বুধবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৫ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ৩০ অক্টোবর ২০২১, ০০:০০

দোষীদের বিচারের মাধ্যমে সরকারের সদিচ্ছা প্রমাণ করা চাই
অনলাইন ডেস্ক

কুমিল্লায় পূজা মণ্ডপে কোরআন অবমাননার অভিযোগ তুলে এবং নানা গুজব ছড়িয়ে ষড়যন্ত্রকারীরা কুমিল্লায় যা করতে পারেনি, তারচে’ বহু বহুগুণ করেছে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ, নোয়াখালী, ফেণী, চট্টগ্রাম, রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। শারদীয় দুর্গোৎসবে প্রতিটি পূজা মণ্ডপে সিসি ক্যামেরা এবং স্বীয় স্বেচ্ছাসেবক দল দিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিতের নির্দেশনা প্রদান করে সরকার ও স্থানীয় প্রশাসন যে আত্মতুষ্টিতে ভুগছিলো, তার সঠিকতা প্রশ্নবিদ্ধ করেছে কুমিল্লার ঘটনা এবং এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত ঘটনাসমূহ। এসব ঘটনায় সরকারের ভাবমূর্তি দেশের ভেতরে ও বাইরে ক্ষুণœ হয়েছে। আর দেশের সামগ্রিক ভাবমূর্তি আন্তর্জাতিক মহলে মারাত্মকভাবে ক্ষুণœ হয়েছে। সেজন্যে সরকার স্বীকার করুক আর না করুক, ভেতর ও বাইরের নানা চাপে রয়েছে সরকার।

১৩ অক্টোবর কুমিল্লা ও হাজীগঞ্জের ঘটনার হোতাসহ সারাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের হোতাদের সরকার তার সংস্থাসমূহের মাধ্যমে চিহ্নিত এবং অনেককে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে। অতীতেও অনুরূপ সক্ষমতা প্রদর্শন করেছে, কিন্তু ন্যায়বিচার বা দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করতে পারেনি। তবে সরকার এবং সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থানকারী দলগুলো পারস্পরিক দোষারোপে অতীতে যেমন এগিয়ে ছিলো, এখনো আছে। এটা যেনো বাজে সংস্কৃতিতে পরিণত হতে যাচ্ছে।

গত ২৮ অক্টোবর সকাল ১০টায় টিআইবির সহযোগিতায় দেশের ৪৫টি সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) নিজ এলাকায় একযোগে মানববন্ধন করেছে। সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক সহিংস ঘটনায় অবিলম্বে সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সংক্রান্ত এক চিঠিতে টিআইবি লিখেছে, চিরাচরিত রাজনৈতিক দোষারোপের বাইরে এখন পর্যন্ত অধিকাংশ স্থানেই প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি। এই ঘটনার পূর্ববর্তী সমস্ত সহিংসতাতেও আমরা একই দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি দেখতে পাই। এ চিঠিতে আরো লিখা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণে অবিলম্বে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার সমস্ত ঘটনার সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করা জরুরি হয়ে পড়েছে। আমরাও তাতে সহমত পোষণ করছি।

আশার কথা এই যে, বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ সংখ্যালঘু হামলার বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। যে নির্দেশে ছয় জেলার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে দু মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের কথা বলা হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট ও সংখ্যালঘু হামলার সাথে সংশ্লিষ্টদের দ্রুত আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে উপযুক্ত বিচারের বিষয়ে আশ্বাস বাণী শুনিয়েছে।

আমরা মনে করি, অতীতে সংখ্যালঘুদের মন্দির, বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলার প্রেক্ষিতে সরকারের উচ্চারিত সকল আশ্বাস বাণীকে বাস্তবতায় রূপ দিতে যথেষ্ট ঘাটতি লক্ষ্য করা গেছে। আর এমনটি নয়। সরকারকে কথা ও কাজে মিল খোঁজার আন্তরিক প্রয়াস চালাতে হবে। সদিচ্ছা, সততা ও আন্তরিকতার পরিচয় দিতে হবে। আর এজন্যে দোষীদের বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত বিচার নিশ্চিত করার বিকল্প নেই বলে সচেতন প্রতিটি মানুষ মনে করেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়