প্রকাশ : ১৩ মার্চ ২০২৩, ০০:০০
![শাহরাস্তিতে ভূমি দখলের কবলে অসহায় এক শিক্ষক পরিবার](/assets/news_photos/2023/03/13/image-30632.jpg)
শাহরাস্তিতে ভূমি দখলদারদের কবল থেকে বাঁচতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন এক শিক্ষক পরিবার। যথাযথ আইনি কাগজ, দলিল দস্তাবেজ ও আদালতের নির্দেশ থাকার পরও ভূমিদস্যুদের কাছে জিম্মি হয়ে আছে ওই পরিবার। ১২ মার্চ রোববার সন্ধ্যায় শাহরাস্তি প্রেসক্লাবের অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেছেন উপজেলার রায়শ্রী উত্তর ইউনিয়নের দাদিয়াপাড়া গ্রামের বেপারী বাড়ির প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মাওঃ আবদুল মবিন।
সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি তাঁর লিখিত বক্তব্যে জানান, আমি দীর্ঘদিন উপজেলার বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শেষে ২০০৯ সালে বিজয়পুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে অবসরে যাই। আমার বড় পুত্র মোঃ আলাউদ্দিন আনিস যাদবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছে। আমার দাদা আবদুল আজিজের দুই পরিবার ছিলো। ১ম পরিবারে ২ পুত্র ও ৩ কন্যা, ২য় পরিবারে স্ত্রী, ২ পুত্র ও ৩ কন্যা ছিলেন। আমার দাদা মরহুম আবদুল আজিজ ৩.৮৫ শতাংশ সম্পত্তি রেখে যান। যার মধ্যে ১ম পরিবারের সন্তান হিসেবে আমার বাবা মরহুম আফতাব উদ্দিন তার ওয়ারিশ সূত্রে ৪৮ শতক সম্পত্তি পান। তিনি তার ৩ বোন আছিয়া খাতুন, আম্বিয়া খাতুন ও রাহাতেন্নেছার প্রাপ্ত ওয়ারিশি ৭২ শতাংশ সম্পত্তিসহ ১ একর ২০ শতাংশ সম্পত্তির মালিক দখলকার হন। যা আমরা তার ওয়ারিশ হিসেবে দখলদার রয়েছি।
পরবর্তীতে আমি ও আমার বড় ভাই ক্বারী আবদুল হাই আমার বাবা মরহুম আফতাব উদ্দিনের ফুফু রুপজানের ছেলে মোবারক হোসেন ও রুপজানের দুই নাতি আলতাফ আলীর পুত্র আবদুর রহমান এবং আবদুল করিমের কাছ থেকে ১৪/১১/৮২ সালে ১৫৪৫১নং দলিলে ১ একর ৩৬ শতাংশ এবং ৩১/১০/৮৮ সালে ৫১০৬নং দলিলে আলতাফ আলীর কন্যা বদরুন্নেছার কাছ থেকে ৮ শতাংশ সম্পত্তি ক্রয় করি। এছাড়া আমার বাবার আরেক ফুফু আপজানের দুই নাতি আবদুল কাদেরের পুত্র নুরুল হক ও শামছুল হকের কাছ থেকে ২৬/১২/৮২ সালে ১৩১১৪নং দলিলে ২৫.৫ শতাংশ, আপজানের নাতি আবদুল মজিদের ছেলে আনোয়ার উল্যাহ থেকে ২৬/১২/৮২ সালে ১৩১১১নং দলিলে ৭ শতাংশ, অলিউল্যাহ থেকে ১৬/০১/৮৩ সালে ৭৭৩নং দলিলে পৌনে ৭ শতাংশ ও ছফিউল্যাহ থেকে ২২/০২/৮৩ সালে ২৬৯৩১নং দলিলে সাড়ে ৭ শতাংশ সম্পত্তি ক্রয় করি।
আমার বাবার পৈত্রিক ওয়ারিশ সূত্রে ১ একর ২০ শতাংশ ও আমাদের দুই ভাইয়ের ক্রয়কৃত সম্পত্তিসহ ৩ একর পৌনে ১১ শতাংশ সম্পত্তির মালিক দখলকার। বিএস জরিপের সময় ভূলবশত আমাদের নামে ৫৯ শতাংশ সম্পত্তি রেকর্ডভূক্ত না হওয়ায় বর্তমানে শাহরাস্তি থানাধীন দাদিয়াপাড়া মৌজার ১০৩নং বিএস খতিয়ানে ২ একর ৫১ সম্পত্তি আমাদের দুই ভাইয়ের নামে রেকর্ডভূক্ত হয়।
প্রতিপক্ষ আমার বাবার সৎ ভাই আবুল হোসেন প্রকাশ খালেদ বিন আঃ আজিজের সন্তান মনির হোসেন ও রবিউল হাসান গংয়ের সাথে আমাদের সম্পত্তিগত কোনো জটিলতা নেই। তারা তাদের নিজস্ব সম্পত্তিতে বিদ্যমান রয়েছে। তথাপি তারা আমাদের দখলিয় ও রেকর্ডভূক্ত সম্পত্তির উপর প্রতিনিয়ত জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছে। ইতোমধ্যে এ দখলের ঘটনায় আদালতে ফৌঃ কাঃ বিধির ১৪৫ ধারা মতে দুটি প্রতিকার প্রার্থণা করা হলে আদালত তাতে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দেয়। আদালত উক্ত বিষয়ে রায় প্রদান করলে প্রতিপক্ষ রায়ের বিরুদ্ধে আপীল করেন। তারা আপীলের পর গত ২৮ জানুয়ারি/২০২৩ তারিখে আমাদের দখলিয় সম্পত্তির মধ্যে ২৫ শতাংশ সম্পত্তির উপর জোরপূর্বক ঘর নির্মাণ ও বেশকিছু বনজ এবং ফলদ গাছগাছালি কেটে নিয়ে যায়। আমরা বাঁধা দিতে গেলে আমাদের মারধর সহ প্রাণনাশের চেষ্টা করে। আমরা যতোবারই এ বিষয়ে স্থানীয় আইন শৃংখলা বাহিনীর সহযোগিতা সহ জাতীয় পরিসেবা ৯৯৯ নাম্বারে ফোন করেছি তাতে কোন আইনি সহযোগিতা পাইনি। প্রতিপক্ষের লোকজন বলে বেড়াচ্ছে মোটা অংকের অর্থের মাধ্যমে আইন শৃংখলা বাহিনীর সাথে সমন্বয় করেই তারা আমাদের সম্পত্তি জোরপূর্বক দখল করছে। আমরা তাদের সংঘবদ্ধ চক্রের কাছে নিরুপায় হয়ে পড়েছি। একটি সম্পত্তি দখলের পর তারা পুনরায় আমাদের অন্যান্য সম্পত্তি দখলের পাঁয়তারা করছে। আমাদের প্রতিনিয়ত হুমকী ধমকি প্রদর্শণ করছে। তাদের হুমকী ধমকী ও সম্পত্তি দখলের কাছে বর্তমানে ভীতসন্ত্রস্ত দিনাতিপাত করছি। স্থানীয় আইন শৃংখলা বাহিনীর কাছে কোন আইনি সহযোগিতা পর্যন্ত পাচ্ছি না।
উল্লেখিত বিষয়গুলোর সুষ্ঠু সমাধান, আমাদের ভূমি সমূহ দখলমুক্ত করতে ও জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাঁদপুরের মাননীয় পুলিশ সুপার, শাহরাস্তি-হাজীগঞ্জের গণমানুষের নেতা মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম এবং গণতন্ত্রের মানষকণ্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।