মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫  |   ২৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ২৫ মার্চ ২০২৩, ০০:০০

৩ দিনেও সমাধান হয়নি মনোহরখাদী চরের ট্রলার থেকে লুট হওয়া ১০০ বস্তা আলুর বিষয় ॥ দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক
স্টাফ রিপোর্টার ॥

গত ৩ দিনেও সমাধান করা হয়নি চাঁদপুর সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের মনোহরখাদী চর থেকে ১০০ বস্তা আলু লুট হওয়ার বিষয়। ন্যায় বিচারের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক।

জানা যায়, মুন্সীগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ি উপজেলার হাটবালী গ্রামের রিপন বেপারী ও একই এলাকার লাল মিয়া গত ৭/৮ বছর যাবৎ বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের মনোহরদী গ্রামের স্থানীয় গ্রামবাসী থেকে প্রায় ২০ একর সম্পত্তি বর্গা বা ভাড়া নিয়ে আলু চাষ করে আসছেন। এরই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরেও উল্লেখিত দু’ব্যক্তি একইভাবে উক্ত এলাকায় আলু চাষ করেন। মৌসুম শেষে জমি থেকে আলু উত্তোলন করে বস্তায় ভরে বিক্রির জন্য মনোহরদী চরে রাখা ট্রলারে স্তূপ করে রাখেন।

হঠাৎ করেই গত ২১ মার্চ বিকেল ৫টায় স্থানীয় ওয়াসিমের নেতৃত্বে প্রায় অর্ধশতাধিক সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে চরে থাকা ট্রলারে হামলা চালিয়ে ১০০ বস্তা আলু জোরপূর্বক নিয়ে যায়। এ সময় ট্রলারে থাকা লোকজন ও আলুর মালিক বাধা দিলে ওয়াসিমের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। এতে ট্রলারের লোকজন ও আলুর মালিক মারাত্মক আহত নয়।

এদিকে এ ঘটনা দেখে আলুর মালিক ৯৯৯ নাম্বারে ফোন দিয়ে নৌ পুলিশের সহযোগিতা চায়। এরপর চাঁদপুর নৌ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নির্দেশে ঘটনাস্থলে দ্রুত ছুটে যান এসআই কামালসহ সঙ্গীয় ফোর্স। তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পান এবং ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ওয়াসিমকে আটক করেন। এরপর স্থানীয় চেয়ারম্যান নাছির উদ্দীন শামীম খানকে বিষয়টি অবহিত করা হলে চেয়ারম্যান বিষয়টি সমাধান করে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষককে তার প্রাপ্য বুঝিয়ে দেয়ার আশ্বাস দিলে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে চলে আসে। এ ঘটনার ৩ দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক এখনো ঘটনার কোনো সুরাহা পাননি বলে অভিযোগ করেছেন।

এ ঘটনার বিষয়ে ভুক্তভোগী কৃষক রিপন বলেন, আমাদের বাড়ি মুন্সিগঞ্জ। আমরা আজ ৬/৭ বছর যাবৎ এই গ্রামে আলু চাষ করছি। কেউ আমাদের কোনো ধরনের সমস্যা করে নি। হঠাৎ করেই গত ২১মার্চ স্থানীয় সন্ত্রাসী ওয়াসিম জোয়ারদারের নেতৃত্বে আমার আলুর ট্রলারে হামলা চালিয়ে ১০০ বস্তা আলু লুট করে নিয়ে যায় এবং আমার লোকজনকে আহত করে। আমার প্রতি বস্তায় আলু ছিলো ৬০ কেজি। মোট ৬০০০ কেজি আলু। আমি নিঃশেষ হয়ে গেছি। আমি কোনো উপায় না পেয়ে ৯৯৯ নাম্বারে কল দিলে পুলিশ আসে। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শামীম খান পুলিশ ও আমাকে শতভাগ আশ্বস্ত করে আমার ক্ষতি পুষিয়ে দিবে এবং এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার করবে বলে জানান। কিন্তু আজ ৩ দিন হলেও এই ঘটনার কোনো কিছুই হয়নি। শুধু তাই নয়, চেয়ারম্যান আমাকে পরিষদে যেতে বলে, আমি গেলেও তিনি আসেন না। তিনি আমার ফোনও রিসিভ করেন না। আমি এই ঘটনার ন্যায় বিচার চাই।

ঘটনার বিষয় নৌ পুলিশের এসআই কামাল বলেন, যে ঘটনাটি ঘটেছে তা দুঃখজনক। আমি ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর চেয়ারম্যান নিজে উপস্থিত হয়ে সমাধান করবেন বলে আশ্বস্ত করেন। এরপরও ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক এখনো সুরাহা পাননি শুনেছি, বিষয়টি দুঃখজনক। তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক চাইলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য দুলাল বেপারী বলেন, যা ঘটেছে তা দুঃখজনক। আমি তাৎক্ষণিকভাবে চেয়ারম্যানকে অবহিত করেছি। এখন সকল এখতিয়ার চেয়ারম্যানের।

ঘটনার বিষয়ে উক্ত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাছির উদ্দীন খান শামীম বলেন, আমি অসুস্থতার কারণে হয়তো ২দিন দেরি হয়েছে। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক শতভাগ ন্যায় বিচার পাবে এবং কোনো অংশে সে ঠকবে না।

তিনি আরো বলেন, ঘটনাটি স্থানীয় জমির মালিকদের জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ। এটি অন্য কোনো বিষয় নয়। বিষয়টি নিয়ে আমি উভয় পক্ষের সাথে কথা বলছি। একটি পক্ষ বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে চলছে। আমি বিষয়টি জোরালো ভাবে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করবো।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়