প্রকাশ : ৩০ জুন ২০২৪, ০০:০০
হাইমচরের তাজুল ইসলাম গংয়ের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন
গত ২৬ জুন বুধবার চাঁদপুর প্রেসক্লাবে হাইমচরের তাজুল ইসলাম ভূঁইয়া গংয়ের বিরুদ্ধে করা সংবাদ সম্মেলনের জবাবে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। গতকাল শনিবার বিকেলে চাঁদপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন করেন মোঃ শরীফ হোসেন গং।
হাইমচর উপজেলার দক্ষিণ আলগী গ্রামের মোঃ জসিম উদ্দিন ভূঁইয়াকে (ওরফে কানা জসিম) চিহ্নিত মাদক কারবারী উল্লেখ করে তার বিরুদ্ধে নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ তুলে ধরে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়। ৬০জন ভুক্তভোগীর পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন মোঃ শরীফ হোসেন।
তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত ২৬ জুন চাঁদপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে হাইমচরের কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া ওরফে কানা জসিম ও তার সহযোগী মাদক ব্যবসার অর্থদাতা মোঃ ফরিদ আহমেদ যেসব তথ্য তুলে ধরেছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভুয়া। তাদের এসব মিথ্যা তথ্যের তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছি।
মূলত কানা জসিমের বিরুদ্ধে এক ডজনেরও বেশি মাদক মামলা রয়েছে। সে এলাকায় চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইসহ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। একই সাথে তার মাদক ব্যবসায় আত্মীয়-স্বজন অনেকেই জড়িত। অনুসন্ধান করলে এসব তথ্য বেরিয়ে আসবে। লিখিত বক্তব্যে জসিম উদ্দিন ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধারায় করা ১০টি মামলার বিবরণ তুলে ধরা হয়।
শরীফ হোসেন বলেন, মূলত আমরা হাইমচর দক্ষিণ আলগী গ্রামে একটি বিদ্যালয় স্থাপন করি। ওই বিদ্যালয়ের সিসি ক্যামেরা থাকায় কানা জসিমের মাদক কারবার চালাতে সমস্যা হচ্ছে। যে কারণে ক্যামেরা সরিয়ে নিতে সে আমাদের বহুবার হুমকি ধমকি দেয়। যে কারণে কানা জসিম আমার ভগ্নিপতি তাজুল ইসলাম ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে এবং বানোয়াট কথা বলে সম্মানহানি করার চেষ্টা করছে।
সম্প্রতি কানা জসিমের সাথে মাদক বেচাকেনা নিয়ে মারামারি হয়। সেখানে জসিম নিজে নিজের হাতে আঘাত করে আমার ভগ্নিপতি ও তার ভাইকে মামলায় জড়ানোর চেষ্টা করে। আমার ভগ্নিপতি শুধুমাত্র আমাদের কোনো সমস্যা হলে বুদ্ধি ও পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করেন। কিন্তু তারা আমার ভগ্নিপতিকে বিভিন্নভাবে হয়রানির চেষ্টা করছেন।
শরীফ হোসেন সংবাদ সম্মেলনে যেসব অভিযোগ তুলে ধরেন তার মধ্যে অধিকাংশই হচ্ছে তার আপন জেঠা মোঃ সিরাজুল ইসলাম মিজির সাথে সম্পত্তিগত বিরোধ। গত তিন বছর ধরে এই বিরোধ অব্যাহত। এসব ঘটনায় আদালতে মামলাও হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু বিরোধ দীর্ঘসূত্রিতায় সিরাজুল ইসলাম জমি বিক্রি করায় প্রতিপক্ষ বাড়তে থাকে। এসব ঘটনা কোনোভাবে সমাধান না হওয়ার কারণে শহিদ মিজির প্রতিপক্ষরা জমিগুলো দখলে নিতে নানা পরিকল্পনা শুরু করে।
শরীফ হোসেনের অভিযোগ-সম্পত্তিগত বিরোধে প্রতিপক্ষ লোকজন মাদক কারবারি কানা জসিমের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলে। তারা অর্থের বিনিময়ে কানা জসিমের সাথে চুক্তি করে আমি ও আমার পরিবারের সদস্যকে হত্যা করার জন্য।
তিনি বলেন, আমরা রাহাজানি, মারামারি ও সংঘাত চাই না। আমি সংবাদ সম্মেলনে যত কথা বলেছি সবগুলোর তথ্য প্রমাণ আছে। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ আমাদের সম্পত্তির কাগজপত্র পর্যালোচনা করে একটি স্থায়ী সমাধান করে দিক। একই সাথে এই মাদক কারবারিদের জুলুম, নির্যাতন, জোরপূর্বক জমি দখলসহ সকল মিথ্যাচারের বিচার কামনা করছি।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি শাহাদাত হোসেন শান্ত। সঞ্চালনায় ছিলেন সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান সুমন। প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শরীফ চৌধুরী, গিয়াসউদ্দিন মিলন, এএইচএম আহসান উল্যাহ, সিনিয়র সহ-সভাপতি রহিম বাদশাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে শরীফ হোসেনের পিতা শহিদ মিজিসহ ভুক্তভোগীদের মধ্যে বহু নারী-পুরুষ উপস্থিত ছিলেন।