বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৫ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ১৫ নভেম্বর ২০২১, ০০:০০

মায়ের সামনে অটোবাইক চাপায় শিশু নিহতের ঘটনায় পার পেয়ে যাচ্ছে ঘাতক চালক!
কামরুজ্জামান টুটুল ॥

মায়ের সামনে অটোবাইক চাপায় শিশু ইব্রাহিম খলিলের (৮) ঘাতক অটোবাইক চালক হাজীগঞ্জের বাকিলা ইউনিয়নের মধ্য সন্না মিজি বাড়ির মৃত ইদ্রিস মিজির ছেলে ইউনুস মিজি (৫০) (প্রকাশ্যে ইনু মিজি) শেষ পর্যন্ত পার পেয়ে যাচ্ছেন। শিশুটির পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় কোনো অভিযোগ না করায় ঘাতক চালক পার পেয়ে যাওয়ার বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যায়। এদিকে রোববার সকাল ৯টায় জানাজা শেষে নিহত ইব্রাহিম খলিলকে নিজ বাড়ির পারিবারিক গোরস্তানে দাফন করা হয়। শিশুটি একই ইউনিয়নের মধ্য সন্না খান বাড়ির মাওলানা ইলিয়াস খানের একমাত্র সন্তান। এর আগে গত শনিবার সন্ধ্যার কিছু আগে হাজীগঞ্জের বাকিলা-চাপাতলি সড়কের সন্নার কানির বাড়ি এলাকায় মায়ের সামনে অটোবাইক শিশুটিকে চাপা দিলে মারাত্মক আহত হয়। ঘটনার পর পর শিশুটিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্মরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার রাতেই প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে ময়না তদন্ত ছাড়া লাশ বাড়িতে নিয়ে আসে নিহতের পরিবার।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাকিলা-চাপাতলী সড়কের বাকিলা বাখরপাড়া রূটে প্রায় ৩০টি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল করছে। ইউনিয়ন পরিষদের কিংবা কোনো ধরনের প্রশাসনিক অনুমোদন ছাড়া বিদ্যুৎখেকো এই অটোবাইকগুলো বাকিলা বাজারস্থ স্ট্যান্ড কমিটিকে দৈনিক ২০ টাকা হারে সিরিয়ালের নামে চাঁদা দিয়ে বেপরোয়া গতিতে চলাচল করছে। বেপরোয়া গতির কারণে প্রায় সময় কোনো না কোনো অটোবাইক দুর্ঘটনায় পতিত হয়। এছাড়াও বাকিলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান গেটের বিপরীত পাশে বাকিলা-চাপাতলী সড়কের উপর এই অটোবাইকের স্ট্যান্ড গড়ে উঠার কারণে সারাক্ষণ সড়কের এই অংশে যানজট লেগে জনদুর্ভোগ চরমে উঠে।

স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, ইব্রাহিম খলিল মারা যাওয়ার পর থেকে ঘাতক অটোরিকশা চালক ইউনুস মিজি পলাতক রয়েছে। পলাতক থেকে সে শিশুটিকে হত্যার বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য স্থানীয় একটি চক্রকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

বাকিলা বাজারস্থ সিএনজি স্ট্যান্ড কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম পাটোয়ারী জানান, সিরিয়ালের জন্য দৈনিক ২০ টাকা করে দেয়া অটোবাইকগুলোর কোনো অনুমতি নেই। তিনি আরো জানান, এখানে প্রায় ৩০টি অটোবাইক আছে, তবে দৈনিক চলাচল করছে ২০/২২টি।

হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ হারুনুর রশিদ জানান, শিশুটির পরিবারের লিখিত আবেদনের ভিত্তিতে ময়নাতদন্ত ছাড়া লাশ বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।

স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, শনিবার সন্ধ্যার আগে বাকিলা-চাপাতলি সড়কের সন্না কানির বাড়ির সামনে মায়ের সাথে সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলো শিশু ইব্রাহিম খলিল (৮)। সড়কের বিপরীত পাশ থেকে ব্যাটারি চালিত একটি অটোরিকশা ইব্রাহিমকে চাপা দেয়। এতে মারাত্মক রক্তাক্ত জখম হয় শিশুটি। সাথে সাথে স্থানীয়রা শিশুটিকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্মরত চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করে।

ঐ দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সন্না গ্রামের মৃত সেরাজল হকের ছেলে সফিকুর রহমান জানান, শিশুটি স্থানীয় ফুলছোঁয়া মাদ্রাসার ছাত্র। সন্ধ্যার কিছু আগে শিশুটিকে তার মা মাদ্রাসায় দিয়ে আসার জন্য নিজেদের বাড়ির সামনে সড়কের পাশে এসে দাঁড়ায়। কোনো কিছু বুঝে উঠার আগেই সড়কের বিপরীত দিক থেকে ব্যাটারি চালিত একটি অটোবাইক শিশুটির উপর উঠিয়ে দেয়। এ সময় আমরা অটোবাইকটিকে উল্টে ধরে তার নিচ থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হলে সেখানে চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়