প্রকাশ : ০৫ জুলাই ২০২১, ০০:০০
চাঁদপুর শহরের পুরাণবাজারে লকডাউন উপেক্ষিত করে খোলা রাখা হয়েছে সব ধরনের দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। মাস্ক ব্যবহারে সাধারণ মানুষের মাঝে দেখা যায় অনীহা। বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়লে সরকার গত ২৮ জুন হতে ৩০ জুন পর্যন্ত দেশের সর্বত্র স্বাভাবিক লকডাউন ঘোষণা করে। কিন্তু অবস্থার উন্নয়ন না হওয়ায় গত ১ জুলাই হতে সারাদেশে শুরু হয় কঠোর লকডাউন। যা অমান্যকারীদের জরিমানা করাসহ ৬ মাসের কারাদ- প্রদানেরও বিধান রয়েছে। এমনি পরিস্থিতিতে প্রথমদিনের লকডাউন সর্বত্রই পালিত হয়েছে। লকডাউন কার্যকরে সারাদেশের ন্যায় চাঁদপুর শহরেও প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। যা কঠোর বিধিনিষেধের তৃতীয় দিনেও ছিল অব্যাহত।
সরকার ঘোষিত সর্বাত্মক কঠোর লকডাউন বাস্তবায়ন করতে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অবস্থানে থাকলেও পুরাণবাজার বাণিজ্যিক এলাকায় লকডাউন তেমনভাবে কার্যকর হচ্ছে না বলেই পরিলক্ষিত হয়। লকডাউন চলাকালীন নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা যাবে, সরকারের এমন ঘোষণার প্রেক্ষিতে এ সুযোগ কাজে লাগাচ্ছেন পুরাণবাজারের সকল ধরনের ব্যবসায়ীগণ। পুরাণবাজারের সর্বত্র প্রথমদিন লকডাউন কার্যকর করা হলেও লকডাউনের তৃতীয় দিন ছিল সম্পূর্ণ উল্টো চিত্র। এদিন দেখা যায় নিত্য প্রয়োজনীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি লোহা-লক্কর, জামা, জুতা, সুতাসহ সকল ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছিলো খোলা। অন্য দিনের মতোই তারা দোকানদারিতে ছিল সমান আগ্রহী। যদিও ক্রেতা সাধারণের উপস্থিতি ছিল খুবই নগণ্য। বাতাসা পট্টি, চাউল পট্টি, তামাক পট্টি, ফল পট্টি, মনোহারী পট্টি, ট্রাংক পট্টি, আড়ৎ পট্টিসহ সকল স্থানের সারি সারি দোকানপাট খোলা রাখায় মনে হয়েছে এ সকল এলাকা লকডাউন মুক্ত। আর দোকানদারসহ চলাচলকারী অধিকাংশ মানুষকেই দেখা যায় মাস্কবিহীন, যা স্বাস্থ্যবিধির পরিপন্থী।
করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে পূর্বেও যখন চাঁদপুরে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছিল, তখনও পুরাণবাজার এলাকায় লকডাউন কার্যকর করতে দেখা যায়নি। পুরাণবাজারে বসবাসরত জনপ্রতিনিধিসহ সচেতন নাগরিকদের লকডাউন কার্যকরে পূর্বেও যেমন কোনো ভূমিকা চোখে পড়েনি বর্তমান লকডাউনকালীন সময়েও তার চিত্র ছিল একইরকম। নতুনবাজারের সর্বত্র লকডাউন কার্যকর থাকলেও পুরাণবাজার এলাকায় তা তেমনভাবে কার্যকর না হওয়ায় সচেতন মহলের মাঝে স্বাস্থ্য সচেতনতা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। তারা মনে করেন, পুরাণবাজার ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় হওয়ায় এখানে স্বাস্থ্য ঝুঁকি অনেকাংশেই বেশি। তাই পুরাণবাজারে লকডাউন না মানার প্রবণতার কারণে বড় ধরনের বিপর্যয়ও দেখা দিতে পারে বলে সচেতন মহল মনে করেন। অবশ্য পুরাণবাজারে লকডাউন কার্যকরে প্রশাসনকে ঝটিকা অভিযান চালাতে দেখা যায়। যখনই পুলিশ, সেনাবাহিনী বাজার এলাকায় প্রবেশ করে তখনই দোকানদারগণ সতর্ক হয়ে পড়েন। প্রশাসনের লোকজন চলে যাওয়া মাত্রই তারা আবার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে বসেন। গতকাল বিকেলে একজন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর সদস্যরা পুরাণবাজারে টহল দেন। তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে সকলেই লকডাউন কার্যকরে ব্যস্ত হয়ে উঠে।