রবিবার, ০২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫  |   ২৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ১০ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০

নায়েরগাঁওয়ে মাদক ব্যবসা জমজমাট
স্টাফ রিপোর্টার ॥

মতলব দক্ষিণ উপজেলার নায়েরগাঁওয়ে একটি পরিবারের মাদক ব্যবসা বন্ধ হচ্ছে না। দিন যতই যাচ্ছে তাদের মাদক ব্যবসা জমজমাট আকার ধারণ করে চলছে। নায়েরগাঁও বাজার এলাকায় মাদকের স্বর্গরাজ্য সৃষ্টি করছে রাজিয়া সুলতানার পরিবার। রাজিয়া সুলতানা ও তার দু সন্তানের নামে দুই ডজনের উপরে মাদকের মামলা চলমান থাকা সত্ত্বেও থেমে নেই তাদের মাদক ব্যবসা। রাজিয়া সুলতানা নায়েরগাঁও বাজারস্থ পাটন গ্রামের সফিকুল ইসলাম মেম্বারের স্ত্রী। তার পূর্বের স্বামীর নাম খলিলুর রহমান।

জানা যায়, রাজিয়া সুলতানা তার দুই সন্তানকে দিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ মাদকের রমরমা ব্যবসা করে আসছে। দাউদকান্দি সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় মাদকের একটি বিশাল সিন্ডিকেট গড়ে তুলে তারা। এমনকি নায়েরগাঁও এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও মাদক ব্যবসা জমিয়ে তোলায় এক নামে সবাই চিনেন রাজিয়া সুলতানাকে। ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করার সাহসও পায়না। একটি সূত্র জানায়, গত ২৩ জুলাই গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজিয়া সুলতানার বাড়িতে অভিযান করে চাঁদপুরের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। ওইদিন দীর্ঘ সময় অভিযান চালিয়ে রাজিয়া সুলতানার ঘরে থাকা মাদক ব্যবসায়ী আব্দুল খালেকের কাছ থেকে ২ হাজার পিচ ইয়াবা ও রাজিয়া সুলতানার কাছ থেকে ৮শ’ পিচ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। পরে খালেক ও রাজিয়াসহ তার এক সন্তান ডালিম প্রধানের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। ক’মাস জেলে থাকার পর জামিনে বেরিয়ে এসে পুনরায় তারা মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।

এদিকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর চাঁদপুর ও মতলব দক্ষিণ থানা সূত্রে জানা যায়, রাজিয়া সুলতানার ছেলে জাহাঙ্গীর আলম সেলিম একাধিকবার মাদকসহ বিভিন্ন থানায় আটক হয়। তার বিরুদ্ধে মতলব দক্ষিণ থানায় ৫টি, যাত্রাবাড়ী থানায় একটি, দাউদকান্দি থানায় দুটি এবং রামপুরা থানায় ১টিসহ ৯টি মাদকের মামলা রয়েছে।

অপরদিকে রাজিয়া সুলতানার ছোট ছেলে ডালিম প্রধানও বেশ কবার মাদকসহ পুলিশ ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের হাতে আটক হয়। তার বিরুদ্ধেও বিভিন্ন থানায় ১৭টি মাদকের মামলা রয়েছে। তন্মধ্যে মতলব দক্ষিণ থানায় ১৫টি এবং দাউদকান্দি থানায় ২টি মাদকের মামলা রয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে নায়েরগাঁও বাজারের ব্যবসায়ী ও ৪/৫জন বিভিন্ন দোকান মালিক জানান, তাদের এ অবৈধ মাদক ব্যবসার কারণে বাজারের দীর্ঘদিনের সুনাম নষ্ট হয়ে গেছে। কেউ প্রতিবাদ করলে নানা ধরনের মামলা হামলার হুমকি-ধমকি দেয়। রাজিয়া সুলতানা ও খালেক নামে ২জনকে ইয়াবাসহ হাতেনাতে আটক করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। পরে তাদেরকে মাদক মামলায় জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। জেল থেকে জামিনে বেরিয়ে এসে উল্টো চাঁদপুরের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তাসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে রাজিয়া সুলতানা তার মেয়েকে দিয়ে মিথ্যা একটি অভিযোগ করেন। তাই রাজিয়া সুলতানার ভয় ও আতঙ্কে থাকেন নায়েরগাঁও বাজারের দোকান মালিক ও সাধারণ মানুষ। কখন আবার কার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে।

নায়েরগাঁও বাজার বণিক ও জনকল্যাণ সমিতির সভাপতি মাসুদ রানা পাটোয়ারী বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে বাজারের ব্যবসায়ীবৃন্দ প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। যারা এসব ব্যবসা করে আসছে তাদেরকে বেশ ক’বার পুলিশ আটকও করেছে। এছাড়া তাদেরকে সতর্ক করাসহ মাদক ব্যবসা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

এ ব্যাপারে রাজিয়া সুলতানার সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর চাঁদপুরের সদ্য বিদায়ী সহকারী পরিচালক একেএম দিদারুল আলম বলেন, রাজিয়া সুলতানার পুরো পরিবারটি মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। তারা দীর্ঘদিন যাবৎ এ ব্যবসা করে আসছে বিধায় স্থানীয় লোকজনের নির্ভরযোগ্য তথ্যের ভিত্তিতে গত ২৩ জুলাই তাদের বাসায় অভিযান চালানো হয় এবং খালেক (২০০০ পিচ ইয়াব) ও রাজিয়া সুলতানার (৮০০ পিচ ইয়াবা) সহ আটক করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে মাদকের মামলা করা হয়েছে ।

মতলব দক্ষিণ থানার অফিসার ইনচার্জ রিপন বালা বলেন, রাজিয়া ও তার দু’ছেলের বিরুদ্ধে মতলব দক্ষিণ থানায় মাদকের অসংখ্য মামলা রয়েছে। তবে ওই মামলায় তারা জামিনে আছেন। তারা যদি আবারো মাদক ব্যবসা করে এবং হাতেনাতে পাওয়া যায় কোনো ছাড় দেয়া হবে না।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়