প্রকাশ : ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০
সিজারে একের পর এক প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর পর এবার ভুক্তভোগীর পরিবারের অভিযোগের তীর হাজীগঞ্জ মডেল হসপিটালের বিরুদ্ধে। সিজার করার সময় নবজাতকের বাম পায়ের হাড় ভেঙ্গে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) ওই হসপিটালের মেডিকেল অফিসার ও আবাসিক সার্জন (মেডিসিন, মা-শিশু, গাইনি, প্রসূতি, বন্ধ্যাত্ব ও সার্জারী) ডাঃ শেখ সাদিয়া আফরিন এবং মেডিকেল অফিসার ও অর্থোপেডিক চিকিৎসক ডাঃ রনি চন্দ্র মজুমদারসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৩/৪জনকে অভিযুক্ত করে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন মোঃ ইউসুফ নামের একজন। ইউসুফ হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন ৭নং ওয়ার্ড টোরাগড় গ্রামের হোসেন উদ্দিন হাজী বাড়ির বাসিন্দা।
অভিযোগে জানা যায়, মোঃ ইউসুফ মিয়ার স্ত্রী নাজমা বেগমের প্রসব ব্যথা উঠলে গত ১৮ এপ্রিল তাকে হাজীগঞ্জ বাজারস্থ মডেল হসপিটালে ভর্তি করানো হয়। ওইদিন বেলা ৩টার দিকে ডাঃ শেখ সাদিয়া আফরিন ও ডাঃ রনি চন্দ্র মজুমদারসহ অজ্ঞাতনামা বিবাদীগণের সহযোগিতায় তার স্ত্রীর ডেলিভারী (প্রসব) সম্পন্ন করা হয়। গত ২৬ এপ্রিল নবজাতকের (পুত্র সন্তান) বাম পায়ে সমস্যার খবর পেয়ে এক্স-রে করানো হয় এবং রিপোর্টে হাঁটুর উপরের অংশে হাড় ভাঙ্গা দেখা যায়। এ সময় মোঃ ইউসুফ মিয়া তার স্ত্রীর মাধ্যমে জানতে পারেন, ডেলিভারির সময় ভুল করে নবজাতকের বাম পায়ের হাঁটুর উপরের অংশ ধরে টানা-হেচঁড়া করার সময় হাড় দুই টুকরো হয়ে যায়।
এ বিষয়ে উল্লেখিত ইউসুফ মিয়া চিকিৎসকদের বিষয়টি জানালে তারা কোনো সদুত্তর দেননি এবং নবজাতককে অন্যত্র নিয়ে চিকিৎসা করোনোর চেষ্টা করলে উল্লেখিত চিকিৎসকরাসহ অজ্ঞাতনামা বিবাদীগণ বাধা প্রদানসহ হুমকি-ধমকি ও ভয়ভীতি প্রদান করার কথা অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
এ বিষয়ে ডাঃ রনি চন্দ্র মজুমদারের সাথে কথা হলে তিনি জানান, এ ঘটনার সাথে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তিনি বলেন, ওইদিন আমাকে ডেকে নেয়া হলে আমি শুধুমাত্র দেখে চলে আসি।
একই সময়ে ডাঃ শেখ সাদিয়া আফরিনকে চেম্বারে না পাওয়ার কারণে তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
শেষ পর্যন্ত এমন অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যাবে না উল্লেখ করে হসপিটাল কর্তৃপক্ষ জানায়, যেহেতু থানায় অভিযোগ হয়েছে, তাই বিষয়টি আইনিভাবেই দেখা হবে।
অভিযোগের বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ জোবাইর সৈয়দ জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার সাথে কথা বলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ গোলাম মাওলা নাঈম জানান, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত কয়েক সপ্তাহে সিজারিয়ান অপারেশনের ভুলে হাজীগঞ্জে একাধিক প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। তবে ওই সকল ঘটনায় শেষ পর্যন্ত কোন প্রসূতির পরিবারের পক্ষ থেকে আইনী সহায়তা চাওয়া হয়নি। সর্বশেষ নবজাতকের পায়ের হাড় ভাঙ্গার অভিযোগে আইনী সহায়তা চাইলো ভুক্তভোগী পরিবার।