প্রকাশ : ২৯ অক্টোবর ২০২১, ০০:০০
আমরা রাজপথ-রেলপথ অবরোধের কথা শুনেছি এবং দেখেছি। সেটা নিতান্তই সরকারের বিপক্ষে অবস্থানকারী রাজনৈতিক দলগুলো করে থাকে। এতে হরতালের ন্যায় সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। তবে জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী এমন কর্মসূচিকে সাম্প্রতিক সময়ে সাধারণ মানুষ সমর্থন করে না, পছন্দ করে না এবং অংশও নেয় না। এটি একটি রাজনৈতিক ভোঁতা অস্ত্রে পরিণত হয়েছে। এমনটি উপলব্ধি করে এখন মানববন্ধনের ন্যায় শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে অধিকাংশ রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক সংগঠন। এমনকি শাসক দল এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানও জনসচেতনতা সৃষ্টিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।
এই যখন বাস্তবতা, তখন হাজীগঞ্জে শাসক দলের তথা আওয়ামী লীগের লোকজনকে রাজপথ অবরোধ করতে দেখা গেলো। গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত সংবাদে লিখা হয় যে, হাজীগঞ্জের কালোচোঁ দক্ষিণ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের নাম সভাস্থলে ঘোষণা না করায় রাজপথ অবরোধ করা হয়। সভাস্থল রামপুর হাই স্কুল থেকে তিন কিলোমিটার দূরে বলাখাল বাজারে চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধে অংশ নেয় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের লোকজন। বুধবার বিকেলে ঘটে এই ঘটনা। এর ফলে ব্যস্ততম এ সড়কটিতে পৌনে এক ঘন্টা সকল প্রকার যান চলাচল বন্ধ থাকে।
উক্ত বর্ধিত সভার আয়োজন করা হয় আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে কালোচোঁ দক্ষিণ ইউপির চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী নির্ধারণ করার জন্যে। এ সভায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গাজী মাঈনুদ্দিন নৌকা প্রতীক প্রাপ্তির জন্যে আগ্রহী প্রার্থীদের হাত তুলতে আহ্বান জানান। এতে ১০ জন প্রার্থী হাত তুললেও তাদের নাম লিপিবদ্ধ করা হয়নি। ফলে নেতৃবৃন্দ সভাস্থল ত্যাগ করলে হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন প্রত্যাশী এসএম মানিক ও আনোয়ার হোসেন মজুমদারের লোকজন সভাস্থল থেকে সদলবলে ছুটে এসে তিন কিলোমিটার দূরবর্তী স্থানে বলাখালে রাজপথ অবরোধ করে। হাজীগঞ্জ থানার পুলিশ অবরোধকারীদেরকে বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দিলে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। এ ব্যাপারে গাজী মাঈনুদ্দিন জানান, সভাটিতে যারা হাত তুলেছে তাদের সবার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কিছু অতি উৎসাহী লোক বিষয়টি ঘোলাটে করার চেষ্টা করেছে।
আমরা হাজীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যের সঠিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে চাই না। আমরা কালোচোঁ দক্ষিণ ইউপির চেয়ারম্যান পদে নৌকার প্রতীক প্রত্যাশী দুজন প্রার্থীর রাজপথ অবরোধ করার মতো কর্মসূচি নিয়ে প্রশ্ন তুলতে চাই। এটি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের লোক হয়েও তাদের বৈধ অধিকারের আওতায় পড়ে কিনা?-যদি পড়ে, তাহলে কোনো কথা নেই। আর যদি না পড়ে, তাহলে তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা দরকার এবং সাংগঠনিক শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করা দরকার বলে মনে করি।