প্রকাশ : ২৫ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
শাহরাস্তিতে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ : ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ভাংচুর
৩ পুলিশ কর্মকর্তাসহ আহত ১৫ জনের অধিক
দেশব্যাপী কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের ডাকা কমপ্লিট শাটডাউন চলাকালে শাহরাস্তি উপজেলার দোয়াভাংগায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে দুপুর থেকেই শাহরাস্তি উপজেলার মূল ফটক শাহরাস্তি গেইট দোয়াভাঙ্গায় জড়ো হতে থাকে শিক্ষার্থীরা। সেখানে ছাত্রলীগের উপস্থিতি টের পেয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে পড়ে। এ সময় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। দুপুর আড়াইটার দিকে বেশ কিছু আন্দোলনরত শিক্ষার্থী মেহের ডিগ্রি কলেজের সামনে জড়ো হতে থাকলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে শিক্ষার্থীদের শান্ত হতে আহ্বান জানান এবং তাদেরকে দোয়াভাঙ্গায় যেতে বারণ করেন। শিক্ষার্থীরা পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে যেতে চাইলে তাদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এক পর্যায়ে সেখানে শিক্ষার্থীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এরপর পুলিশের সহযোগিতায় তারা শাহরাস্তি গেইট দোয়াভাঙ্গায় বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত হয়। স্লোগানের পাশাপাশি সেখানে কিছু ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। উত্তেজিত শিক্ষার্থীদের ইটের আঘাতে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (কচুয়া সার্কেল) রিজওয়ান সাঈদ জিকু, শাহরাস্তি থানার ওসি মোঃ আলমগীর হোসেন, পুলিশ পরিদর্শক মোঃ রোকন উদ্দিন ও পুলিশ সদস্য মিঠুন দেবনাথ আহত হন। তারা শাহরাস্তি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে পুনরায় আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করেন। এছাড়াও উক্ত ঘটনায় কয়েকজন আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও ১২ জন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। শাহরাস্তি উপজেলা ছাত্রলীগের নেতা ও জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক ইমরান মনির দাবি করেন, সংঘর্ষে পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক, পৌর কাউন্সিলরসহ ১২ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। বিকেল সাড়ে চারটায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) সুদীপ্ত রায় ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসির আরাফাত। এরপর সকল কর্মকর্তা শিক্ষার্থীদের কথা শুনেন। শিক্ষার্থীরা প্রশাসনকে জানায়, তাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে ছাত্রলীগ বাধা দেয়। প্রশাসনের আহ্বানে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তাদের অবরোধ শেষ করে সন্ধ্যার পূর্বে বাড়ি ফিরে যায়। এদিকে দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক সড়কের দুপাশে বিপুল সংখ্যক যানবাহন আটকা পড়ে। যানবাহন সংকটের কারণে ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ জনগণ। উত্তেজনা আর উৎকণ্ঠার মধ্য দিয়ে পার হয় কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কমপ্লিট শাটডাউন। শাহরাস্তি থানার ওসি মোঃ আলমগীর হোসেন জানান, আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। শিক্ষার্থীদের শান্ত রাখতে বার বার আহ্বান করা হয়েছে। আজকের ঘটনায় সহকারী পুলিশ সুপার (কচুয়া সার্কেল) ও আমিসহ ৪ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছি।