প্রকাশ : ০৯ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০
শাহরাস্তি উপজেলার টামটা দক্ষিণ ইউনিয়নের দক্ষিণ টামটা গ্রামের মাইজের বাড়িতে নূরুন নাহার নামে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (৮ এপ্রিল) সকালে ময়না তদন্তের জন্যে তার লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে।
থানা পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, ৯ বছর পূর্বে ওই গ্রামের হুমায়ুন কবিরের পুত্র বাহারাইন প্রবাসী আনিসুর রহমানের সাথে মেহের দক্ষিণ ইউনিয়নের মালরা মজুমদার বাড়ির মোঃ আবুল কালামের কন্যা নূরুন নাহার স্বপ্নার (২৫) বিবাহ হয়। তাদের ঘরে আদিবা নামে ৪ বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে তাদের সংসারে কলহ লেগেই থাকতো। শেষ পর্যন্ত পৃথিবী থেকে নূরুন নাহার বিদায় নিলেন। এটি কি হত্যা না আত্মহত্যা তা নিয়ে ধু¤্রজাল দেখা দিয়েছে।
শুক্রবার (৭ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে সাড়ে ৮টার মধ্যে নূরুন নাহার স্বপ্না বসতঘরের আঁড়ার সাথে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে তার শ্বশুর হুমায়ুন কবির জানান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় নিহতের পিতা মোঃ আবুল কালাম শাহরাস্তি থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করলেও নিহতের মা দেলোয়ারা বেগম ও ভাই আলাউদ্দিন নয়নের দাবি ভুক্তভোগীকে হত্যা করে প্রথমে হার্ট এটাক ও পরে ফাঁস বলে প্রচার করা হচ্ছে।
সরজমিনে ওই বাড়িতে গিয়ে জানা গেছে, নিহতকে কেউ ফাঁসিতে ঝুলতে দেখেন নি। নিহতের শ্বশুরের বক্তব্য হলো, তিনি নিজ কন্যার বাড়ি থেকে ফিরে পুত্রবধূর লাশ ঝুলতে দেখে তিনি নিজেই সেখান থেকে লাশ নামিয়ে খাটে শুইয়ে রাখেন। পরে পাশের ঘরের লোকজন এসে নিহতের মৃতদেহ খাটে শোয়া অবস্থায় দেখেন। এদিকে ফাঁস দেয়ার সময় পুত্রবধূ কোনো দড়ি বা ওড়না ব্যবহার করেছে বলে শ্বশুর দেখাতে পারেন নি।
নিহতের মা দেলোয়ারা বেগম জানান, আমার মেয়ে কোনো অবস্থায় ফাঁস দিতে পারে না। তার শাশুড়ি জোৎস্না বেগম ও ননদ হালিমা আক্তার প্রকাশ ঝুলন তার মেয়ে স্বপ্নাকে খুন করেছে।
নিহতের ভাই মোঃ আলাউদ্দিন নয়ন জানান, বিয়ের পর থেকেই তার বোনের শ্বশুর হুমায়ুন, শাশুড়ি জোৎস্না বেগম ও ননদ হালিমা আক্তার ঝুলন তাকে বিভিন্নভাবে অত্যাচার করে আসছে। বোনের মৃত্যুর ২ দিন আগেও তাদের দালান নির্মানের জন্য ঋণ করে ৩০ হাজার টাকা দিয়ে গেছি। সেখানে তাদের চাওয়া ছিল ৫০ হাজার টাকা। ২০ হাজার টাকা কম থাকায় সেদিন ইফতারের পূর্বে তারা আমার সাথে মুঠোফোনে খুব খারাপ করেছে।
শাহরাস্তি মডেল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শহীদ হোসেন জানান, মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে নিহতের মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা রুজু করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।