প্রকাশ : ০৫ জুলাই ২০২১, ০০:০০
জুলফু মিয়া খন্দকারের বয়স ১১০ বছর। বাড়ি সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নের বাগাদী খন্দকার বাড়ি। তিনি এমনিতেই স্ট্রোক করে প্যারালাইসিসে আক্রান্ত। তার ওপর আবার করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এ অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল মৃতপ্রায় অবস্থায়। এখন অনেকটা সুস্থ। তাই জুলফু মিয়া খন্দকারকে আড়াই শ' শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতাল থেকে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন তাঁর সন্তানরা।
শতোর্ধ্ব বয়সী বাবাকে এই হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয় ১ জুলাই। গতকাল চারদিন হলো। এই চারদিনে তাঁর অবস্থার অনেক উন্নতি হওয়ায় তাঁকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ করে দেয়া হয়। সন্তানরাও খুশি মনে বাবাকে নিয়ে বাড়ি চলে যান।
গতকাল দুপুরে জুলফু মিয়াকে হাসপাতাল থেকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন এই প্রতিবেদক। জুলফু মিয়ার সন্তানরা পূর্ব পরিচিত হওয়ায় হাসপাতালে কেনো জানতে চান এই প্রতিবেদক। তখন তাঁর মেয়ে হাসিনা বেগম জানালেন তাঁর বাবার অসুস্থতার কথা। তিনি জানান, তাঁর বাবার বয়স ১১০ বছর। তিনি স্ট্রোক করে প্যারালাইসিসে আক্রান্ত। গত বুধবার রাতে তাঁর বাবার ভীষণ জ্বর হয়। কথাবার্তা বন্ধ হয়ে যায়। সন্তানরা মনে করলেন তাঁর বাবার এই বুঝি শেষ বিদায়। তাঁকে কোথায় দাফন করা হবে সেটিও সন্তানরা ঠিক করে ফেলেন। তারা কান্নাকাটি করছেন। মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। সে জন্যে হাসপাতালেও আনতে পারছেন না। সবাই দোয়া দরুদ পড়ছেন। রাতটা কোনো রকম পার করে পরদিন সকালে তাঁকে সদর হাসপাতালে আনা হয়। ডিউটি ডাক্তার দেখে আইসোলেশন ওয়ার্ডে তাঁকে ভর্তি দেন। সেদিন তাঁর স্যাম্পল পরীক্ষা করা হয়। রিপোর্টে পজিটিভ আসে। সেদিন থেকেই তাঁর চিকিৎসা শুরু হয়। তিনদিনের চিকিৎসায় তিনি অনেকটা সুস্থ হয়ে ওঠেন। সে জন্যে হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেয়া হয়। সন্তানরা খুশি মনে বাবাকে নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। মেয়ে হাসিনা বেগম, দুই ছেলে ও এক নাতি এ সময় সেখানে ছিলেন। হাসিনা জানালেন তার বাবা এখন কথা বলতে পারেন।
এ বিষয়ে কথা হয় হাসপাতালের আরএমও ও করোনা বিষয়ক ফোকালপার্সন ডাঃ সুজাউদ্দৌলা রুবেলের সাথে। তিনি জানান, করোনা আক্রান্ত রোগীর অক্সিজেনের অবস্থা খারাপ না থাকলে আমরা সে রোগীকে কয়েকদিন চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেই। তার চিকিৎসা ফোনে দেয়া হয়। জুলফু মিয়ার বেলায়ও তাই হয়েছে।