো, সাংবাদিকদের স্বার্থে গড়ে ওঠা প্রকল্পটি নসাৎ হতে পারে। তাই সকল জেলা/উপজেলায় কর্মরত পেশাদার সাংবাদিকদের তালিকায় অন্তর্ভুক্তির জন্য বিএমএসএফর পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে।
এদিকে সাংবাদিকদের তালিকা প্রণয়নের কাজে একটি পক্ষ বিরোধী ভূমিকায়ও রয়েছে। তাই সাংবাদিকদের উচিত সকল ষড়যন্ত্রকে পেছনে ফেলে দ্রুত তালিকা প্রণয়নের কাজটি সম্পন্ন করতে সরকারকে সহায়তা করা। কেননা ২০১৮ সালেও অনুরূপ তালিকা প্রণয়নের কাজ হাতে নিয়েছিল বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল। কিন্তু অদৃশ্য কারণে ৫ বছরেও সেই তালিকা প্রণয়নের কাজ আলোর মুখ দেখেনি।
লেখক : আহমেদ আবু জাফর, প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম-বিএমএসএফ, কেন্দ্রীয় কমিটি।