মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫  |   ২২ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ২৩ মার্চ ২০২৩, ০০:০০

চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কণ্ঠে গণহত্যার স্মৃতিচারণ
চাঁদপুর কণ্ঠ রিপোর্ট ॥

চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কণ্ঠে ২৫ মার্চ গণহত্যার স্মৃতিচারণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল ২২ মার্চ বুধবার সকাল ১০টায় কলেজ অডিটোরিয়ামে এটি অনুষ্ঠিত হয়।

কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ মাসুদুর রহমানের সভাপ্রধানে এবং পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ ওমর ফারুকের উপস্থাপনায় উক্ত আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ সৈয়দা বদরুননাহার চৌধুরী। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন কলেজ উপাধ্যক্ষ প্রফেসর আবুল খায়ের খান, শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক ও ইতিহাস বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মোহাম্মদ এনামুল হক, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক কমিটির আহ্বায়ক ও ভূগোল বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মোঃ মাসুদ হোসেন, ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মোঃ মোতাসিম বিল্লাহ্, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান জীবন কানাই সাহা প্রমুখ।

অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ মাসুদুর রহমান বলেন, ২৫ মার্চ ১৯৭১ কালরাত্রি ইতিহাসের একটি জঘন্যতম রাত। এই রাতে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ‘অপারেশন সার্চ লাইট’ নামে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে বিশ্বের ইতিহাসের নৃশংসতম গণহত্যায় মেতে উঠে। ‘অপারেশন সার্চ লাইট’ ছিলো বাঙালির একটি প্রজন্মকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার এক নারকীয় পরিকল্পনা। পোড়া মাটি নীতি নিয়ে নেমেছিলো পাকিস্তানি ঘাতকরা। সুনির্দিষ্ট কিছু লক্ষ্যকে সামনে রেখে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে পাকিস্তানি নর ঘাতক জেনারেল টিক্কা খান বলেছিলেন, ‘আমি পূর্ব পাকিস্তানের মাটি চাই, মানুষ চাই না’। ফলশ্রুতিতে বাঙালি জাতির জীবনে নেমে আসে বিভীষিকাময় ভয়াল কালরাত্রি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডাঃ সৈয়দা বদরুননাহার চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধু না থাকলে আমরা একটি পতাকা পেতাম না, স্বাধীনতা পেতাম না। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্যেই আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অর্জন। মার্চ মাস স্বাধীনতার মাস, আমাদের প্রেরণার মাস, অস্তিত্বের মাস। ৭ মার্চ ১৯৭১ রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহওয়ার্দী উদ্যানে) প্রদত্ত ভাষণে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। আমি তখন ঢাকা মেডিকেল কলেজের হোস্টেলে অবস্থান করতাম এবং সেখানে অনেক পশ্চিম পাকিস্তানী ছাত্রী ছিলো। কিন্তু ২৫ মার্চ রাতে ওদের কেউই সেখানে অবস্থান করে নি। তার মানে ওই গণহত্যা ছিলো পূর্বপরিকল্পিত। ২৫ মার্চ রাতে সেখান থেকে শুধু মুহুর্মুহু গোলার আঘাতের আওয়াজ শুনেছি। এপ্রিল মাসে কুমিল্লা থকে পাকিস্তানি আর্মি এসে আমার স্বামীর বাড়ি আগুনে পুড়িয়ে দেয়। তারপর আমার স্বামী যুদ্ধে চলে যায় এবং আমিও আমার কাজের ছেলেসহ নৌকায় চলে যাই এবং হাজীগঞ্জে স্থাপিত মুক্তিযুদ্ধের ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করি। নৌকায় বা মাঝে মধ্যে মানুষের বাড়িতে অবস্থান করে চিকিৎসা সেবা দেই। আমি একদিন একটি স্কুলে গিয়ে ১৫/২০ জন নারীকে সম্পূর্ণ বিবস্ত্র অবস্থায় দেখতে পাই এবং তাদের শরীরে পাশবিক অত্যাচারের চিহ্ন দেখতে পাই। তারপর আমরা ওদেরকে জামা-কাপড় পরিয়ে নৌকায় তুলে প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা দিয়ে সুস্থ করে তুলি। এ ঘটনার জন্যেই আমাকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেয়া হয়েছে। তিনি ২৫ মার্চ কালরাত্রির স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তানি বর্বরতায় নিজের অভিজ্ঞতার কথা শিক্ষার্থীদের মাঝে তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে কলেজের সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়